টেনেসির নক্স কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি, চার্ম অ্যালেন, এক এসিস্টেন্ট কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি বার্কলি মেসনকে বরখাস্ত করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুসলিম-বিরোধী, চরমপন্থী, বর্ণবাদী, নারী বিদ্বেষী এবং অভিবাসী-বিরোধী পোস্ট করার অভিযোগে। বার্কলি মেসন, যিনি ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ডিএ অফিসে যোগ দিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে নাজিবাদ সমর্থন এবং অভিবাসীদের হত্যার পক্ষে মতপ্রকাশের অভিযোগ রয়েছে। মেসন দীর্ঘদিন ধরে টুইটার (বর্তমানে এক্স) অ্যাকাউন্টে সাউথার্ন অ্যাপ্পালাচলিক নামে বর্ণবাদী এবং বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট করছিলেন।
এই পোস্টগুলির মধ্যে একটি ছিল, প্রতিদিন কম বর্ণবাদী হতে চাই, কিন্তু তারা সেটা অসম্ভব করে তোলে, এবং আরেকটি ছিল, আমাদের আরও অভিবাসী হত্যাকারী দরকার, অভিবাসী নয়। আরও একটি পোস্টে, তিনি নাজিবাদের সমর্থন করে লিখেছিলেন, এই ব্যাপারটা যদি নাজিবাদের মতো হয়, তাহলে চমৎকার। এইচ এইচ ১৪৮৮। এছাড়া মেসন একাধিকবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করেছেন এবং তার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিদিন মুসলিম-বিরোধী কনটেন্ট শেয়ার করেছেন। নক্স কাউন্টি ডিএ অফিস এই অ্যাকাউন্টের বিষয়ে অবহিত ছিল না। ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি, চার্ম অ্যালেন এক বিবৃতিতে জানান, মেসনের এসব মন্তব্য তার ওপর সন্দেহ সৃষ্টি করেছে এবং এটি ন্যায়ের প্রতি তার অঙ্গীকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য একজন সরকারি কৌঁসুলির শপথ লঙ্ঘন করে এবং ন্যায়ের পথে বাধা সৃষ্টি করে।
মেসন ইউনিভার্সিটি অব টেনেসি থেকে স্নাতক এবং আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং তিনি স্পেনের ইউনিভার্সিডাড দে গ্রানাডা থেকে পড়াশোনা করেছেন। তবে তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা বিদ্বেষমূলক মন্তব্য ও চরমপন্থী বিশ্বাস তার পেশাগত নৈতিকতা ও দায়িত্ব পালনে সংকট সৃষ্টি করেছে। মেসন ১১১টি মামলায় যুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে ২৮% মামলার অভিযুক্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। বর্তমানে, তার দায়িত্বে থাকা এসব মামলার পর্যালোচনা চলছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এটি নক্স কাউন্টি ডিএ অফিসে সাম্প্রতিক সময়ে দ্বিতীয়বারের মতো এমন একটি ঘটনা, যেখানে কৌঁসুলির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এর আগে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে রবার্ট ডিবাস্ক নামক একজন সহকারী কৌঁসুলিকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, যিনি আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করেছে যে, একজন সরকারি আইনজীবীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত মতামত তার পেশাগত দায়িত্ব এবং নৈতিকতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
বার্কলি মেসনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত অভিবাসী-বিরোধী এবং মুসলিম-বিরোধী মন্তব্যগুলি শুধু তার ব্যক্তিগত বিশ্বাসকেই প্রতিফলিত করে না, বরং তা একটি সরকারি কৌঁসুলির নৈতিকতা এবং পেশাগত দায়িত্বের ওপরও গভীর প্রভাব ফেলেছে। মেসনের মতামতগুলি এমন একটি অবস্থানকে চিহ্নিত করে, যেখানে আইন এবং ন্যায়ের প্রতি তার অঙ্গীকার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। একজন কৌঁসুলির মূল দায়িত্ব হলো সব নাগরিকের প্রতি ন্যায্যতা ও সমতা নিশ্চিত করা, কিন্তু তার এসব বিদ্বেষপূর্ণ এবং পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। মেসনের অভিবাসী ও মুসলিম-বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি তার অদক্ষতা এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের প্রমাণ হিসেবে দেখা যায়, যা আইনি প্রক্রিয়াকে অবিচল রাখার জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে। তাই তার এসব মতামত শুধু তার চাকরি হারানোর কারণ নয়, বরং এটি সমগ্র আইনি ব্যবস্থায় ন্যায়ের প্রতি বিশ্বাসের ক্ষতি করতে পারে।