২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ৬:৪০:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


দেশকে রুহিন হোসেন প্রিন্স
বর্তমান নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৩-২০২৩
বর্তমান নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না রুহিন হোসেন প্রিন্স


বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, ভালো নির্বাচন চাইলে কিভাবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে সেব্যাপারেই আলোচনা দরকার। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীনদের স্বার্থ বাদ দিতেও পারবে না। আবার দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। কারণ যে সংস্কৃতি চালু আছে যখন যে দল ক্ষমতায় থাকবো তাদের ইঙ্গিতেই সব কিছু হবে। আমেরিকা থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার মুখোমুখি আয়োজনে রুহিন হোসেন প্রিন্স এসব কথা বলেন। সাম্প্রতিক কিছু বিষয় নিয়ে তার অভিমত জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন। 

দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। বিদেশীরা সরকারের কাছে জানতে চাইছে তারা আগামীতে কি ধরনের নির্বাচন করতে চাচ্ছে? ইতোমধ্যে দেশে বেশ কয়েকজন কূটনীতিক সফর করে গেছেন। সব্বাইকেই সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হতে যাচ্ছে। এমনকি তাদের আগ্রহের জবাবে এমনও বলা হচ্ছে যে ’আপনাদের নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই। আমরাও একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই।’ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বিদেশীদের আশ্বস্ত করা হলেও কি দেশে রাজনৈতিক দলগুলি কি আশ্বস্ত হতে পেরেছেন? তারা কি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতার আশ্বাসে ভরসা পাচ্ছেন? এবিষয়গুলি নিয়ে এবারে মুখোমুখি হয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সাথে দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ। 

দেশ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সফররত ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী অ্যান মারি ট্রিভেলিয়ান সাথে সাক্ষাৎকালে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন আগামী সাধারণ নির্বাচন পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণ স্বাধীন। প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্থ করেছেন যে তার সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন আগামী সাধারণ নির্বাচন পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণ স্বাধীন। এমন আশ্বাসে সফররত ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রীও আশ্বস্ত হয়েছেন। এব্যাপারে আপনার অভিমত কি? আপনারা কি এধরনের আশ্বাসে আশ্বস্ত?

রুহিন হোসেন প্রিন্স: প্রথম কথা হলো এটা নতুন কিছু না। সরকারের পক্ষ থেকে অনেকদিন ধরে এধরনের কথা বলা হচ্ছে। একিইভাবে আমরাও বলছি বাংলাদেশে এধরনের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত এমনভাবে গড়ে উঠেনি যে তার ওপর নির্ভর করে সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়। রাজনৈতিক সংস্কৃতিও সেভাবে গড়ে উঠেনি। দ্বিতীয়ত হচ্ছে প্রধান নির্বাচন কমিশন আমার বিবেচনায় একমাত্র ক্ষমতাসীন ছাড়া ছাড়া আস্থা অর্জন করতে পারেনি। এসব বিবেচনা মাথায় রেখে কেউ যদি দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায় আমার বিবেচনা প্রথমে যেটি করতে হবে তা হলো এক্ষুনি প্রধান কাজ হচ্ছে নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল সংস্কার নিয়ে আলোচনা করা উচিত। সে নির্বাচনে টাকার খেলা থাকবে কিনা? পেশি শক্তি থাকবে কি-না? সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি থাকবে কি-না? একইভাবে নির্বাচন কালীন সময়ে নির্দলীয় সরকার থাকবে কি-না? বাংলাদেশে প্রেক্ষাপটে বিএনপি-আওয়ামী লীগ এমনকি সিপিবি ক্ষমতায় থাকলেও একটু যে কথাগুলিা বললাম সেকারণেই দেশে ভালো নির্বাচন আশা করা যায় না। তাই পুরনো কথার নতুন কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়ার কোনো মানেই হয় না..। সুতরাং ভালো নির্বাচন চাইলে কিভাবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে সেব্যাপারেই আলোচনা দরকার। 

দেশ: সরকারের একেবারে শীর্ষ ব্যক্তি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন। তিন দিনের বাংলাদেশ সফরে ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী অ্যান মারি ট্রিভেলিয়ানও বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন এ দেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন। তাই বলতে হচ্ছে এতেও কি আপনারা আশ্বস্ত না?

রুহিন হোসেন প্রিন্স: আমিতো আগেই বলে ফেললাম। এধরনের মন্তুব্যে বাংলার মানুষের আশ্বস্ত হবার কোনো কারণ নেই। এটা আগেও বলেছি আর আমি এখন তা আবারো বলতে চাচ্ছি তা হলো নির্বাচন কমিশন স্বাধীন কি-না? নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হলেও স্বাধীনভাবে গড়ে উঠেনি। এখানে যে দলই ক্ষমতা থাকুক না কেনো এই নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীনদের কথা বাদ দিয়ে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। কারণ যে সংস্কুতি চালু আছে যখন যে দল ক্ষমতায় থাকবো তাদের ইঙ্গিতেই সব কিছু হবে। 

দেশ: সরকারের আশ্বাসে বিশ্বাস করছেন না আপনারা। সেক্ষেত্রে যদি সরকার যারা তাদেরকে বিশ্বাস করবে তাদের নিয়ে একটি নির্বাচন করে ফেলে? সেক্ষেত্রে কি করবেন?

রুহিন হোসেন প্রিন্স: আমাদের কাছে এখন এটা কোনো আলোচনার বিষয় না। আমরা এখন আন্দোলন করছি জনগণের ভোটাধিকারের জন্য। একটা ভালো নির্বাচনের জন্য। একই সাথে দেশে যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে তার থেকে দরিদ্র মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য রেশনিং ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু করা জন্য। আন্দোলনের পথই বলে দেবে নির্বাচনের সময়ে আমরা কি করবো? সরকারকে আমরা বাধ্য করবো নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মেনে নেয়ার ব্যাপারে। 

দেশ: দেশে আন্দোলন সংগ্রামের বর্তমান অবস্থায় কি আপনারা আশাবাদি? প্রায় ১৫ বছর ধরেইতো আন্দোলন করে যাচ্ছেন..তা-ও আশাবাদী?

রুহিন হোসেন প্রিন্স: পনের বছর ধরে তো আমরা নানামুখী আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। অনেক সময় দেখা গেছে এধরনের শাসক গোষ্ঠী আরো দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে পারে। এতে আন্দোলন ব্যাহত হয় না। বা আন্দোলনের গুরুত্বও কমে যায় না। অতএব জনগণ মনে জনগণ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে বা সুষ্ঠু নির্বাচনটির জন্য কোনো দলীয় সরকারেরর পক্ষে সম্ভব না। অতএব আমরা জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলনে চালিয়েই যাবো।

শেয়ার করুন