২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০১:৩২:২১ পূর্বাহ্ন


মির্জা ফখরুলের সাথে বৃটিশ হাই কমিশনারের রুদ্ধদ্বার বৈঠক
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৭-২০২৩
মির্জা ফখরুলের সাথে বৃটিশ হাই কমিশনারের রুদ্ধদ্বার বৈঠক


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে সোয়া এক ঘন্টা রুদ্ধ্রাদ্বার বৈঠক করেছেন বৃটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুক। আওয়ামী লীগের সাথে সাধারণ সম্পাদক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাথে বৈঠকের তিন ঘন্টা পর বৃটিশ হাই কমিশনারের পতাকাবাহী গাড়ি গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। বৃটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে ছিলেন হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর টিমোথি ডকেট।

বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে দলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ এখানে নতুন করে আজকে বলার কিছু নাই। আমরা একটা কথা বার বার বলছি যে, বাংলাদেশের ওপর সমস্ত গণতন্ত্রকামী দেশ যেগুলো আছে, বিশ্বের গণতন্ত্রকামী যে সংগঠনগুলো আছে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা মানবাধিকারে বিশ্বাস করে বিশেষ করে আইনের শাসনে, জীবনের নিরাপত্তা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে… সবারই কনসার্ন একটা জায়গায়…। এর পরিবর্তনের একমাত্র উপায় হচ্ছে একটা নিরপেক্ষ,গ্রহনযোগ্য ও অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচন এবং সেটা বাংলাদেশের জনগনের যেভাবে প্রত্যাশা তাদের(গণতান্ত্রিক দেশগুলোর) একই প্রত্যাশা।”

‘‘ বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহনমূলক,নিরপেক্ষ, গ্রহনযোগ্য নির্বাচন এই নির্বাচনে তাদের সংসদ নির্বাচন করবে, তাদের সরকার নির্বাচন করবে… এই কনসার্ণ সকলের আছে। বৃটিশ সরকারের সব সময় ছিলো। আমরা ওয়েস্ট মিনিস্টার ফলো করি। এই বিষয়গুলোই আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।”

তিনি বলেন, ‘‘ গত এক সাপ্তাহের প্রেক্ষাপটটা যদি ব্যাখ্যা করি, কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে,কত জন আহত হয়েছে, কতজন গ্রেফতার হয়েছে, কত মামলা হয়েছে, কোথায় কোথায় ডিসি পোস্টিং হচ্ছে, কোথায় কোথায় পুলিশ অফিসার পোস্টিং হচ্ছে, কোথায় কোথায় টিএনও পোস্টিং হচ্ছে… এই নির্বাচনে চুরি করার যে প্রকল্প এটা গত এক সাপ্তাহে তথ্য… নির্বাচনে চুরি করা প্রকল্প, ভোট চুরির প্রকল্প অব্যাহত আছে।”

 

‘‘ কোথায় নির্বাচন ছয় মাস পরে। কিন্তু ভোট চুরির প্রকল্প অ্যাকটিভাবে চলছে, গত এক সাপ্তাহে চলছে, গত ছয় মাসে চলছে, তার আগেও চলছে… এটার কোনো পরিবর্তন কেউ দেখতে পারছে না। এজন্য বাংলাদেশে নিরপেক্ষ সরকার ব্যতিত একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। এই ভোট চুরির প্রকল্প ভাঙার একমাত্র পথ নির্দলীয় সরকারের অধীনে। এই আলোচনা এখন সব জয়গায় চলছে। আমাদের আজকের আলোচনায় এগুলো উঠে এসেছে।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৃটিশ হাই কমিশনারের বৈঠকের ‘অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনে’র তাগাদা দেয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে আপনার প্রতিক্রিয়া কি জানতে চাইলে আমির খসরু বলেন, ‘‘এই যে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনে তাগাদা দেয়ার অর্থটা কি? কিছুটা লজ্জা-শরম থাকাটা তো দরকার তাই না।এর বেশি কিছু বলতে চাই না।”

সুষ্ঠু ও অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনে নির্দলীয় যে সরকারের কথা আপনারা বলছেন তাতে বৃটিশ সমর্থন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ তারা সমর্থন তো শুধু গ্রেট বৃটেন না, সারা বিশ্বের প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক দেশগুলো বাংলাদেশে কেনো আসছে, কেনো বার্তা দিচ্ছে, কোনো প্রতিনিধিমূলক, অংশীদারিত্বমূলক, অংশগ্রহনমূলক গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের কথা বলছে? তারা কি অন্য কোনো দেশে যাচ্ছে সাউথ এশিয়াতে … তারা কোথায় যাচ্ছে না।”

‘‘কেনো আসছে? বাংলাদেশে যে নির্বাচন হয় না… এটা কি বলার অপেক্ষা রাখে? তারা যেভাবে কথাগুলো বলছে এটার অর্থই হচ্ছে বাংলাদেশে নির্বাচন হচ্ছে না, বাংলাদেশের জনগন ভোট দিতে পারছে না, জনগন তাদের সংসদ ও সরকার নির্বাচন করতে পারছে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণতান্ত্রিক দেশগুলো নির্বাচন নিয়ে কথাগুলো বলছে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বাংলাদেশে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হতো তাহলে এসব প্রশ্নও উঠতো, আলোচনা হতো না আর বৃটিশ হাইকমিশনারও এখানে এসে এসব আলোচনা করতেন না।”

‘‘ বাংলাদেশের জনগন গণতন্ত্র ফিরে পেতে চায়, তার ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়, তার আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক রাজনীতি, সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পেতে চায়, লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড চায়, জীবনের নিরাপত্তা চায়… এগুলো বিএনপি দাবি নয়, এগুলো এদেশের কোটি কোটি মানুষের দাবি।”

সরকারি দল থেকে বলা হচ্ছে যে, বিদেশীরা নির্দলীয় সরকারের কোনো ধরনের ইন্টারেস্ট ফিল করেনি। কিন্তু আপনারা বলছেন যে, তাদের কর্মকান্ড প্রমাণ করে বাংলাদেশে এরকম সরকারের কথা। এব্যাপারে আপনাদের বক্তব্য কি প্রশ্ন করা হলে আমির খসরু বলেন, ‘‘ নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হলে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া হবে না … এটা কে না বুঝে বাংলাদেশে।”




শেয়ার করুন