২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০২:৪২:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


সিইসি কি বিব্রত ॥ সরে যেতে চান?
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৭-২০২২
সিইসি কি বিব্রত ॥ সরে যেতে চান? প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল/ফাইল ছবি


নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের পাশিপাশি গণমাধ্যমসহ সোস্যাল মিডিয়ায় আলোচনা সমালোচনা বির্তকের ঝড় তুলেছে। আর এতে সরকার পড়েছে বেকায়দায়, লজ্জায়। আবার এমন আলোচনার পাশাপাশি সন্দেহ দেখা দিয়েছে সিইসিও কি বিব্রত, দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চাইছেন?

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নিয়োগ পাওয়ার পর পর প্রথম অবস্থায় তার বেশ কয়েকটি বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের আশা ও দৃঢ়তা লক্ষ্য করেছেন অনেকে। দায়িত্ব পাওয়ার পর বেশ কয়েকটি বক্তব্যে তিনি বলেছেন,  সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেয়াকেই প্রথম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন নবনির্বাচিত এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেছেন,নির্বাচন যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়, সে জন্য আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। তার এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশ্যে কেউ না বললেও ধরে নিয়েছিল যে, এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়ালের আমলে দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে বেশ দায়িত্বশীল থাকবেন। 

মাত্র কয়েকদিন পরেই বির্তক শুরু

আমলাদের মধ্যে বেশ দক্ষ এবং বিচক্ষণ বলে পরিচিত নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল দায়িত্ব নেয়ার কয়েকটিন পরেই শুরু হয় একের পর বির্তক। তিনি এক অনুষ্ঠানে পরামর্শ দিয়েছিলেন রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোটের মাঠ ছেড়ে না দেওয়ার। নির্বাচনকেও একটি যুদ্ধ উল্লেখ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রসঙ্গ টেনে সিইসি বলেছিলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হয়তো দৌঁড়ে পালিয়ে যেতে পারতেন, কিন্তু উনি পালাননি।

রাশিয়ার প্রতিবাদ

কাজী হাবিবুল আউয়াল দায়িত্ব নেয়ার পর এমন বক্তব্য দেশে তো বির্তক হয়েছেই এর জের গিয়ে পরে বিদেশের মাটিতে। সিইসি‘র পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে ইউক্রেনের আলোচিত প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির ‘জেলেনস্কির মতো মাঠে থাকার’ আহ্বান জানানোর কারণে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলেন ঢাকায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত। অবশ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তবে এটি কোনো আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় জানতে চাওয়া হয়নি। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে অন্য একটি বিষয়ে মৌখিক আলাপে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মানটিটস্কি সিইসির ওই বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন।

প্রথম নির্বাচনেই নানান প্রশ্ন

এদিকে আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে প্রধান কমিশনার হিসেবে শপথ নেয়ার পর প্রথম অগ্নি পরীক্ষায় ছিল কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন । সবাই দেখতে চেয়েছিল কেমন আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন তিনি? দেখা গেলো কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিনকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয় ইসি। কিন্তু কুমিল্লা-৬ আসনের এই সংসদ সদস্য তা না মানায় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলে ফেলেন, ইসির কিছুই করার নেই। তার দৃঢ় অবস্থান এখানেই হোচট খায়। এঅবস্থাতেই নির্বাচন সম্পন্ন হলেও ফলাফল ঘোষণার কয়েক মিনিট আগের ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নানান প্রশ্নের সৃষ্টি হয়,যা আজোও সুরাহা হয়নি। বলা হয় এক ফোনেই কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) ভোটের ফলাফল পাল্টে গেছে।  যদিও এমন বক্তব্যকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। কিন্তু তার আরেক বক্তব্য নিয়ে আবারো রাজনৈতিক অঙ্গনে বির্তক দেখা দেয় ।

কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের পাঁচ দিন পর স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে নিয়ে এবার অন্য সুরে কথা বললেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। যা নিয়ে জন্ম নিল নতুন রহস্য। তিনি বললেন,স্থানীয় সংসদ সদস্যকে ইসি এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিতে পারে না, তেমন কোনো ‘নির্দেশ’ ইসিও ‘দেয়নি’। তাহলে এমপি বাহারও কোনো ‘নিয়ম ভাঙ্গেননি’, আর কমিশনও কোথাও ‘ব্যর্থ হয়নি’। আর এসব কিছু বিশ্লেষণ করেই নাগরিক সংগঠন সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন। এসব প্রশ্নের উত্তর জাতি জানতে চায়। জনগণকে তুলে ধরতে হবে।

