২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৫:৪৭:০০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


ঢাকা ফোরামের সভায় আব্দুস সালাম
এখনো সময় আছে খালেদাকে ছাড়েন, তার সাথে বসেন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-১১-২০২২
এখনো সময় আছে খালেদাকে ছাড়েন, তার সাথে বসেন বক্তব্য রাখছেন আব্দুস সালাম


বর্তমানে বাংলাদেশে ক্রান্তিকাল চলছে। আর নব্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এখনো সময় আছে বিএনপির চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়েন এবং তার সাথে বৈঠক করেন। আমরা এখনো আল্টিমেটাম দিইনি, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। গত ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় বৃহত্তর ঢাকা জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরামের এক মতবিনিময় সভায় ঢাকার সাবেক ডেপুটি মেয়র, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম এসব কথা বলেন।

বৃহত্তর ঢাকা জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি কাজী আজহারুল হক মিলনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আব্দুস সালাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস আহমেদ, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি আলী ইমাম শিকদার, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন। সোহরাব হোসেন ও ছাইদুর খান ডিউকের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফারুক হোসেন মজুমদার, আরিফ চৌধুরী, তানভীর করিম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া, জামালুর রহমান চৌধুরী,  আমিনুল ইসলাম আমিন, সফি আহমেদ, মোহাম্মদ হানিফ, জিল্লুর রহমান, মোহাম্মদ বাবুল, মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, মোহাম্মদ আব্দুল করিম, মোহাম্মদ মোমেন সরকার, লাবলু মিয়া, মফি ইউ আহমেদ, মোহাম্মদ হানিফ, মোহাম্মদ মাজহার, মোহাম্মদ রতন, বাবুল দেওয়ান, সরকার আব্দুল বাতেন, মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, সাইফ উদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ তওহীদ খান প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুস সালাম বলেন, করোনার সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন আওয়ামী লীগ করোনার চেয়েও শক্তিশালী। সংকট আড়াল করার জন্যই তিনি এ সব বলেছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা যখন দেউলিয়া হয় তখন আমরা বলেছিলাম, দেশে যে দুর্নীতির মহাউৎসব চলছে তাতে বাংলাদেশও দেউলিয়া হতে পারে। সেই সময় আমাদের সমালোচনা বন্ধ করার জন্য শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিয়েছিলো। বুঝাতে চেয়েছিলো বাংলাদেশে কোন সংকট নেই। আজকে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলছেন দুর্ভিক্ষের কথা। কম খাওয়ার কথা। আওয়ামী সরকার ব্যর্থ বলেই দুর্ভিক্ষের কথা বলছে। কারণ আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের এমন কোনো সংগঠনের নেতাকর্মী নেই যারা দুর্নীতি করছে না। তারাই বাংলাদেশের অর্থনীতির ১২টা বাজিয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেটা প্রমাণ করেছেন। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশকে ভালোবাসতেন, আমরাও দেশকে ভালোবাসি। তিনি আরো বলেন, ভোটের এবং ভাতের অধিকারের জন্য আমরা জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলাম। এমনকি শেখ মুজিবুর রহমানও ৭ মার্চের ভাষণে ভোটের অধিকারের কথা, গণতন্ত্রের বথা বলেছিলেন। তিনি ক্ষমতায় এসে সেই গণতন্ত্রকে হত্যা করেন। যে কারণে শেখ হাসিনার চাচা মোশতাকরাই ’৭৫ সালের ঘটনার নায়ক। আজকে আবার আওয়ামী লীগই বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই শেখ হাসিনার অধিনে নির্বাচন হবে না। আমরা আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আবার প্রতিষ্ঠা করবো। তিনি বলেন, ৯৬ সালে মাগুরার একটি আসনের কারচুপির অভিযোগে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন করে, আজ বর্তমান ৩০০ আসলে কারচুপি হচ্ছে সেই নির্বাচনে আমরা কীভাবে যাই। আরেকবার ইয়াজউদ্দিনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করেনি। খালেদা জিয়া পদত্যাগ করেছিলেন। আর এখন তো শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আমরা কীভাবে নির্বাচনে যাই? এ ছাড়াও বেগম খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করে পদত্যাগ করেছিলেন, কারণ তিনি দেশকে এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসেন। আজকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে চান না। নির্বাচন কমিশনার এক এমপি বাহারকে তার এলাকা থেকে বের করতে পারেনি। তারা কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন করবে? তারাতো ফোনের আসা নির্দেশ পালন করে। তিনি বলেন, আমি বলতে চাই বাংলাদেশে আমরা আর পাতানো নির্বাচন হতে দেবো না। আমরা এখনো শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি, কোনো আল্টিমেটাম দিইনি। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহাসমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তিনি আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য যা যা করেছে আমরাও তা তা করবো। সুতরাং এখনো সময় আছে, পদত্যাগ করেন। ইতিমধ্যেই গণজোয়ার দেখে আওয়ামী লীগ বেসামাল হয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার সরকার এতো দুর্নীতি করেছে, গুম, খুন করেছে যে তারা পদত্যাগ করতেও ভয় পাচ্ছে। এখনো সময় আছে বেগম খালেদা জিয়াকে জেল থেকে ছাড়েন এবং তার সাথে বৈঠক করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সময়ই দেশে দুর্ভিক্ষ হয়, ইনডেমনিটি দেয়া হয়, কালো আইন করা হয়। বাংলাদেশ জন্মের পর যতো খারাপ কাজ সবই আওয়ামী লীগ করেছে। এবারের আন্দোলনেই আমাদের চূড়ান্ত ফয়সালা করতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে না।

গিয়াস আহমেদ বলেন, আমরা বিএনপির সকল আন্দোলনের সাথে আছি এবং থাকবো। প্রবাস থেকেও আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

আলী ইমাম বলেন, যে দিন বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই দিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়ে। বিএনপি শক্তি হচ্ছে গত ১৩ বছরে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ভাঙতে চেষ্টা করেছে কিন্তু তারা তা করতে পারেনি। গিয়াস উদ্দিন সরকারবিরোধী আন্দোলনে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

কাজী আজহারুল হক মিলন অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

শেয়ার করুন