২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৮:১৮:০০ পূর্বাহ্ন


ফোর্বসের শতকোটিপতিদের তালিকায় কারা আছেন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৬-২০২৩
ফোর্বসের শতকোটিপতিদের তালিকায় কারা আছেন দুই শীর্ষস্থানীয় ধনী ইলন মাস্ক ও বার্নার্ড আর্নল্ট


ফোর্বস ম্যাগাজিনের শতকোটিপতিদের তালিকা প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হয়। শেয়ারের দাম ওঠানামার কারণে প্রতিদিনই এই পরিবর্তন আসে। বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতিরা খুবই ক্ষমতাবান মানুষ। রাজনীতি থেকে শুরু করে অর্থনীতি, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার-সব ক্ষেত্রেই তাদের ভূমিকা থাকে। সে কারণে তাদের নিয়ে মানুষের আগ্রহেরও কমতি নেই। এ মুহূর্তে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি হচ্ছেন বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানির টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্যানুসারে, গত ১৯ জুন সোমবার বিশ্বের শীর্ষ ধনী টেসলার ইলন মাস্ক। তার সম্পদমূল্য ২৩৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৬৯০ কোটি ডলার। সোমবার তার সম্পদ মূল্য পরিবর্তিত হয়নি, অর্থাৎ এদিন তার সম্পদমূল্য যেমন বাড়েওনি, তেমনি কমেওনি।

দ্বিতীয় স্থানে আছে ফ্রান্সের ধনকুবের বার্নার্ড আর্নল্ট অ্যান্ড ফ্যামিলি। সোমবার এ পরিবারের সম্পদমূল্য ২৩০ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ২৩ হাজারা ৬০ কোটি ডলার। সোমবার তার সম্পদ মূল্য কমেছে ৩ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ৩১০ কোটি ডলার। শতাংশের হিসাবে কমেছে ১ দশমিক ৩১ শতাংশ।

তৃতীয় স্থানে আছে ওরাকলের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন, তার সম্পদ মূল্য ১৫৬ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১৫ হাজার ৬২০ কোটি ডলার। ইলন মাস্কের মতো সোমবার তার সম্পদ মূল্যও অপরিবর্তিত আছে।

এ বছর ধনীদের তালিকায় এগিয়ে আসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম হলো ওরাকলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন। ১৯৭৭ সালে এটি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে তিনি এটি পরিচালনা করেন। বর্তমানে তিনি এটির চেয়ারম্যান ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা। এই প্রথম এলিসন ধনীদের তালিকায় ওপরের দিকে উঠে এসেছেন এবং এই প্রথম তিনি মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের ওপরে উঠে এসেছেন।

ফোর্বস ম্যাগাজিনে ধনীদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজাস। ১৯ জুন সোমবার তার সম্পদ মূল্য ছিল ১৪৮ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১৪ হাজার ৮২০ কোটি ডলার।

পঞ্চম স্থানে আছেন মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। তার সম্পদমূল্য ১১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন বা এরপর ১১৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ৭৮০ কোটি ডলারের সম্পদ নিয়ে তালিকার ষষ্ঠ স্থানে আছেন বিনিয়োগ গুরুখ্যাত ওয়ারেন বাফেট। তিনি পরিচিত ‘ওরাকল অব ওমাহা’ বা ওমাহার দৈববক্তা হিসেবে। ওয়ারেন বাফেট ইতিহাসের অন্যতম সফল একজন বিনিয়োগকারী। তার বিনিয়োগ কোম্পানির নাম বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে। আর তাদের মালিকানায় আছে বেশ অনেকগুলো কোম্পানি। এর মধ্যে রয়েছে ইনস্যুরেন্স কোম্পানি গেইকো, ব্যাটারি প্রস্তুতকারক ডিউরাসেল এবং রেস্তোরাঁ চেইন ডেইরি কুইন। ১০৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৪৯০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ সম্পদ নিয়ে সপ্তম স্থানে আছে ল্যারি পেজ। সোমবার তার সম্পদ বাড়েনি বা কমেনি।

ধনীদের এ তালিকা স্থির বা নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নয়। চলতি বছরের ১০ এপ্রিল ইলন মাস্ককে হটিয়ে বিশ্বের শীর্ষে ধনীর স্থান লাভ করেন ফরাসি বিলাস পণ্যের কোম্পানি এলভিএমএইচের প্রধান বার্নার্ড আর্নল্ট। সেদিন তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ২১১ বিলিয়ন ডলার, অথচ এখন তিনি ২৩০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী।

এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সেও বিশ্বের শীর্ষ ধনী হয়েছিলেন বার্নার্ড আর্নল্ট। সোমবার শতকোটিপতিদের তালিকায় অষ্টম স্থানে ছিলেন মাইক্রোসফটের সাবেক প্রধান নির্বাহী স্টিভ বালমার। এদিন তার সম্পদমূল্য ছিল ১০৪ দশমিক ৪ বা ১০ হাজার ৪৪০ কোটি ডলার। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিল গেটসের সঙ্গে একই ক্লাসে পড়তেন বালমার। তিনি মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন ২০০০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত। এমবিএ কোর্স থেকে ঝরে পড়ার পর তিনি ১৯৮০ সালে মাইক্রোসফটের ৩০ নম্বর কর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। মাইক্রোসফট থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি ২০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে লস অ্যাঞ্জেলেস টিম কিনে নিয়েছিলেন। যে কোনো এনবিএ টিমের জন্য ওই দাম ছিল সেই সময়ের একটি রেকর্ড।

তালিকায় ৯ম স্থানে আছেন কার্লোস স্লিম হেলু অ্যান্ড ফ্যামিলি। তার সম্পদমূল্য ১০১ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ১৫০ কোটি ডলার। কার্লোস স্লিম আমেরিকা মোভিলের সম্মানীয় চেয়ারম্যান।

ফোর্বসের তালিকায় ১০ম স্থানে আছেন একসময় ধনীদের তালিকায় ২ বা ৩ নম্বরে থাকা ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। সোমবার তার সম্পদমূল্য ছিল ৯৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ৯৭০ কোটি ডলার।

এদিকে কয়েক বছর বৃদ্ধির পর ২০২২ সালে সামগ্রিকভাবে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের সম্পদমূল্য কমেছে। ফোর্বসের তথ্যানুসারে, দুই বছর ধরে চলমান মহামারি এবং সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে শীর্ষ ধনীদের সম্পদ কমেছে। ২০২২ সালের তালিকায় স্থান পেয়েছেন ২ হাজার ৬৬৮ জন, গত বছরের তুলনায় ৮৭ জন কম। তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার বা ১২ লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ৪০০ বিলিয়ন বা ৪০ হাজার কোটি ডলার কম।

ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ধনীদের প্রায় সবাই সেলফ-মেইড। অর্থাৎ নিজের চেষ্টায় তারা বিপুল অর্থসম্পদ গড়ে তুলেছেন। কেউ কেউ উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পদ পেলেও তা বহুগুণে বৃদ্ধি করেছেন এবং নিজের মতো করে সাম্রাজ্য গড়েছেন। সে কারণে তারা মানুষের বিশেষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।

শেয়ার করুন