২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৮:৫৯:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার দায় সরকারের
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৭-২০২২
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার দায় সরকারের কুমিল্লায় একটি মন্দিরে ভাংচুর/ফাইল ছবি


একের পর এক সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার দায় সরকারকেই নিতে বলেছেন রাজনৈতিক সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। তারা বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং তাদের নানাভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে এবং পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে।

লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া এলাকার এক কলেজছাত্র গত ১৫ জুলাই মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.)কটূক্তি করে তাঁর ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ লোকজন দিঘলিয়া বাজারে সংখ্যালঘুদের বাড়ি ও দোকানপাটে হামলা চালায়। এ সময় একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ একপর্যায়ে শর্টগান দিয়ে ফাঁকা গুলি করে। গত ১৭ জুলাইকথিত অভিযুক্ত সেই শিক্ষার্থীকে খুলনা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সারাদেশে এনিয়ে চলছে প্রতিবাদের ঝড়।

বিএনপি যা বললো

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশে সাম্প্রদায়িক হানাহানির ঘটনা বেশি ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এটাকে সরকারের ব্যর্থতা বলে মনে করেন তিনি। নড়াইলের লোহাগড়ায় ফেসবুক পোস্টে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। গত ১৭ জুলাইগুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন। 

ডা. জাফরুল্লাহ বললেন... 

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রেরপ্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে এক কলেজছাত্রের বিতর্কিত স্ট্যাটাসের জেরে নড়াইলের দিঘলিয়া সাহাপাড়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘর-বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান একাধিক মন্দির ও বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমার অন্তরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এজন্য তো আমরা যুদ্ধ করিনি। আমাদের এই ভাইদের (আক্রান্তদের) যদি বাঁচাতে না পারি। রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে দিঘলিয়ার সাহাপাড়ায় হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের ঘরবাড়ি ও মন্দির পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন তিনি। প্রশাসনকে সঠিক তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ এবং  নাগরিক আন্দোলনের আহ্বায়ক জুনায়েদ সাকী।

বামদের প্রতিবাদ

নড়াইলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে ১৭ জুলাইরাজধানীতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ (সিপিবি) বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বামপন্থী ছাত্রসংগঠন রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে। এসব কর্মসূচিতে বলা হয়, বাংলাদেশের মতো একটি অসাম্প্রদায়িক দেশে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ভুয়া ফেসবুক আইডির মাধ্যমে এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। যারা এসব ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত, যারা মদদদাতা, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় এই প্রবণতা বেড়েই চলেছে। এর দায় সরকারকে নিতে হবে। সিপিবির সমাবেশে দলের সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, বর্তমান ও অতীতের ক্ষমতাসীনেরা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সাম্প্রদায়িকতাকে লালনপালন করেছে। ক্ষমতার অন্যতম খুটি হিসেবে ব্যবহার করেছে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশ আজ অচেনা।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতা-কর্মীরা রোববার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল করেছেন। সমাবেশে নেতারা বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার কোনো ঘটনার বিচার হচ্ছে না। এতে হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলও (বাসদ) গত ১৭ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে। এতে বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং তাদের নানাভাবে আশ্রয়-প্রশয়ে দেয়া হচ্ছে এবং পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সারাদেশে অব্যাহতভাবে বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, নির্যাতন, ভূমিদখলের ঘটনা ঘটে চললেও সরকার- প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা তো নেয়নি, বরং তাদের নানাভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় ও পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। অনেক ক্ষেত্রে সরকারদলীয় লোকেরাই এসব সাম্প্রদায়িকতার সাথে যে যুক্ত তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

সংবাদপত্রের খবরে প্রকাশ হয়েছে এবারের ঘটনায়ও আওয়ামীলীগ নেতারা ও পুলিশ ঘটনার সময় সেখানে থাকলেও তারা থামানোর চেষ্টা করেনি বরং উস্কানি দিয়েছে। যার ফলেই একের পর এক হামলা নির্যাতনের ঘটনা ঘটাতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এতো সাহস দেখাচ্ছে।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক ছাত্রসমাবেশে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে নড়াইলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা চালিয়েছে। এতে বক্তব্য দেন ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা তামজীদ হায়দার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) রাফিকুজ্জামান ফরিদ প্রমুখ।

এ ধরনের ঘটনায় নড়াইলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এতে বলা হয়েছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে কোনো ধর্মকে অবমাননা করার অধিকার যেমন কারো নেই, তেমনি আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করার অধিকারও কাউকে দেয়া হয়নি।

নড়াইলের ঘটনায় উদ্বিগ্ন নারীপক্ষ এক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ধর্মীয় উন্মাদনা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী তৎপরতা নিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও হিংসাত্মক কার্যকলাপ রোধ করতে হবে। এ জন্য সরকারকে এখনই ধর্ম মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সরকারি দলে ‘কাউয়া’ ঢুকেছে

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সরকারি দলে ‘কাউয়া’ ঢুকেছে। এসব কাউয়ারা শেখ হাসিনা সরকারের যা কিছু অর্জন তা কুরে কুরে খাচ্ছে। এরা সরকারি দলকে জনবিচ্ছিন্ন করার জঘন্য চক্রান্তে তৎপর। 

সংগঠনটির ডাকে গণসমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আগে এক সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সরকারি দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ে শনিবার বিকেলে সারাদেশে একর্মসূচি পালিন তয়। নিজ নিজ সংগঠনের পতাকা, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনসমূহের হাজারো মানুষ এতে অংশ নেয়। ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠানের পর এক বিক্ষোভ মিছিল সেøাগানসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ প্রদক্ষীণ করে। চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড় চত্বরে সমাবেশ শেষে হাজারো জনতার মিছিল আন্দরকিল্লা, লালদীঘি হয়ে নিউমার্কেট চত্বরে এসে শেষ হয়। চট্টগ্রামের সমাবেশ থেকে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত আগামী ২২ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত একই দাবিতে সারাদেশে গণঅনশনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

