২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৪:৫৭:০৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


ইমিগ্রেশন ও বৈদেশিক সাহায্য বিলে কি আছে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০২-২০২৪
ইমিগ্রেশন ও বৈদেশিক সাহায্য বিলে কি আছে


সিনেটে একটি বাই-পার্টিজান গ্রুপ হোয়াইট হাউসের সঙ্গে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার দ্বিদলীয় অভিবাসন চুক্তি প্রকাশ করেছে। ৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিলটি নিয়ে আলোচনা এবং ভোটের জন্য প্রাথমিকভাবে দেওয়া হবে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সমর্থিত সীমান্ত এবং ইসরায়েলকে সাহায্যসংক্রান্ত এই বিল থেকে ড্রিমার্সদের ডেকা (ডিএসিএ) বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময় এটি চালু করা হয়েছিল, যা অব্যাহত রাখে জো বাইডেন প্রশাসন। কিন্তু রিপাবলিকানরা নতুন সীমান্ত এবং ইমিগ্রেশন বিলের সঙ্গে মার্কিন মিত্র ইউক্রেন এবং ইসরায়েলের সাহায্যের শর্ত হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনও তাতে সম্মত হয়েছেন। ফলে সীমান্তে কঠোরবিধিনিষেধের সঙ্গে ডেকাও বাদ পড়েছে।

দ্বিদলীয় সীমান্ত সুরক্ষা বিল অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসা অবৈধদের বৈধতার পথটি ধুলিসাৎ করে দিলো। চুক্তিটিতে প্রেসিডেন্টকে বেআইনি সীমান্ত ক্রসিংগুলো বন্ধ করার ক্ষমতা দেবে, যার মধ্যে অভিবাসীদের আশ্রয়ের আবেদন গ্রহণ না করে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে বা ডিপোর্ট করা হবে। এর ফলে যারা সীমান্ত ক্রস করবে তাদের আশ্রয় পাওয়া কঠিন হবে। যারা অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন তাদের ডিপোর্টেশনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। অন্যদিকে যারা সুযোগ পাবেন, তাদের আশ্রয় প্রক্রিয়া কঠোর এবং দীর্ঘ হবে। যারা সাক্ষাৎকারে উত্তীর্ণ হবেন তাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে। রিপাবলিকান সিনেটর জেমস ল্যাঙ্কফোর্ড, ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্রিস মারফি, ইনডিপেনডেন্ট সেন কিরস্টেন সিনেমা এবং বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা আলোচনার মাধ্যমে নতুন এই চুক্তিতে উপনীত হন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রস্তাবিত ইসরায়েল ও ইউক্রেনে সামরিক সহায়তার বিলটি হাউসে আটকে যাওয়ার কারণে বাইডেন রিপাবলিকানদের দাবি মেনে এ চুক্তিতে পৌঁছেন। রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা ইসরায়েল ও ইউক্রেনে আরো সামরিক সহায়তার বিনিময়ে সীমান্ত সুরক্ষা করতে চান এবং অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ গ্রহণ করেন।

যদিও চুক্তিটি সংখ্যালঘু নেতা মিচ ম্যাককনেলসহ অনেক ডেমোক্র্যাট এবং কিছু রিপাবলিকান সিনেটরের সমর্থন অর্জন করবে, তবে জিওপি-নেতৃত্বাধীন হাউসে পাসের সম্ভাবনা কম। হাউস স্পিকার মাইক জনসন এবং চেম্বারের অন্যান্য রক্ষণশীল সিনেটরা এখনো বিরোধিতা করছেন এবং অভিবাসীদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসতে বাধা দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছেন। জনসন বলেছিলেন এই বিলটি হাউসে পৌঁছলে তার অপমৃত্যু হবে। এই বিলটি আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও খারাপ এবং সীমান্তে বিপর্যয় ঠেকাতে সম্ভব হবে না।

