০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার, ১০:৪৪:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্টিত , সহজ গ্রুপে ব্রাজিল - যুক্তরাষ্ট্র ডি গ্রুপে স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া


বিএনপির সঙ্গে চীনের সখ্য কি বাড়ছে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৪-২০২৪
বিএনপির সঙ্গে চীনের সখ্য কি বাড়ছে


বাংলাদেশে রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব ব্যাপক এটাতে আর কোনো রাখঢাক নেই। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমাজোট যা চেয়েছিল সেটা কারোরই অজানা নয়। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য ওই চাওয়া বেশি কিছু না। বাংলাদেশের জনগণেরও ওই চাওয়া।

কিন্তু সেটা কি শেষ পর্যন্ত হয়েছে? প্রায় বছরখানেক তোড়জোড় হওয়া পশ্চিমাদের ওই উদ্যোগ আগুনে পানি ঢালার মতো নিভে যায়। এরপর সবাইকে দেখিয়ে হয়ে গেল দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন, যা মূলত ছিল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের লড়াই। আওয়ামী লীগ মনোনীতদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নির্ধারণ করে দেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোটযুদ্ধ। সে নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। এ ভোট নিয়ে তাৎক্ষণিক ভারত সমর্থন জানিয়ে অভিনন্দন জানালেও পশ্চিমাজোট এটাকে সঠিক নির্বাচন নয় বলে মন্তব্য করেছে। তবে এ ব্যাপারে তাদের বড় কোনো উদ্যোগ আর চোখে পড়েনি। 

এখানে সবাই মোটামুটি নিশ্চিত যে ভারতের ইন্ধনে বা ভারতের স্বার্থেই এমন একটা ভোট বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও সেটা প্রকাশ্যে বলেছেন যে, (দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে) ‘অনেক শক্তিধর দেশ যা চেয়েছিল সেটা হতে পারেনি বাংলাদেশে, কারণ বাংলাদেশের অকৃতিম বন্ধু পাশে ছিল বলেই।’ সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে রাজনৈতিক ও বিশ্লেষকরা প্রকাশ্যে বলেছেন যে ‘ভারতের কঠোর অবস্থার কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দেন।’ অর্থাৎ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে মার্কিনীদের তোড়জোড় থামিয়ে দেয় ভারত। যার কারণে ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গা ঢাকা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। এখানে মার্কিনিদের থোড়াই পাত্তা দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও অসীম ক্ষমতাধর বোঝানোর চেষ্টা করেছেন তারা ভারতকে। 

প্রশ্ন কোন জাদুর ক্ষমতা প্রদর্শনে ভারত 

কথিত আছে দিল্লিতে টু টু বৈঠকের পর থেকেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ২০২৩ সনের ১০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ভারতের পক্ষে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। 

বৈঠক সম্পর্কে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগের জুন ২০২৩ ও সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রেসিডেন্ট বাইডেন ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্বের যে ‘ভবিষ্যৎমুখী রোডম্যাপের’ রূপরেখা দিয়েছেন এই বৈঠকে দুই দেশের মন্ত্রীরা সেটাকেই আরো এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সে সময় বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে এই মুহূর্তে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে, সেই পটভূমিতে ভারত-মার্কিন আলোচনায় বাংলাদেশ পরিস্থিতিও ছায়াপাত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

এক সূত্রের বরাত দিয়ে নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের কারণে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাসহ একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে দেখতে চায় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই। তাই বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন অত্যন্ত আগ্রহ ও উদ্বেগের বিষয়।’ এটাই ছিল মুখ্য। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়াদি ভারত দায়িত্ব নিয়ে একটি সমাধান করবে বলে মার্কিনিদের বুঝাতে সক্ষম হওয়ার পরই ক্ষ্যান্ত দেয় মার্কিনিরা। ফ্রন্টে চলে আসে ভারত। এরপর দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। 

এখানে প্রশ্ন, ভারত বরাবরই আওয়ামী লীগকে পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রাখলেও দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপিকেও তারা যথেষ্ট নোটেই রাখতো। বিএনপির সঙ্গেও সখ্যতার কমতি ছিল না। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে অন্য দেশের সাধারণ মানুষের পছন্দ, সাপোর্টের বিষয়াদি বিবেচনা করলে এমনটাই হবে এটাই নীতি হয় সাধারণত। কিন্তু গত বেশ কিছুদিন ধরেই বিএনপির ওপর একটু বেশি নাখোশ ভারতীয় কর্তৃপক্ষ-এমনটাই বিএনপির নেতৃবৃন্দও মনে করছেন। বিশেষ করে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভারতের যে সাপোর্ট সেটাতে ভীষণ ক্ষুব্ধ বিএনপি। মুখে তেমনটা উচ্চারণ না করলেও ভেতরে অগ্নিমূর্তি ধারণ। যার ছিটাফোঁটা প্রকাশও পায় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে। সম্প্রতি ভারতীয় পণ্য বর্জনে বিভিন্ন সামজিক মাধ্যমে যে আন্দোলন তার সঙ্গে দলটির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নিজের ভারতীয় শাল পুড়িয়ে সমর্থন দান সেই দানাবাধা ক্ষোভের প্রকাশ মেলে। কেননা বিএনপি টানা চার টার্ম ক্ষমতার বাইরে। বিশাল জনসমর্থন নিয়েও কুলিয়ে উঠতে না পারার কারণ ভারতীয়দের আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর প্রভাব তেমনটাই তারা মনে করেন। 

বিএনপিতে কিছুটা অসন্তুষ্টি ভারত কিন্তু কেন?