রাজধানীতে সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এসব চক্রান্তকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তারা সরকারি দলের নেতৃবৃন্দের কাছে আহ্বান জানান এবং বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে তাদের যেন কোন দল থেকে প্রার্থী করা না হয়। ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দ রাজনীতি যাতে গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রকৃত রাজনীতিবিদদের হাতে ফিরে তজ্জন্যে সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। 

সমাবেশে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দ সারা দেশব্যাপী চলমান সাম্প্রদায়িক নির্যাতন-নিপীড়ন এবং শিক্ষকদের ওপর হয়রানি বন্ধের জোর দাবি জানিয়ে বলেছেন, এর অন্যথায় আগামী সংসদ নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। নেতৃবৃন্দ বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের ইতিমধ্যের সাড়ে তিন বছর অতিক্রান্ত হলেও সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিসমূহ বাস্তবায়নে আজো সরকারের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।এতে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী হতাশ হয়ে সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যে এ আন্দোলনে নেমেছে। এছাড়া বিকল্পে আর কোন পথ তাদের সামনে খোলা নেই। তারা বলেন, বিগত মার্চ মাসে আড়াই লক্ষ লোকের গণস্বাক্ষরসম্বলিত স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর অবগতির জন্যে তার কার্যালয়ে পৌঁছে দেয়া সত্ত্বেও আজো কোনো সরকারি উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি।

নেতৃবৃন্দ সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন, বৈষম্য বিলোপ আইন ও দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইনের প্রণয়ন; জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন; অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন এবং সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের সরকারি দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কথা সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিগত সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে দলীয় নির্বাচনী ইশতেহার দলের প্রধান হিসেবে নিজেই ঘোষণা করেছিলেন। তাই তিনি স্বদ্যোগে তার প্রতিশ্রুতিসমূহ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবেন বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

সংখ্যালঘু-আদিবাসী নেতৃবৃন্দ দুঃখ করে বলেন, স্বাধীনতার অর্ধশত পরে সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতা রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে ভয়াবহ বিপর্যয় ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দ মহানবীর প্রতি ভারতের জনৈক রাজনীতিবিদ নূপুর শর্মার কটাক্ষের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, সকল ধর্মের ধর্মপ্রাণ মানুষ এতে নিদারুণভাবে ক্ষুব্ধ। যে কোন ধর্মে ধর্মপ্রাণ মানুষ নিজ ধর্ম ও অপরাপর ধর্মের প্রতি কটাক্ষ করতে পারে না। কারণ ধর্ম যার যার পবিত্র ব্যক্তিগত বিশ্বাস। নেতৃবৃন্দ তার জঘন্য অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও শাস্তির নিশ্চিতের জন্যে ভারত সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। তারা নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের অতিসাম্প্রতিক মন্তব্যকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন।

নেতৃবৃন্দ পবিত্র ধর্মকে রাজনীতির সাথে যুক্ত না করার জন্যে রাজনৈতিক দলসমূহের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ধর্ম হচ্ছে বিশ্বাসের বিষয় আর রাজনীতি হচ্ছে তর্ক-বিতর্কের বিষয়। ধর্ম তর্ক-বিতর্কের অনেক ঊর্ধ্বে। তাই ধর্মের পবিত্রতা রক্ষায় সকল ধর্মপ্রাণ মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে এবং নানান মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুণ্নে যারা তৎপর তাদের বিরুদ্ধে সচেতন ভূমিকা গ্রহণের জন্যে সরকার ও রাজনীতিবিদদের প্রতি আবেদন জানান।

ঢাকার সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের অন্যতম সভাপতি সাবেক সাংসদ ঊষাতন তালুকদার। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও মি. নির্মল রোজারিও, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, কাজল দেবনাথ,

সাংবাদিক বাসুদেব ধর, অ্যাডভোকেট প্রিয়রঞ্জন দত্ত, শ্রী রঞ্জন কর্মকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, জয়ন্ত কুমার দেব, অ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার রায়, অ্যাডভোকেট কিশোর রঞ্জন মণ্ডল, রবীন্দ্র নাথ বসু, সাংগঠনিক সম্পাদক পদ্মাবতী দেবী, ঐক্য পরিষদ মহানগর দক্ষিণের সভাপতি লায়ন চিত্ত রঞ্জন দাস, ঐক্য পরিষদ মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার রায় শিশির, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক, খ্রিস্টানএ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মি. হেমন্ত কোড়াইয়া, বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সুনন্দপ্রিয় ভিক্ষু, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট (প্রভাস-পলাশ) নির্বাহী সচিব পলাশ কান্তি দে, হিন্দু লীগের মহাসচিব শ্রী শংকর সরকার,

মাইনোরিটি রাইট ফোরাম বাংলাদেশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট পবিত্র মিস্ত্রি, জাতীয় হিন্দু মহাজোট (সোনালী-এম রায়) সভাপতি ড. সোনালী দাশ, বাংলাদেশ ঋষি পঞ্চায়েত ফোরামের সভাপতি শ্রী রামানন্দ দাশ, সনাতন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজু চৌধুরী, বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল, বাংলাদেশ আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট বিভাশ রঞ্জন বিশ্বাস, বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুপ্রীয় ভট্টাচার্য্য, বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার সাহা, ছাত্র ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক কাজল চন্দ্র দাস প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।  ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে আজকের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক সাগর হালদার।


শেয়ার করুন