২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৬:২৯:১০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


হাওয়াই শক্তিতে বিএনপির আস্থা!
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-১০-২০২৩
হাওয়াই শক্তিতে বিএনপির আস্থা! বিএনপির একটি সমাবেশের দৃশ্য


দীর্ঘ ১৫ বছরে বিএনপির শক্তি তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে! তিন টার্ম ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের প্রচ-প্রেশারে দলটি যেতে পারছে না এদিক-সেদিক, যা করবে তারা সেটা অনুমতি নিয়ে। বিএনপি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর এমন ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়নি কখনো। এমনকি স্বৈরশাসক এরশাদের দীর্ঘ শাসনামলেও। কিন্তু দীর্ঘ এ সময়ে দলের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বেড়েছে বহুগুণে। কেনই যেন মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে দেশের সরকার পরিচালনায় বিএনপির মতো দলের বড্ড প্রয়োজন। এতেই বিএনপি যখনই কোথাও সভা-সমাবেশের ডাক দেয়, সেখানে উপচে পড়ে মানুষ। কিছু কিছু সময়ে মানুষের জনস্রোত দেখে বিএনপি নেতৃবৃন্দও হতবাক হয়ে যান। বিস্ময়ের ঘোর কাটে না যেন তাদের। এ কথা প্রকাশ্যে বলছেন তারা।

 বিএনপিতেও ত্যাগী নেতাকর্মীর সংখ্যা বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এসব কোনো কাজে আসছে না। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দন্ডিত। এমনকি সে দন্ড ছাড়িয়েও তিনি হাসপাতাল ও বাসায়। সর্বশেষ যে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে আর ফিরতেই পারছেন না। শারীরিক অবস্থার এতোটাই অবনতি তাকে বাসায় নেওয়ার পরামর্শ বা সাহস করছেন না তার চিকিৎসক বোর্ড। গত সোমবার তার ৯ অক্টোবর টানা হাসপাতালে থাকার দুই মাস পূর্ণ হলো খালেদা জিয়ার। 

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দন্ড-প্রাপ্ত। সুদূর ইংল্যান্ডে। দেশের নেতাকর্মীরা যারাই কিছুটা সোচ্চার, তাদের বেশির ভাগের ঠিকানা কারাগার। যারা এদিক-সেদিক করে কারাগারের বাইরে, তারাও দৌড়ের মধ্যে, আদালতে হাজিরার মধ্যে। বিএনপির কোনো কোনো নেতার বিরুদ্ধে শত শত মামলাও রয়েছে। মামলা নেই এমন নেতার সংখ্যা নেই বললেই চলে। এতোকিছুর পরও বিএনপি জনগণের জানমালের কথা চিন্তা করে দেশের আন্দোলনের যে ট্রেডিশন, সে থেকে বেরিয়ে এসেছে বহু আগে। বিএনপি অহিংস আন্দোলনে রাজপথে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে হরতাল, ধর্মঘট, অসহযোগ আন্দোলন প্রভৃতি দেখে আসছে মানুষ। বিএনপি সেই কালচারের একেবারেই বাইরে। কখনো রোডমার্চ, কখনো ছোট-বড় জনসভা। তা-ও আবার পুলিশের অনুমতি নিয়ে এবং ম্যাক্সিমাম সময়ে ছুটির দিনে। 

দেশের মানুষ হরতাল ধর্মঘটের মতো বিধ্বংসী ও ক্ষতিকর আন্দোলন পছন্দ করেন না। বিএনপিও সেটা উপলব্ধি করতে পেরেছে। এজন্যই তারা ওই ধরনের কর্মসূচিতে নেই। বিএনপির দীর্ঘদিনের দাবি একটাই, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। বিশেষ করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে মানুষ যেন তার নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন নির্ভয়ে, সেটাই বিএনপির দাবি। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার এ দাবি টর্তপাত না করে বিগত সময়ের মত নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে আসছে। কিন্তু বিএনপি ক্লিয়ার করে বলে দিয়েছে, দলটি কোনোদিনই শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। বিএনপি এ দাবিতে শুধু জাতীয় নির্বাচনই নয়, কোনো ধরনের নির্বাচনে (স্থানীয় পর্যায়ের) অংশ নিচ্ছে না। 

এমনই প্রেক্ষাপটে জো বাইডেনের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুসারে গোটা বিশ্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে লড়াই, সে দৃষ্টিকোণ বাংলাদেশের ওপর নিপতিত। বাইডেনের গণতান্ত্রিক সম্মেলনে বাংলাদেশ একবারও আমন্ত্রণ পায়নি। তবে বাইডেন বাংলাদেশকে কীভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে, সে গাইডলাইন দিয়েছে বলে জানা গেছে, বাংলাদেশের কাছেও সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কি করবে দলটি, সে গাইডলাইন চেয়েছে তারা। কিন্তু এ দুইয়ের যখন মিল ঘটেনি, সে থেকেই প্রকাশ্যে এসেছে মার্কিনিরা এবং পরামর্শ দিতে শুরু করেছে বাংলাদেশে আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়ার জন্য। ক্ষমতাসীন সরকার এতে টর্তপাত করেনি। যার ফলশ্রুতিতে র‌্যাবের ওপর স্যাংশন থেকে শুরু করে ভিসানীতি প্রয়োগ শুরু। 

