নিউইয়র্ক পুলিশের একজন লেফটেন্যান্ট যার বার্ষিক বেতন ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৩৯ ডলার। কিন্তু তিনি একই বছরে ১ হাজার ৬০০ ঘণ্টা ওভারটাইম করেই আয় করেছেন অতিরিক্ত ২ লক্ষ ৪ হাজার ৪৫৩ ডলার। সবমিলিয়ে ২০২৪ সালে তার আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৬ হাজার ৫১৫ ডলার। ব্যাপারটা বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এ নিয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে। স্পেশাল অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার লেফটেন্যান্ট এপস ২০২৪ সালে এনওয়াইপিডিতে সর্বোচ্চ আয় করা ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে তার বস বেতন পেয়েছেন মাত্র ২ লক্ষ ৯২ হাজার ডলার।
ভোজনবিলাসীদের জন্য সুখবর : সাশ্রয়ী মূল্যে লাঞ্চ এবং ডিনার
নিউইয়র্ক সিটি ট্যুরিজমের উদ্যোগে আগামী ২১ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিউইয়র্ক সিটিতে চলবে রেস্টুরেন্ট সপ্তাহ। পাঁচ বরোর শতাধিক রেস্টুরেন্টে সাশ্রীয় মূল্যে এই খাবার পাওয়া যাবে। জানুয়ারির ৭ তারিখ থেকে অগ্রিম বুকিং চলবে। ২ কোর্সের লাঞ্চ অথবা তিন কোর্সের জিনার পাওয়া যাবে ৩০/৪৫/৬০ ডলারে। আগ্রহীরা বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন-এনওয়াইসিট্যুরিজম.কম এই ওয়েবসাইটে।
নেহারি নাইট!
আগামী সপ্তাহে নিউইয়র্কে জমকালো আয়োজনে পালিত হবে থার্টি ফার্স্ট নাইট। থার্টি ফার্স্ট নাইট অর্থ হলো ৩১ ডিসেম্বরের রাত, যা সাধারণত পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর একটি বিশেষ সময়। এটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের শেষ রাত এবং নতুন বছরের প্রাক্কাল। এই রাতে মানুষ বিভিন্ন ধরনের আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমে সময় কাটায়, যেমন- আতশবাজি প্রদর্শন পার্টি, সংগীতানুষ্ঠান ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো ইত্যাদি।
কিন্তু থার্টি ফার্স্ট নাইটের কথা আমরা সবাই জানলেও ‘নেহারি নাইট’-এর কথা আমাদের অনেকের জানা নেই। নেহারি বা নেহারি একটি জনপ্রিয় মাংসমিশ্রিত ঝোলযুক্ত খাদ্যবিশেষ। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘল সাম্রাজ্যে এটির উৎপত্তি হয়। আরবি ভাষার নাহার শব্দটির অর্থ দিনের বেলা, এই খাবারটি সাধারণত সকাল বেলার নাশতাতে খাওয়া হয় বলে এহেন নামকরণ করা হয়েছে।
কিন্তু এই বিশেষ খাবারটি এখন নিউইয়র্কের একটি রেস্তোরাঁয় রাতের বেলায় পরিবেশন করা হয়। বিভিন্নরকম নেহারি থাকে ক্রেতাদের জন্য। বাফেট খাবারের এই রেস্তোরাঁয় প্রতি বৃহস্পতিবার রাতকে নেহারি নাইট হিসাবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এই নেহারি নাইটে বিভিন্ন রকম আইটেমের মধ্যে থাকে বিফ নেহারি, স্যাংক নেহারি, চিকেন নেহারি, বিফ হালিম, চিকেন কিমা কারাই, প্লেন পোলাও, ফিস পাকোড়া, ক্ষীর, পানি, ম্যাংগো লাচ্ছিসহ অনেক কিছু।
নেহারি নাইটের সময় সপ্তাহে মাত্র একদিন। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা থেকে রাত ১১টা। দামও সাশ্রয়ী। মাথাপিছু মাত্র ১১.৯৯ ডলার। তবে সাবধান বুফেতে যত খুশি খান আপত্তি নেই। তবে অপচয় করলে তারা নস্ট খাবারের জন্য চার্জ করবে। ঠিকানা-সানসাইন জ্যাকসন হাইটস, ৭৩-১০ নর্দান বুলেভার্ড, কুইসনস, নিউইয়র্ক-১১৩৭২
ফোন: ৭১৮ ৭৭৯ ৬৭০০
প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে!
