যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেসব লোক অবৈধভাবে এ দেশে আছেন, তাদের জন্য ফেডারেল সুবিধাবলি বাতিল করার লক্ষ্যে একটি নির্দেশে স্বাক্ষর করেছেন। অভিবাসনের বিষয়ে তার অভিযানের এ ছিল সাম্প্রতিক পদক্ষেপ।
হোয়াইট হাউস বলছে এই আদেশের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ‘অবৈধ বিদেশিদের জন্য করদাতাদের অর্থায়নে প্রদত্ত সব সুবিধা’ বন্ধ করা। দেশে অবৈধভাবে বসবাসকারী লোকজন সাধারণত জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা ছাড়া আর কোনো সুবিধা পেতে পারেন না। তাছাড়া ১৯৮২ সালে আদালতের এক রায় অনুযায়ী, অভিবাসনের অবস্থা যাই-ই হোক না কেন শিশুরা বিনামূল্যে কে-১২ গণশিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে।
প্রেসিডেন্টের আদেশে বলা হয়েছে যে, ১৯৯৬ সালে সুবিধা প্রদানের বিষয়টি ঢেলে সাজানোর কারণে, যারা এ দেশে অবৈধভাবে আছেন, তাদের সে সুবিধা পাওয়ার কথা নয়। তবে ওই আইন ক্রমশই খর্ব করা হয়েছে। ‘বিশেষত বিগত চার বছরে প্রাক্তন প্রশাসন বারবার ওই আইনের লক্ষ্যকে পাশ কাটিয়ে গেছে। যার ফলে করদাতাদের দেওয়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ থেকে অন্যায়ভাবে খরচ করা হয়েছে।’
মনে করা হচ্ছে, ট্রাম্পের এ কথাগুলো প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে লক্ষ্য করে বলা হয়েছে, যিনি এ দেশে সাময়িকভাবে বসবাস করার অনুমতি দিতে তার প্যারোল প্রদানের ক্ষমতা ব্যবহার করেছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে, সিবিপি ওয়ান নামের অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে ৯ লাখের বেশি লোককে মেক্সিকোর সীমান্ত পার করার অনুমতি প্রদান এবং কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলার ৫ লাখের বেশি লোককে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি প্রদান। এই লোকেরা আর্থিক সহায়তা নিয়ে নিজেদের খরচেই বিমানে যুক্তরাষ্ট্রে আসে। ট্রাম্প তাৎক্ষণিকভাবে এই দুটি কর্মসূচি বন্ধ করে দেন।
বাইডেন ইউক্রেন এবং আফগানিস্তান থেকেও প্রায় ৩ লাখ লোকের প্যারোল অনুমোদন করেন।
যাদের অন্তত এক বছরের জন্য প্যারোল দেওয়া হয়েছে, তাদের আয়ের ওপর ভিত্তি করে সুবিধা প্রদান করা হবে। তবে সেটা দেওয়া হবে পাঁচ বছর পর। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার্স ফর মেডিকেয়ার ও মেডিকএইড জানিয়েছে, এ সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে- মেডিকএইড এবং শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা কর্মসূচি, যারা সেসব পরিবারের শিশুদের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করে, যারা তাদের বেশি আয়ের জন্য মেডিকএইড পেতে পারেন না।
কোন কোন রাজ্য পাঁচ বছর অপেক্ষার সময় কমিয়ে এনেছে। মনে করা হচ্ছে, ট্রাম্পের এই আদেশের আরো কিছু লক্ষ্য রয়েছে, এর মধ্যে কিছু বিষয় পূর্বতন আদেশে এবং বিচার বিভাগের মামলায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে সব বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে সেসব ফেডারেল সুবিধা চিহ্নিত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে, যেগুলো ১৯৯৬ সালের ওয়েলফেয়ার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এতে এটাও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে যেন রাজ্য ও স্থানীয় সরকারগুলো এমন কোনো নীতির জন্য ফেডারেল তহবিল ব্যবহার না করে, যা আশ্রয় প্রদানের নীতিগুলোকে সমর্থন করে কিংবা অবৈধ অভিবাসনকে উৎসাহিত করে।
ট্রাম্প তার দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই অভিবাসন বিষয়ে ১০টি নির্বাহী আদেশে সই করেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া লোকদের স্বাভাবিকভাবে নাগরিকত্ব লাভ বাতিল করা এবং দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন। তবে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বিষয়ক আদেশ আদালত সাময়িক ভাবে স্থগিত করেছে।