সর্বশেষ বির্তক

দায়িত্ব নেয়ার পর সর্বশেষ বির্তক শুরু হয়েছে গত কয়েকদিন ধরেই। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে সংলাপে একের পর এক বির্তক শুরু হয়েছে। দেখা যাক এই সিইসি কি কি বললেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরুর দিনেই জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘সব দল সহযোগিতা না করলে আমরা সেখানে ব্যর্থ হয়ে যাব। আপনাদের সমন্বিত প্রয়াস থাকবে, কেউ যদি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায়, আপনাকে রাইফেল বা আরেকটি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াতে হবে। আপনি যদি দৌড় দেন, তাহলে আমি কী করব? ’  

সিইসি‘র বক্তব্যেও প্রতিক্রিয়া : কে কি বলেছেন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের “তলোয়ারের বিপরীতে রাইফেল বা তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ানো” বক্তব্যে বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। নির্বাচন কমিশনের মতো একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান প্রধানের সহিংসতাকে উসকে দেয়ার শামিল এমন আত্মঘাতী ও অপরিণামদর্শী বক্তব্যকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছে সংস্থাটি। এধরনের বক্তব্যে গভীর বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি দায়িত্বশীল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এবং সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রের নির্বাচনসমূহ স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক এবং সবার জন্য সমান ক্ষেত্র নিশ্চিত করার দায়িত্ব তাঁর ওপর ন্যস্ত। 

কিন্তু নির্বাচনে সবার সহযোগিতা চাইতে গিয়ে সম্ভাব্য সহিংসতা প্রসঙ্গে তিনি যে তলোয়ারের বিপরীতে তলোয়ার বা রাইফেল ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছেন- প্রকান্তরে তা সহিংসতাকেই উসকে দেয়। এ ধরনের সহিংসতা সহায়ক বক্তব্য যে কোনো নাগরিকের জন্য যেখানে অপরাধ প্রবণতার দৃষ্টান্ত সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মতো গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদে থেকে জনাব আউয়ালের এমন বক্তব্য আত্মঘাতী, অপরিনামদর্শী এবং অগ্রহণযোগ্য।

কেননা সিইসির এমন বক্তব্য নির্বাচন কেন্দ্রিক পেশী শক্তির ব্যবহার, বুথ দখল কিংবা ভোটারদের ভোট দিতে না দিয়ে জোরপূর্বক বাক্স ভরার যে অরাজকতা বিগত কয়েকটি নির্বাচনকে নামমাত্র আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত করেছে, তাকেই উৎসাহিত করার নামান্তর। টিআইবি আশা করে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাঁর এহেন বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেবেন এবং তলোয়ারের বিপরীতে রাইফেল বা তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ানোর পরামর্শটি প্রত্যাহার করে নেবেন।

বিএনপি যা বললো

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো ক্ষমতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা ২০১৮ সালে নির্বাচনে গেছি, এই প্রত্যাশায় যে- প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, হয়তো বা একটা চেষ্টা করবেন। কিন্তু সেটা তারা করেননি। এ বিষয়ে যে অভিজ্ঞতা, আপনারা কিভাবে আশা করেন যে, আমরা আবারও নির্বাচনের কমিশনের কথা শুনি। তাদের সঙ্গে গিয়ে বসি। কী করবে তারা? তাদের কিছুই করার নেই। তাদের কোনো ক্ষমতা নেই। আর দেশের মানুষ চায় না, এই নির্বাচনের কমিশন এবং সরকারের অধিনে কোনো নির্বাচন হোক। এই কারণে নির্বাচনের কমিশনের কোনো সংলাপ ও আলোচনার বিষয়ে আমরা কোনো মন্তব্যই করি না।’