চার বছর আগে দায়িত্ব নেওয়ার ঠিক পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় প্রার্থীদের ব্যবস্থা ‘পুনরুদ্ধার’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বন্ধ করেছিলেন। নতুন বিলের ফলে তা থেকে বাইডেন সারে এসেছেন। দক্ষিণ সীমান্তে রেকর্ড পরিমাণ অভিবাসী আসার কারণে ডেমোক্রেটিক নেতাদের ক্রমবর্ধমান সমালোচনার মুখে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং তার প্রশাসন অবৈধদের আশ্রয়ের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ গ্রহণ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে হোয়াইট হাউসের মধ্যস্থতায় চুক্তিটি আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সীমান্ত এবং অভিবাসন আইনগুলোর মধ্যে একটি। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী আনুমানিক ১১ মিলিয়ন অভিবাসীদের মধ্যে কাউকে বৈধ করবে না, যা দীর্ঘকাল ধরে ব্যাপক অভিবাসন সংস্কারের একটি বিষয় ছিল।

সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার এই চুক্তিটিকে ‘ফরেন কান্ট্রি এবং আমাদের সীমান্তে জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন যে চুক্তিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সজ্জিত করার জন্য অর্থায়নের পাশাপাশি ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা এবং গাজায় ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তা রয়েছে। তিনি সিনেটকে একসঙ্গে বিলটি পাস করার আহ্বান জানান।

এদিকে রিপাবলিকান মাইনোরিটি নেতা ম্যাককনেল বিলটিতে কাজ করার জন্য ল্যাঙ্কফোর্ডের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, সিনেটকে অবশ্যই আমাদের সামনে সুযোগটি সাবধানে বিবেচনা করতে হবে এবং কাজ করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে।

সীমান্তে অ্যাসাইলাম প্রার্থীদের ক্ষেত্রে

যদি বিলটি কংগ্রেস পাস হয় এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেন কর্তৃক আইনে স্বাক্ষরিত হয়, তবে ফেডারেল সরকার একটি নতুন সুইপিং ইমার্জেন্সি কর্তৃত্ব লাভ করবে। প্রশাসন বেশির ভাগ অভিবাসীদের প্রত্যাখ্যান করবে বা ডিপোর্টেশন করবে যখন তারা দক্ষিণ সীমান্ত ক্রস করে থ্রেশহোল্ডে পৌঁছবে। থ্রেশহোল্ডেটি হলো-সাত দিনের মধ্যে দৈনিক গড়ে বর্ডার ক্রসিং সর্বোচ্চ ৪ হাজার অতিক্রম করা। ৪ হাজারের বেশি হলেই তাদের প্রত্যাখ্যান বা ডিপোর্ট করা হবে।

অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করলে বর্তমানে বেশির ভাগ অভিবাসীকে আশ্রয়ের আবেদন করার আইনি অনুমতি দেয়। এই আইনের ফলে ঢালাওভাবে আর অনুমতি দেওয়া হবে না। 

ইসরায়েল-ইউক্রেনকে সহায়তার বিল 

মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট গত ৪ জানুয়ারি রোববার ১১৮ বিলিয়ন ডলারের একটি দ্বিদলীয় সহায়তা বিল সামনে এনেছে। সহায়তা বিলের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত নিরাপত্তার বিষয়টি আছে। আরো আছে ইসরায়েল ও ইউক্রেনকে সহায়তার প্রস্তাব। মাস কয়েকের আলোচনার পর প্রস্তাবটি প্রকাশ্যে আনা হলো। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ কট্টর রিপাবলিকানদের বিরোধিতার পরিপ্রেক্ষিতে বিলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার শঙ্কা আছে।

সিনেটর প্যাটি মারের তথ্য অনুযায়ী, বিলে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য ২০ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার প্রস্তাব করা হয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তায় প্রস্তাব করা হয়েছে ৬০ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার। ইসরায়েলের জন্য বিলে ১৪ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের নিরাপত্তা সহায়তা প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বিলে অন্যান্য বিষয়েও সহায়তার প্রস্তাব আছে।

গত ডিসেম্বরে মার্কিন সিনেট ইউক্রেন ও ইসরায়েলের জন্য প্রস্তাবিত নতুন সহায়তার একটি বিল আটকে দিয়েছিলেন।

শেয়ার করুন