২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০১:২২:৪২ পূর্বাহ্ন


বিয়ানীবাজার সমিতির তৃতীয় সাধারণ সভা
দফায় দফায় উত্তেজনা ও বাক বিতণ্ডা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৬-২০২৩
দফায় দফায় উত্তেজনা ও বাক বিতণ্ডা উত্তেজনার একটি দৃশ্য


টান টান উত্তেজনা, মারমুখি অবস্থান, বাক বিতণ্ডা, অসহিষ্ণু আচরণ, কার্যকরি কমিটির একজন সদস্য সাবেক সভাপতিকে অপমান, সাবেক  দুই সভাপতির ক্ষমা চাওয়া, একজন উপদেষ্টার দ্ব্যর্থহীন অস্বীকারের মধ্যেই দিয়ে শেষ হয়েছে প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সংগঠন বিয়ানীবাজার সমিতির সাধারণ সভা।

গত ২৫ জুন ওজন পার্কের দেশী সিনিয়র সেন্টারে বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতির তৃতীয় সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সমিতির প্রেসিডেন্ট আব্দুল মান্নান। সাধারণ সভা পরিচালনা করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক মাহবুব। বদরুল হোসেনের পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মধ্যে দিয়ে সভার কাজ আরম্ভ  হয়। পরে সম্পাদকীয় রিপোর্ট ও কোষাধ্যক্ষের রিপোর্ট উপস্থাপন করেন যথাক্রমে সম্পাদক নাজমুল হক মাহবুব ও কোষাধ্যক্ষ আব্দুল  হান্নান দুখু। সম্পাদকীয়  রিপোর্টের মধ্যে সমিতির জন্য ২০০টি কবর ক্রয়, ভোটার নিবন্ধন সংশোধন ও সংযোজন, কবর ডিমারকেশন নীতিমালা, ইমিগ্রেশনের ব্যাপারে আইনী পরামর্শ, বিয়ানীবাজার সমিতির বিদায়ী কমিটি কর্তৃক অবশিষ্ট নথিপত্র ও হিসাব নিকাশের পর্যালোচনা, ৫০১সি ট্যাক্স এক্সজাম ও নতুন প্রস্তাব কমিউনিটি সেন্টার। সম্পাদকীয়  রিপোর্টের আলোচনায় সাবেক সভাপতি মকবুল রহিম চুনই হিসাব-নিকাশ নিয়ে বলেন, নতুন কমিটির কাছে কাগজ হস্তান্তরের সময় জরুরি কাজে দেশে চলে যান। এ সময় সমিতির কাগজপত্র ও হিসাব হস্তান্তরের সময় অসাবধানবশত ভুলের কথা উল্লেখ করেন। সে সাথে হিসাবে রসিদের প্রসঙ্গে বলেন, নিজ ঘরের কাজ চলাকালীন সময়ে অগোচরে কাজের লোকেরা ফেলে দেয়। এর জন্য রসিদ বই দিতে না পারায়  দুঃখ প্রকাশ করেন। ভুল ভ্রান্তির জন্য ক্ষমা চান। সম্পাদকীয় রিপোর্টে সাবেক সভাপতি আজিমুর রহমান বুরহান  দায়িত্ব না থেকেও  সমিতির  নামে ২০১৪- ২০১৫- ২০১৬ আর্থিক বছরে ট্যাক্স রিটার্ণ করেন। যা সমিতির ট্যাক্স আইডি’র সাথে মিল নেই। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাবেক সভাপতি আজিমুর রহমান বুরহান নিজের অবস্থান লিখিত বক্তব্যে তুলে ধরেন।

পরিশেষে সাবেক সভাপতির লিখিত বক্তব্যের পর কার্যকরি কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক আলোকপাতের এক পর্যায়ে সাবেক সভাপতির লিখিত বক্তব্যকে  অসাড় ও খরাপাতা এবং গারবেজ বলে ছুড়ে মাটিতে ফেলে দেয়ার সাথে সাথে  একজন সাবেক সভাপতিকে অপমান করার প্রতিবাদে ঝড় উঠে। এ সময় এলোপাতাড়ি অনেককে  মারমুখি হতে দেখা যায়। অনেক কার্যকরি কমিটির সদস্য এই সদস্যকে তার অনৈতিক কাজের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলতে শোনা  যায়। বার অনুরোধ করেও উচ্ছৃঙ্খলতা থামতে বিলম্ব হয়। অনেক পরে  উত্তপ্ত পরিস্থিতির শান্ত হয়। সাবেক সভাপতি ট্যাক্স রিটার্নের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সম্পাদকীয় রিপোর্টে আতীকুল হক আহাদ বক্তব্য প্রদানকালে কোষাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান দুঃখু প্রতিবাদ করলে আবারও সভাস্থলে চরম বিশৃঙ্খলতা দেখা দেয়। সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। ২০১৯ সালে বিয়ানীবাজার সমিতির ভবনে একজন ভাড়াটিয়া প্রায় এক বছর ভাড়া না দেয়ায় তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে কোর্টে  মামলা করে তাকে  বের করে  দেয়া হয়। কোর্টে  মামলা না  করে সামাজিকভাবে কেন সমাধান করার উদ্যোগ  নেয়া হয়নি। ময়নুল হোসেন নামে একজন  সদস্য সভায় উপস্থিত বর্তমান উপদেষ্টা আহমদ এ হাকিমকে ঐ  মামলার জন্য দায়ী করে বক্তব্য রাখেন। হাকিম ময়নুল হোসেনের বক্তব্যেকে দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখ্যান করেন  এবং বলেন, মামলা সম্পর্কে তিনি জানেন না। এবং সে সময় তিনি সভাপতিও ছিলেন না। এমন কি কোর্ট থেকে ১৫ ডলারের একটি চেক আসে কোর্টে  যাওয়ার  জন্য। তিনি যাননি। যেহেতু তিনি মামলা করেননি। হাকিম তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, সে সময়ের সভাপতি মঞ্চে  আছেন। তিনি বলতে পারবেন মামলা সম্পর্কে। সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল বক্তব্যে প্রদান করে মামলার জন্য তদন্ত কমিটির প্রস্তাব করলে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা  হলেন- আজমল হোসেন কুনু, ময়নুল ইসলাম, আজিমুর রহমান বুরহান, সভাপতি আব্দুল মান্নান ও সেক্রেটারি নাজমুল হক  মাহবুব। 

সভায়  উত্থাপিত কমিউনিটি সেন্টারে জন্য সবাই মতামত ব্যক্ত করেন। আলোচনা অংশ নেন আজমল হোসেন কুনু, বুরহান উদ্দীন কপিল, আহমদ এ হাকিম, মোস্তফা কামাল, মিছবাহ আহমদ, জামাল হোসেন, সারওয়ার হোসেন, আলিম উদ্দীন। সাধারণ সভায় সুন্দর সম্পাদকীয় ও কোষাধ্যক্ষ রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।

সভার সভাপতি আব্দুল মান্নান সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সভার কাজ সমাপ্ত করেন।

শেয়ার করুন