বাংলাদেশে যে সরকারই আসুক না কেন, দেশটির তিনদিকে ঘেরা বিশাল সীমান্তবর্তী দেশ ভারতীয় সরকারের একটা প্রভাব ছিল, থাকবে এটাই স্বাভাবিক। বিএনপি যতবার ক্ষমতায় ছিল ভারতীয় প্রভাব তখনো ছিল। তাছাড়া সব দলের নীতি এক হয় না, একটু এদিক সেদিক হবেই। কিন্তু একেবারে ভারতবিরোধী মনোভাব কখনো ক্ষমতায় থেকে বিএনপি দেখায়নি। এরপরও বিএনপিতে কিছুটা অসন্তুষ্টি কেন ভারতের এ প্রশ্নটা জনমনে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, একটি দেশের কাছে অন্য দেশের প্রত্যাশা থাকে অনেক কিছুতেই। কিন্তু তিন দিকে ঘেরা ভারতের স্বাভাবিকভাবে প্রত্যাশার মাত্রা একটু বেশিই। যা দ্বারা প্রত্যাশার প্রাপ্তিযোগ ঘটবে তাকেই তারা অগ্রাধিকার দেবে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে তারা একটু বেশিই অগ্রাধিকার দেয়। শেখ হাসিনা নিজেও বলেছেন, ‘ভারতকে যা দিয়েছি, তা তারা আজীবন মনে রাখবে।’ পক্ষান্তরে ভারতের কাছে প্রত্যাশিত অনেক কিছুর ছিটেফোঁটাও পায় না বাংলাদেশ। বহু প্রতিশ্রুতির পরও তিস্তার পানি বণ্টন আটকে রয়েছে। আর এ ন্যায্য হিস্যা পানির অভাবে বাংলাদেশে হাহাকার। আরো আছে। এসবে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ। বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগেরও সে ক্ষোভের কমতি নেই। তবুও এ মুহূর্তে তারা সেটা প্রকাশ করে না। 

বিষয়টা ভালোভাবেই উপলব্ধি করেছে বিএনপি। টানা চারবার ক্ষমতার বাইরে থেকে বিএনপির উপলব্ধি ভারত আওয়ামী লীগের বাইরে সম্ভবত আর যেতে পারছে না। ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এ টানা ১৬-১৭ বছরের নির্যাতন থেকে বিএনপিকে বাঁচতে এবং ক্ষমতায় যেতে অন্য পথ অবলম্বন প্রয়োজন। এ সূত্র ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোটের সমর্থন জানিয়ে গেছে দলটি। নিজেদের নীতির অনেক কিছু বিসর্জন দিয়েও তারা এ সমর্থন জুগিয়েছে নিজেদের স্বার্থে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সেই মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটও ভারতের সঙ্গে সখ্য গড়েছে। বাধ্য হয়ে বিএনপি কৌশল পাল্টাতে শুরু করেছে। খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে পুরোনো বন্ধুকে। 

চীনের সঙ্গে বিএনপির সখ্য 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা। এসব নেতা কোর্টের বারান্দা ত্যাগ করতে পারছেন না। দলটির চেয়ারপারসন অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে। যদিও বিশেষ ব্যবস্থায় দণ্ড নিয়ে তিনি বাসায়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। দেশে আসার সুযোগ নেই। তার বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরওয়ানা। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল গত ২৯ অক্টোবর আটক হয়ে কারামুক্ত হয়েছেন জাতীয় নির্বাচনের অনেক পর। তার সঙ্গে সিনিয়র অনেক নেতাও ছিলেন। তাহলে বিএনপির সামনে কী পথ খোলা? তাদেরও তো বাঁচতে হবে। এ সূত্র ধরে তারা পুরোনো বন্ধুকে খুঁজে আস্থাভাজন হওয়ার চেষ্টা করছে। আর সে বন্ধু আর কেউ নয়, ভারত, আমেরিকার টার্গেট করা শত্রু চীন। 

বলার অপেক্ষা রাখে না বিশ্বে অসীম ক্ষমতাধর এখন চীন। তাছাড়া উপমহাদেশে তাদের প্রধান্য অনেক। ইন্দো-প্যাসিফিকে যে স্ট্রাটেজি যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন কোয়াডের সেটা চীনের বিরুদ্ধেই। ফলে চীনও চেয়ে আসছে বাংলাদেশ যাতে ওই কোয়াডে যোগ না দেয়। এজন্য বাংলাদেশ এ পর্যন্ত যে সব সহায়তা যেভাবেই হোক সেগুলো দিয়ে আসছে দেশটি। ফলে সেসব সুবিধাদি গ্রহণ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও দেশে অনেক উন্নতি সাধন করেছেন, পদ্মাসেতু থেকে শুরু করে অনেক কিছু করে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক ভালো হলেও ভারতপ্রীতিটা মোটেও কম নয়। এক কথায় দুই নৌকায় কৌশলগত পা। 