এমন প্রেক্ষাপটে টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকা দলের সঙ্গে মতবিরোধ বাড়তে থাকে মার্কিনিদের সঙ্গে। স্বাভাবিকভাবেই এ ইস্যুতে মার্কিনিদের সঙ্গে যোগ দেয় তার মিত্র দেশসমূহ (ইইউ, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড প্রমুখ)। বিভিন্ন দেনদরবার শেষে এসব দেশসমূহ কাক্সিক্ষত সাড়া না পেয়ে এখন দিন দিন কঠোর হচ্ছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ ব্যাপারে এখন তাজা খবর। সেখানে বলা হচ্ছে, এসব দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থ পরিপন্থী সিদ্ধান্তও নিতে পারেন তারা। তবে এ সিদ্ধান্ত তারা নিচ্ছেন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা চিন্তা করে এরপরও। কারণ, বাংলাদেশে তারা গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফেরানোর লক্ষ্যেই মূলত তাদের ওই উদ্যোগ, ক্ষমতাসীন সরকারকে যাতে বাধ্য করা যায়। 

এ নিয়ে ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গে বন্ধু সরকারেরও যোগাযোগ রয়েছে। তাদেরও আশ্বাস রয়েছে। কিন্তু মার্কিনি ও তাদের মিত্রদের সঙ্গে পেরে ওঠা যাবে কী?

বিএনপি কাকতালীয়ভাবে এ সাপোর্টটা তাদের শক্তি সঞ্চারের সহায়ক হিসেবে দেখছে হাওয়া থেকে বা অদৃশ্য শক্তি পাওয়ার মতোই। এক সময় বিএনপি ও তাদের মিত্ররা ভেবেছিল, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে কোনোদিনই ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না, সেখানে তারা এখন স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে। বিশেষ করে মার্কিনি ও তাদের মিত্রদের চোখে দেখা ওই স্বপ্ন বাস্তবায়নের আশায়ও বিভোর। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের ব্যাঙ্গবিদ্রুপের আর অন্ত নেই। বিএনপি এগুলো হজম করে যাচ্ছে। 

বিএনপি বা তাদের মিত্রদের ক্ষমতাসীন সরকার তাদের রাজনৈতিক কৌশলে এমনভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে, তাতে তাদের আসলেই নড়াচড়ারও সাধ্য নেই। বিশেষ করে দীর্ঘ তিন টার্ম ক্ষমতায় থেকে তিলে তিলে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে জালে আটকে ফেলেছে। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে তাদের কিছুটা টাইট দেওয়ার পর আবার নির্বাচনের পর অনেককেই ছেড়ে দেওয়া হয়। এভাবেই চলছে বিএনপির নেতৃত্বের দিনকাল। 

যেভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা বিএনপি: 

২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে জাতীয় কমিটির উদ্যোগে এক সেমিনাওে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। 

এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা কথা খুব পরিষ্কার মানবাধিকার ও গণতন্ত্র এ দুটি পরস্পরের পরিপূরক। গণতন্ত্র ছাড়া মানবাধিকার কোনোদিন রক্ষা হতে পারে না, আর মানবাধিকার ছাড়া কখনো গণতন্ত্র চলতে পারবে না। আমাদের যে মানবাধিকার ও হিউম্যান রাইটস সংগঠনগুলো আছে তাদের হিসাব বছরে, প্রায় ৬০৭ জন গুম হয়ে গেছে। আমাদের প্রায় সহস্রাধিক রাজনৈতিক কর্মী নিহত হয়েছেন, তাদের হত্যা করা হয়েছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। যে ঢাকা কোর্টে যান, জেলা আদালতগুলোতে যান দেখবেন, যারা আসামি হয়ে আসছেন তাদের ৯০ ভাগ বিএনপির নেতাকর্মী।’ 

ভয়েস অব আমেরিকার সেই প্রতিবেদন: 

২০২১ সনের ২১ ডিসেম্বর ভয়েস অব আমেরিকার এক প্রতিবেদনে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার একটা চিত্র প্রকাশ করা হয় সেখানে জানানো হয়। ‘পুলিশ, আদালত ও বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ থেকে এ বছরের জুন পর্যন্ত ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার। বেশি মামলা হয়েছে ২০১৩ এবং ২০১৫ সালে সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে। মামলা হয়েছে কেন্দ্র, জেলা, উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়েও। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে এসব মামলা হয়েছে।

যদিও বিএনপি আগাগোড়াই বলে আসছে মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যে কোনো ইস্যুতেই বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে সরকার মামলা করছে, হামলা চালাচ্ছে। সভা-সমাবেশ বানচাল করে দিচ্ছে। এটাই প্রমাণ করছে সরকারের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান। এসব মূলত সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা এবং স্বৈরতন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ আর বিরোধীদলকে নির্মূল করার ব্যাপার তো আছেই।’