সরকার যেভাবে বিব্রত

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন, সিইসি‘র এমন ধরনের বক্তব্য সরকারের জন্য মারাত্মক বিব্রতকর। অন্যদিকে এসব বক্তব্য বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক সংস্থাকেও ভাবিয়ে তুলতে পারে। এমনিতেই দেশে সুসাশন  প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে আন্তজার্তিক অঙ্গনে আলোচিত হচ্ছে। তাদের চোখ এখন বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। আর এজন্য এমন স্পর্শকাতর সময়ে সিইসি‘র বক্তব্য ও মুভমেন্ট হাস্যকর হয়ে গেলে সরকারের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় তৈরি করবে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন। তাছাড়া বিএনপি‘র মতো একটি বিরোধী দল দিনের পর দিন বলে আসছে যে বর্তমান সরকার যদি পরিবর্তন না হয় এবং নিরপেক্ষ সরকার যদি না আসে তাহলে এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।  আর এজন্য গত দুটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘সরকারে যদি আওয়ামী লীগ থাকে, তাহলে আপনি যে নির্বাচন কমিশনই দেন- সেই ইসি কখনোই একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না।’ আর এজন্যই এমন সময়ে সিইসি‘র বক্তব্য সরকার তো বটেই খোদ আগামীতে বর্তমান ইসির পক্ষে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন কি করে সম্ভব তা নিয়ে বির্তক চলবেই। 

শেষ কথা, সিইসি কি সরে পড়তে চান?

এদিকে সিইিসি সম্প্রতি দেয়া তার এ ধরনের বক্তব্যের ব্যাপারে ক্ষমা চেয়েছেন তবে একিই সাথে গণমাধ্যমকে দুষছেন বেশ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কেউ তলোয়ার নিয়ে এলে প্রতিপক্ষকে রাইফেল নিয়ে দাঁড়ানোর কথা তিনি কৌতুক করে বলেছিলেন। তবে তিনি এ বক্তব্যের জন্য অনুতপ্ত। এ জন্য তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন। ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে সংলাপের সমাপনী বক্তব্যে সিইসি ওই দলকে এসব কথা বলেন।

এ সময় সিইসি গণমাধ্যমকেও দোষারোপ করেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যম বুঝে, না বুঝে আর ওই বক্তব্য প্রচার করে তাঁর মর্যাদা ক্ষুন্ন করে দিয়েছে। তিনি যদি ’মিন’ করে এ বক্তব্য দিতেন, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোকে অস্ত্র সংগ্রহ করতে বলতেন।  তবে এর আগে এসব গণমাধ্যমে এসব খবরের প্রতিক্রিয়ায় সিইসি বলেছিলেন আজকে যদি বিদায় হতে পারতাম, ভালো লাগত। নির্বাচনের মাঠে কেউ তলোয়ার নিয়ে এলে তাকে মোকাবিলায় বন্দুক নিয়ে দাঁড়ানোর পরামর্শ কৌতুক ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) । তবে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘আজকে যদি বিদায় হতে পারতাম, ভালো লাগত।’

রেবাবারের পরের দিন সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে সংলাপে সিইসির তলোয়ার -বন্দুক নিয়ে বক্তব্যের বিষয়টি তোলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। এ সময় সিইসি হাবিবুল আউয়াল এসব কথা বলেন। হতাশার সুরে তিনি বলেন, ‘আজকে যে অবস্থা, আজকে যদি বিদায় হতে পারতাম, ভালো লাগত। আমি মিডিয়ার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।’ কিন্তু তার এমন বক্তব্যে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সিইসি‘কি নিজেই নিজের বক্তব্যে বিব্রত হয়ে গেছেন। লজ্জায় পড়ে গেছেন। তাই এমন কথা বললেন যে-‘আজকে যদি বিদায় হতে পারতাম, ভালো লাগত‘। এসময় হাবিবুল আউয়াল আরো বলেন, ‘একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের একটুকু জ্ঞান নেই? 

এই কথাটি সত্য হলে, আমি তো আর্মস অ্যাক্টে লায়াবল। পুলিশ আমাকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাবে। বুঝতে হবে, এটা অন্তর থেকে বলা হয়েছে, না কৌতুক করে বলা হয়েছে। দেশের পেপারগুলোতে প্রধান খবর। একটা মানুষকে নামিয়ে দেওয়া। এরপর তো আর কাজ করার মনোবলও থাকে না। ইচ্ছাও করে না।’ তার এসব মন্তব্যে আরো জোরালো ভাবে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- তাহলে কি এমন দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চাচ্ছেন? তাহলো আরো প্রশ্ন তিনি সরে গেলেন না কেনো বা যাচ্ছেনইবা না কেনো? তিনি কি বিবেকের তাড়নায় সরে যেতে চাইছেন? তাহলে সরে যাচ্ছেন না কেনো? তাকে কি এই থাকার জন্য কেউ চাপ দিচ্ছেন? কিন্তু আবার পরের দিন ক্ষমা চেয়েই বা এমন বক্তব্য দিলেন কেনো? এসব বিষয়গুলিই এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত হচ্ছে। 


শেয়ার করুন