অথচ আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক তেমন সুবিধা ছিল না। সম্পর্ক ছিল বিএনপির। ফলে বিএনপি হারানো সে স্থানে ফিরতে চাচ্ছে। আর চীনও আওয়ামী লীগের ভারতপ্রীতি প্রত্যক্ষ করার পর বিকল্প কিছু ভাবতে শুরু করেছে হয়তো। সে চিন্তা ধারা থেকেই বিএনপির সঙ্গে সখ্য বাড়ানোর মনোযোগ। কারণ বাংলাদেশে তাদের বিশাল ইনভেস্ট। সেগুলো লাভসহ আসল উদ্ধার করতে হবে। তাছাড়া কোনো কারণে আওয়ামী লীগের নীতির সঙ্গে বনিবনা না ঘটলে বিকল্প পথটা যে সুন্দর ও মসৃণ থাকে সে জন্য এক্ষুণি কৌশলী সে পথ তৈরি করে রাখা।

ভূরাজনীতির এ লীলাখেলায় এখন বাংলাদেশের রাজনীতির ওপর ব্যাপক প্রভাব। যার খেসারত গুনতে হচ্ছে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে। বরাবরই সাধারণ মানুষ গণতন্ত্রমুখী। কিন্তু গত তিনটার্ম কীভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেটা আর লিখে বোঝানোর প্রয়োজন নেই। কিন্তু এমনটা তারা চান না। এ বিষয়টা চীনও ভালোই উপলব্ধি করেছে। এতে করে আগামীতে সম্ভাব্য কোনো পরিবর্তন এলে তার সঙ্গে তাদের পথ ক্লিয়ার করে রাখছেন তারা এক্ষুনি। এটা তাদের ভীষণ প্রয়োজনও। 

বিএনপিও সে সমর্থনটা আদায় করে নিতে চায় এবং পুরোনো বন্ধুত্বটা নতুন বন্ধনে আবদ্ধ করতে চায় বলে শোনা যাচ্ছে। এতে করেই বিএনপির ওপর একটু বেশিই ক্ষিপ্ত দিল্লির প্রশাসন। বিএনপির গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে যা ঘটেছে তা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী দেশ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেও ভারত টু শব্দও করেনি। এর আগেও বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন, কথিত গুম-খুন নিয়ে মার্কিনিরা সোচ্চার হলেও ভারত প্রতিক্রিয়া দেয়নি। 

খালেদা জিয়াকে চীনা উপহার 

গত বছরের ২৩ জুন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কুরিয়ারের মাধ্যমে উপহার সামগ্রী পাঠিয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা দূতাবাস। ওইদিন বিকালে দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি কুরিয়ারে মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে কয়েকটি প্যাকেটে ফল ও উপহার পৌঁছে দেওয়া হয়। তবে কী উপলক্ষে তা দেওয়া হয়েছে তা জানা যায়নি। সে সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার জানান, চীনা দূতাবাস প্যাকেট পাঠিয়েছে। শুক্রবারে আমরা কেউ কার্যালয়ে ছিলাম না। জেনেছি, স্ন্যাকস, বিস্কুট জাতীয় কিছু হবে। প্যাকেটের ওপরে ম্যাডামের নাম লেখা। 

এর আগেও ২০২০ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপহার সামগ্রী পাঠিয়েছিল ঢাকায় নিযুক্ত চীনা দূতাবাস। ওই সময়ে উপহার সামগ্রী দেওয়ার পাশাপাশি দূতাবাস কর্মকর্তারা খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনা করেন। উপহার সামগ্রী গ্রহণ করার পর তা খালেদা জিয়ার গুলশান বাসভবন ফিরোজায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। চীনের মনভাব এখানেও প্রকাশ পায় যে তাদের পুরানো বন্ধুত্বটা তারা ঝালাই করতে চায়। কেননা উপমহাদেশে প্রভাব বিস্তারকারী দেশটি মায়নামারে কী করছে সেটা সবার জানা। পাশাপাশি বাংলাদেশেও তাদের রাজনৈতিক প্রভাব বিগত দিনে তেমন প্রয়োজন না থাকলেও এখন তারা প্রকাশ্যে সম্পর্কটা দেখাতে চায় বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। 

সবশেষ

পরিশেষে সামগ্রিক চলমান রাজনৈতিক ধারার বিশ্লেষণে বিএনপির ওপর ভারতের আস্থা তলানীতে এবং বিএনপিও বুঝে গেছে ভারত তাদের সেভাবে আর সমর্থন দেবে না। আর সেদিক বিবেচনা করেই বিএনপি চায়নামুখী হলে হতেও পারে, তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে।

শেয়ার করুন