ভয়েস অব আমেরিকা আরো জানায়, পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশন) হায়দার আলী খান বলেছেন, ‘এখানে রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো মামলা হয় না। যখন কোনো ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠী কোনো ধরনের সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও জনগণের জানমালের ক্ষতি করে থাকে তখনই এই ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে মামলা হয়। বিএনপির বেলায়ও এটাই হয়েছে। এটাকে বলে আমলযোগ্য অপরাধ।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘কারারুদ্ধ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৩৭টি। এর মধ্যে দুটি মামলায় তার সাজা হয়েছে। উচ্চ আদালতে ১৬টি মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মূলত মামলা হয়েছে দুর্নীতি, মানহানি, রাষ্ট্রদ্রোহসহ হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার অভিযোগে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে মামলা হয়েছে ৬৭টি। তিনি বর্তমানে লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৮৬টি। এর মধ্যে ৩৫টি মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে উচ্চ আদালতে। বাকিগুলো চলমান।

এছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ১১টি। ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে চারটি, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার ছয়টি, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ৫৪টি। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে ৫৯টি। নজরুল ইসলাম খানের তিনটি, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ১৩টি। সেলিমা রহমানের ছয়টি, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বিরুদ্ধে ৯টি এবং ভারতের শিলংয়ে অবস্থানরত সালাউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা রয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ১৩৪টি। সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে দলটির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের বিরুদ্ধে ২৫৭টি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে চারটি, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের চারটি, আলতাফ হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ছয়টি, আবদুল্লাহ আল নোমানের বিরুদ্ধে চারটি, বরকত উল্লাহ বুলুর ২৭টি, আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছয়টি এবং মোহাম্মদ শাহজাহানের বিরুদ্ধে ২৮টি মামলা রয়েছে।’ 

এছাড়াও উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে ২৪টি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানের ১২৩টি, আব্দুস সালামের ৩৭টি, মিজানুর রহমান মিনুর ৩৭টি, জয়নাল আবেদিন ফারুকের ২৩টি, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের ১৩টি, মজিবুর রহমান সারোয়ারের ৫৭টি, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের ১৩৪টি ও খায়রুল কবির খোকনের বিরুদ্ধে ৫৭টি মামলা রয়েছে। এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর ১০৭টি, আসাদুল হাবিব দুলুর ৫৭টি, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফের ৪৭টি, যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের ৮৬, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর ১৫৩, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের ৫৩টি এবং ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব সাবেক ফুটবলার আমিনুল হকের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা রয়েছে।’ বলে ভয়েস অব আমেরিকা জানায়। 

সর্বশেষ

বিএনপি যে পরিস্থিতিতে এরপর কীভাবে আন্দোলন করবে। এরপরও গত ২০২২-এর ডিসেম্বরে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে যে মানুষের উপস্থিতি ঘটেছে সেটা ছিল বিস্ময়কর। কারণ প্রায় প্রতিটা বিভাগীয় সম্মেলনের আগে বাস, লঞ্চসহ যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সরকার এ দায় নেয়নি। তবে পরিবহন মালিকরা নিজ থেকেই অমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং সেটা তাদের যানবাহনের নিরাপত্তার স্বার্থে এমনটাই বলা হয়। 

এরপর ও ঢাকায় যেসব মহাসম্মেলন করেছে বিএনপি। সেগুলোতেও নজিরবিহীন অবস্থা। এতো বিশাল মানুষের উপস্থিতি বিগত এরশাদবিরোধী আন্দোলনেও হয়নি বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মত দিয়েছেন। 

এরপরও বিএনপি নিশ্চুপ। অহিংস আন্দোলন করছে মানুষের জানমালের স্বার্থে এমনটাই জানিয়েছেন। এমন প্রেক্ষাপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা সেটা ওই দেশসমূহের যে স্বার্থেই করুক না কেন, তারা যদি কিছু সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সেখানে বিএনপির কী করার আছে। কাকতালীয়ভাবে বিএনপির আন্দোলন ও দাবির সঙ্গে সংগতি ঘটলেও বিএনপির কিছু কী করার আছে? এ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ সুশীল সমাজের কেউ কেউ বিএনপি কে দোষারোপ করছে। কেন বিএনপি বিদেশি শক্তিকে ডেকে আনছে। বিএনপি কী আদৌ সেরকম কিছু করছে, নাকি এটা জো বাইডেনের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। বিএনপি দেড়যুগ ধরে ক্ষমতার বাইরে এরপরও তাদের ওপর যে অমানুষিক নির্যাতন এরপর বিএনপি কী বলতে যাবে, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিষয়টা আওয়ামী লীগ সরকার ও আমরা বুঝবো- (ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভাষায়) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র, আপানারা কারা?

শেয়ার করুন