প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াশিংটন অবস্থানকালে গত ১ মে ছিল বিশ্বব্যাংকের বৈঠকে ও ২ মে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সংবর্ধনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। এই দুই দিনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির অঙ্গ সংগঠন আগে থেকেই কর্মসূচি ঘোষণা করে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ছিলো প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানোর এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কর্মসূচি ছিল বিক্ষোভ সমাবেশ। ১ মে বিশ্বব্যাংকের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেওয়ার আগেই বিশ্বব্যাংকের সামনে অবস্থান নেয় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দও অবস্থান নেয়। উভয়ের সেøাগান এবং বোতল ছোড়াছুড়িকে কেন্দ্র করে তুমুল মারামারি এবং ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। কে বাবা কারা পুলিশ কল করলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশ অবস্থান নেয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. ছিদ্দিকুর রহমানসহ তাদের কয়েকজন নেতা আহত হন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রায় ৭ জনের মতো নেতাকর্মী আহত হন। এর মধ্যে রিপন মিয়া হাসপাতালে ভর্তি হন। উভয় দলের পক্ষ থেকে পুলিশ রিপোর্ট করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ উভয় দলের কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পরবর্তীতে ছেড়ে দেয়। ২ মে প্রধানমন্ত্রীকে যে হোটেলে সংবর্ধনা দেয় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। সেই হোটেলের সামনেও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সেখানেও বিএনপির ওপর হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। সেই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির দুই নেতা আহত হন। এর মধ্যে ভার্জিনিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
এই ঘটনা এখানেই শেষ হয়নি তার জের এখন বাংলাদেশে চলছে। জানা গেছে, মারামারির ভিডিও দেখে এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে চিহ্নিত করেন। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে তাদের গ্রামের বাড়িতে হামলা চালানো হয় এবং মামলা দায়ের করা হয়। ইতিমধ্যে যাদের চিহ্নিত করা হয় তাদের গ্রামের বাড়িতে হামলা করা হয় এবং মামলা করা হয়। আরো অনেককে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানা গেছে। ১ মের মারামারির ঘটনায় জড়িত চিহ্নিত করে নোয়াখালীর সন্তান বাদল মির্জার বাড়িতে গত ২ মে হামলা করা হয়। বাদল মির্জা এই প্রতিনিধিকে বলেন, ওয়াশিংটনের মারামারির ঘটনায় আমি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলা আমি আহত হই। উল্টো আমার গ্রামের বাসায় হামলা করা হয়। তিনি বলেন, ওয়াশিংটন যুব লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং আমার ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে পুলিশসহ ২ মে বিকালে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। এই সময় আমার বাড়িতে আমার মা ছিলেন। তারা গিয়ে আমার বাসার দরজায় নক করে। এক সময় ধাক্কা দেয়। কিন্তু আমার মা ভয়ে দরজা খুলেননি। আমার মা দরজা না খোলায় তারা আমার মাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং আমাদের রান্না ঘর ভেঙে ফেলে। অন্যদিকে আমার বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এর আগেও জ্যাকসন হাইটসের মারামারির ঘটনায় আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলো। আমাদের বাড়ি ছাড়া করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে সেই মামলা আমরা মোকাবিলা করি এবং বাড়িতে ফিরে আসি।
অন্য আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির আরো যাদের চিহ্নিত করা হয় তাদের বাড়িতেও হামলা করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যুবদল নেতা শাহবাজের বাড়িতেও হামলা করা হয়েছে এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা জানান, বাংলাদেশে যেভাবে সরকার ভীতি সৃষ্টি করেছে ঘুম-খুনের মাধ্যমে। এভাবে প্রবাসেও ভীতির রাজনীতি চালু করার চেষ্টা করছে, যে কারণে আমাদের কর্মীদের গ্রামের বাড়িতে হামলা চালানো হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে।