দীর্ঘদিনের বিয়ানীবাজারবাসির মনের বাসনা সমিতির নামে ভবন রেজিস্ট্রেশন হওয়া। অবশেষে সেই আকাঙ্খা বাস্তবে রূপান্তরিত হওয়ার পথে। ২০০৪ সালে সমিতির ঘর ক্রয়ের সময় তৎকালীন সমিতির সভাপতি বুরহান উদ্দীন কপিল, সেক্রেটারী আহমদ এ হাকিম, কোষাধ্যক্ষ সফিক আহমদ থাকাকালীন সমিতির ঘর ক্রয় করা হয়। ২০২১ সালে মকবুল রহিম চুনই সভাপতি ও মুহিবুর রহমান রুহুল সেক্রেটারি থাকাকালীন সময়ে ঘর ঋণ মুক্ত হয়। সেই থেকে ক্রয়কৃত সমিতির ঘর সমিতির নামে রেজিস্ট্রেশন করানোর জন্য সাধারণ সভাসহ বিভিন্ন আলোচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উঠে আসে। ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ বিয়ানীবাজার সমিতি আয়োজিত ওজনপার্কের আব্দুল্লাহ পার্টি হলে সাধারণ সভায় সম্পাদকীয় রিপোর্টে বিভিন্ন কার্যক্রমের বর্ণনায় সমিতির ঘর নিয়ে সাবেক কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের কথা উল্লেখ করা হয় এবং বিয়ানীবাজার সমিতির নামে ঘর রেজিস্ট্রেশনের উপর আলোচনা প্রাধান্য পায়। সাধারণ সভায় যে কোন কারণে হউক তৎকালীন সভাপতি বুরহান উদ্দীন কপিল ছাড়া বাকি দু’জন সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন না। সাধারণ সভায় বুরহান উদ্দীন কপিল উপস্থিত থেকে সমিতির ঘর সমিতির নামে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে অনেকের আলোচনার প্রেক্ষিতে তিনিও বক্তব্য রাখেন। অনেক আলোচনা শেষে বুরহান উদ্দীন কপিল ঘর ক্রয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট বাকি দু’জনসহ কমিটির বর্তমান উপদেষ্টার নিয়ে বৈঠক করে সংগঠনের ঘর সমিতির নামে রেজিস্ট্রেশন করার প্রক্রিয়ায় ঐক্য তে পৌঁছান। বুরহান উদ্দীন কপিলের এ কথা বলার সাথে সাথে হলের ভর্তি সকলে হাততালি দিয়ে কপিলকে ধন্যবাদ জানান।
বিয়ানীবাজার সমিতি আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল বিজয় দিবস। ২য় পর্বে ছিল সাধারণ সভা। উভয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মান্নান। উভয় পর্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আলম অপু। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ও সাধারণ সভায় মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন উপদেষ্টা মোজাহিদুল ইসলাম, হারুন মিয়া, ফখর উদ্দীন, বেলাল উদ্দীন ফখরুল, গহর চৌধুরী কিনু, সাবেক সভাপতি মকবুল রহিম চুনই, মোস্তফা কামাল। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে সকল শহীদ ও বিয়ানীবাজার সমিতির প্রয়াত সকলের রুহের মাগফেরাত কামনা করে পবিত্র কুরআন তেলওয়াত ও দোয়া পরিচালনা করেন ওজনপার্ক মসজিদের ইমাম আমিনুল। পরে ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা, বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যেই বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান সমাপ্ত করা হয়।
দ্বিতীয় পর্বে সাধারণ সভায় সম্পাদকীয় রিপোর্ট ও কোষাধ্যক্ষের রিপোর্ট পেশ করেন যথাক্রমে সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আলম অপু এবং কোষাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান দুখু। সম্পাদকীয় রিপোর্টে সংগঠনের নামে সমিতির নিজস্ব ভবন, বার্ষিক বনভোজন, বেক টু স্কুল প্রোগ্রাম, ভিলেজ কাপ ফুটবল, সমিতি ভবন সংস্কার, ইসরাইলের সাথে যুদ্ধে নির্যাতিত ফিলিস্তিনীদের মানবিক সাহায্য, সমিতির বর্তমান ৬১৭ টি কবরের উল্লেখ, বন্যায় বিয়ানীবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মানবিক সাহায্যে, আজীবন সদস্য সংগ্রহ, বিয়ানীবাজার সমিতির ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট উপস্থাপন করেন।
কোষাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান দুখু কোষাধ্যেক্ষর রিপোর্টে পুংখানুপুংখ হিসাব উত্থাপন করেন। রিপোর্টে বর্তমানে সমিতির ফান্ডে ২৫৪,৪২৩ ডলার রয়েছে উল্লেখ করেন।
সম্পাদকীয় রিপোর্ট, কোষাধ্যক্ষের রিপোর্টের আলোচনার বাইরে বিয়ানীবাজার সমিতির সমিতির নিজস্ব ফিউনারেল করার জন্য কোষাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান দুখু প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সমিতি যখনই মনে করবে কারো সাহায্য ছাড়া ফিউনারেল করতে পারবে তখনই ফিউনারেল করা হবে। এক পর্যায়ে সাবেক সভাপতি বুরহান উদ্দীন কপিল মসজিদ আল আমানের ফিউনারেল বিয়ানীবাজারের নামে ব্যবহার করার সুযোগ করে দেয়া যাবে বলে বলেন। আলোচনায় অংশ নেন সাবেক সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, মকবুল রহিম, মোস্তফা কামাল, বুরহান উদ্দীন কপিল, সাবেক উপদেষ্টা আজীজুর রহমান পাখি, বর্তমান উপদেষ্টা মোজাহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ তালহা, সারওয়ার হোসেন, বজলুর রহমান, শায়কুল ইসলাম, ওসমানী স্মৃতি পরিষদ একাংশের সভাপতি আব্দুল কাদের, খালেদ আহমদ।
সভার সভাপতি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার কাজ সম্পন্ন করেন।