একটা প্রবাদ আছে-প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে/কখন কে ধরা পরে কে জানে। অর্থাৎ সতর্ক থাকা উচিত যেন যেখানে সেখানে এই ফাঁদে আটকে না পড়ে বিপদে না পরতে হয়। প্রেমের ফাঁদের মতো এই শহরে আছে উকিলের ফাঁদ। আইন থেকে বাঁচতে অথবা আইনের জালে কাউকে বাঁধতে আমাদের দৌড়াতে হয় অ্যাটর্নির কাছে। তখন অনেক সময় অ্যাটর্নির ফাঁদেও আটকে পড়তে হয়। কয়েকদিন আগে আমার এক বন্ধুর অনুরোধে একজন বাঙালি অ্যাটর্নির কাছে গিয়েছিলাম। বন্ধুটির পার্টনারশিপের ব্যবসা। তার পার্টনার তার সঙ্গে একটু ঝামেলা করছে বিধায় তাকে ভয় দেখাতে উকিল নোটিশ দিতে চেয়েছিলেন। প্রথমেই তার সহকারীকে ১০০ ডলার কনসালট্যান্সি ফি দিয়ে চেম্বারে ঢোকার অনুমতি মিললো। তার পর তার সমস্যা নিয়ে আলোচনা। সব শোনার পর উকিল সাহেব তার সমস্যাটা এমনভাবে উপস্থাপনা করলেন যে আমার বন্ধুটি ভয় পেয়ে গেল। উকিল সাহেবের ভাষায় এটি মস্ত সমস্যা। শুরুতেই শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে তা ডালপালা গজিয়ে অনেক বড় সমস্যার সৃষ্টি করবে। বন্ধুটি উকিল সাহেবের কথামতো কাজ করতে রাজি হলেন।
এবার আসলো মামলা খরচ বাবদ তার ফি। তিনি খুব সহজেই বল্লেন, কাল সকালে ওয়ার করে আমার অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার ডলার পাঠিয়ে দেবেন। আমি কাজ শুরু করে দেবো। আমার ফি ঘণ্টায় পাঁচ শ। আর আমার প্যারালিগালের ফি ঘণ্টায় ২৫০ডলার। কাজ করার পর যদি অর্থ বেঁচে যায় তা ফেরত পাবেন। আর যদি কাজ শেষ না হয়, ব্যালেন্স এক হাজার ডলারে নেমে যায় তাহলে আরো ১০ হাজার ডলার পাঠিয়ে দেবেন। দেখলাম ল’ইয়ারের কথা শুনে বন্ধুটির মুখ শুকিয়ে গেছে।
আলাপ আলোচনা শেষে চেম্বার থেকে বেরিয়ে এলাম। জিজ্ঞেস করলাম, কিরে উকিল সাহেবের কথায় ভয় পেয়েছিস যে তোর চোখমুখ শুকনা হয়ে গেল। বন্ধুটি তখন এক কথায় জবাব দিলো আমার টাকা প্রয়োজনে বন্ধুই খাক তবুও উকিলের পেটে দেবো না। তাই বলছিলাম সমাজে থাকতে গেলে নানান সমস্যায় পড়তে হবে এটাই স্বাভাবিক। এজন্য আইনের কাছে যেতে হয়। এদেশের পুলিশে পয়সা না লাগলেও উকিলের ফি হাত থেকে বাঁচার উপায় নেই। তাই দৈনন্দিন জীবনের যে কোনো জটিলতায় উকিলের কাছে না গিয়ে নিজেরা একটু ছাড় দিয়ে হলেও মিউচুয়ালি সমাধান বের করাই উত্তম কাজ।
সব জান্তা শমশের!
ইংরেজিতে একটা কথা আছে-জ্যাক অব অল ট্রেডস মাস্টার অব নান। যার বাংলা অর্থ করলে বলা যায়-কোনো ব্যক্তির একাধিক বিষয়ে উপযুক্ত দক্ষতা রয়েছে, কিন্তু তিনি কোনটাতেই বিশেষজ্ঞ নন। এই প্রবাদটি বাংলাতেও আছে-সব জান্তা শমসের নামে। এরকম একটি কবিতাও আছে:
‘সব জান্তা শমসের ছিল এক/পৃথিবীর সবকিছু ছিল তার জানা/পৃথিবীর নদী কত আর কতটি লেক,/কতগুলো মানুষ, আছে পাখির ছানা।
পৃথিবীর ভেতরে আছে যত খেলোয়াড়/সবার নাম হার হ্যাপজো আছে/ শতকোটি মিটি মিটি আকাশ তারার,/মানুষ নগ্ন থাকে কোন মহাদেশে।’ সব জান্তা’ মানে হলো, সব বিষয় জানে এমন, সর্বজ্ঞ। তবে এটা ব্যঙ্গার্থে ব্যবহার হয়। আমরা বাঙালিরা ‘সব জান্তা’র সঙ্গে ‘শমসের’ নামটিও যুক্ত করে দিই। সম্ভবত শমসের নামে কোনো এক ব্যক্তি সব জান্তার ভাব ধরেছিলেন বলেই এমন শব্দবন্ধের উৎপত্তি।
এই সবজান্তা শমসের এর সন্ধান নিউইয়র্কের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় একটু খুঁজলেই পাওয়া যাবে। সাইনবোর্ডে দেখা যায় একই ব্যক্তি সার্ভিস দিচ্ছেন ইমিগ্রেশন, ট্যাক্স, দ্বৈত নাগরিকত্বের জন্য আবেদন, ওমরা প্যাকেজ, ওমরাহ ভিসা, ভারতীয় ভিসার আবেদন, বাড়ি ক্রয় বিক্রয়, বাংলাদেশে প্লট ফ্লাট বাড়ি ক্রয় বিক্রয়, মানি ট্রান্সফার, সোশ্যাল সিকিউরিটি, ডিজঅ্যাবিলিটি, রাজনৈতিক আশ্রয়, মেডিকেইড মেডিকেয়ার আবেদন, গ্রিনকার্ড নবায়ন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভিসা প্রসেস, ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন, নো ভিসা ফরম পূরণ, তালাক নোটিশ তৈরি করা, বেসিক কম্পিউটার অপারেটর ট্রেনিং, এয়ার টিকেট, সিটির বিভিন্ন পদের জন্য আবেদনের সহায়তা, ফুড স্টাম্প, ক্যাশ অ্যাসিস্ট্যান্সের আবেদন, বাংলাদেশে বাড়ি ফ্ল্যাটের পৌর কর জমাÑ ইত্যাদি সব এসব এই সবজান্তা শমসেররা করে থাকেন। তবে এসব জ্যাক অব অল ট্রেডস মাস্টার অব নান কিনা সে প্রশ্ন থেকেই যায়।