২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০১:৩৩:৩৫ অপরাহ্ন


হাতুরাসিংহে কী মাঠের বাইরেও খেলেন?
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৮-২০২৩
হাতুরাসিংহে কী মাঠের বাইরেও খেলেন? চন্ড্রিকা হাতুরাসিংহে/ফাইল ছবি


বাংলাদেশ ক্রিকেটের সোনালী প্রজন্মের ক্রিকেটার একে একে বিদায় নিচ্ছে। মাশরাফি ক্রিকেটে থেকেও নেই। তামিম আর  মুশফিক টি-২০ ফরমেট থেকে বিদায় নিয়েছে। মাহমুদুল্লাহ টেস্ট থেকে অবসর নেয়ার পর তাকে অনেক ছল চাতুরী করে বাকি দুই ফরমেট থেকেও বাদ দেয়া হলো। বাকি আছে মুশফিক এবং সাকিব। 


তবে বিশাল জনপ্রিয়তা এবং রাজনৈতিক সংযুক্তির কারণে সাকিব দাপটের সঙ্গে টিকে আছে। জানামতে সেরা ক্রিকেট তারকাদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রে নেপথ্যে দাবার গুটির চাল চেলেছে বিসিবির একটি মাফিয়া সিন্ডিকেট এবং ঢাল হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে বেতনভুক্ত হেড কোচ চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহেকে। পাঠকদের হয়তো স্মরণ আছে প্রথম টার্মে বাংলাদেশের কোচ হিসাবে আসার সময় থেকেই হাতুরাসিংহের সঙ্গে ৫ জন সেরা ক্রিকেটার ( মাশরাফি , মুশফিক , তামিম, মাহমুদুল্লাহ, সাকিবের )  শীতল সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। শ্রীলংকায় টি-২০ সিরিজ চলা কালে নাটকীয় ভাবে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিল মাশরাফি। ওই সময় হাতুরাসিংহই ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। হয়তো তিনি নিজে, অথবা কারোর প্রচরণায় মাশরাফিকে কোনঠাসা করা হয়েছিল বলেই প্রকাশ পায়। 


তখন মিডিয়ায় আলোড়ন উঠলেও কিছু দিন পর বিসিবির চক্রটি বিষয়টি ম্যানেজ করে ফেলে। যদিও প্রশ্নটি থেকেই যায় যে হাতুরাসিংহে কী মাঠের বাইরেও খেলেন? নাকি তাকে দিয়ে খেলানো হচ্ছে! 

অনেকের হয়তো জানা আছে বিসিবির এই চক্রটি একসময় মুশফিকের উপর প্রবল মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছিল। একই অবস্থা সৃষ্টি করে মাহমুদুল্লাহকে টেস্ট ফরমেট থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলো। শেষ পর্যন্ত মাহমুদুল্লাহ জিম্বাবুয়ে সিরিজে সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমান করে অবসর ঘোষণা করে। পরবর্তীতে তাকে টি - ২০ ফরম্যাটের অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হয় এবং এক পর্যায়ে বাদ দেয়া হয়। একই ধরণের অবহেলায় অতিষ্ঠ হয়ে তামিম ,মুশফিক টি -২০ ফরমেট থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়। সর্বশেষ আসন্ন এশিয়া কাপের স্কোয়াড থেকে মাহমুদুল্লাহকে বাদ দিয়ে সিন্ডিকেটের মিশন বাস্তবায়িত হয়। মাহমুদুল্লাহ কাহিনীতে আপাতত হাতুরা -সাকিবের সম্পৃক্ততা থাকলেও মূল নাটের গুরু বিবিবির অশুভ মহল।  

অনেকের জানার কথা, বেশ কিছু দিন থেকেই এশিয়া কাপ এবং বিশ্ব কাপে অধিনায়ক হিসাবে তামিমের স্থানে সাকিবকে দায়িত্ব দেয়ার জন্য বিসিবির মহলের ইঙ্গিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলা হয়েছিল। সাকিব একসময় অধিনায়ক থাকা অবস্থায় ভারতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ -আফগানিস্তান টি-২০ সিরিজে ধবল ধোলাই হয়েছিল বাংলাদেশ। পরবর্তীতে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত একমাত্র টেস্ট ম্যাচেও বাংলাদেশ শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়েছিল। ওই সময় পরিচিত পশ্চিম বাংলার এক সাংবাদিক বন্ধু ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিলো। পরবর্তীতে বাজিকরদের  সঙ্গে যোগাযোগের বিষয় গোপন রাখার কারণে সাজা পেয়েছিলো সাকিব।  সত্য মিথ্যা জানিনা, বাজিকরদের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্দরমহলের কি যোগাযোগ আছে। কিন্তু বিবিবির বিরুদ্ধে সাকিবের নেতৃত্বে খেলোয়াড়েরা যখন বিদ্রোহ করেছিল তখন কিন্তু মৃদু হলেও আওয়াজ উঠেছিল বাজিকরদের সঙ্গে টীম মানাজেমেন্টের কারো কারো যোগাযোগের। 

কিছু দিন আগে বাংলাদেশ ক্রিকেটের কিংবদন্তি রকিবুল হাসান হেড কোচ হাতুরাসিংহের বিষয়ে যে অভিযোগ করেছেন তার যথার্থতা বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। হাতুরা নিজ দেশেই অপাংতেয় হয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। প্রথম টার্মে মাশরাফি, মুমিনুল , বিজয়ের সর্বনাশ করার পর এই টার্মে এসে শুরু থেকেই তামিম, মাহমুদুল্লাহকে টার্গেট করে। তার কারণেই অতিষ্ঠ হয়ে তামিম অবসরের ঘোষণা দেয়।  জানিনা পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত আলাপে তামিম এবং মাশরাফি ক্রিকেটের অন্দর মহলের কথা কতটুকু জানিয়েছে। পরবর্তীতে তামিম চিকিৎসার পর ফিরে এসে অধিনায়ক পদ থেকে অবসর ঘোষনার পর থেকেই আঁচ করেছিলাম জিতে গেলো কুচক্রী মহল।  দেশের স্বার্থ বিলীন করে দিয়ে হলেও মাহমুদুল্লাহকে আর ফিরিয়ে নেয়া হবে না।  

বিসিবিতে কিন্তু বিএনপি জামাত সরকারের আমলের কিছু সুবিধাবাদী বহাল তবিয়তে বহাল আছে। তারা কিন্তু কোচিং স্টাফ নির্বাচন সহ নানা ধরণের আর্থিক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যাপক দুর্নীতি করছে যার ইঙ্গিত অনেকটাই রকিবুল হাসানের টেলিভশন কথনে আছে। এই চক্রের কেউ কেউ বাজিকরদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকলেও বিস্মিত হবো না।

এখন প্রশ্ন হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে দলটি এশিয়া কাপে যদি প্রত্যাশা অনুযায়ী সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হয় তাহলে দায় দায়িত্ব কার? এশিয়া কাপ বা বিশ্বকাপ নিঃসন্দেহে শিশুতোষ টুর্নামেন্ট নয় যে অনভিজ্ঞ বা স্বল্প অভিজ্ঞদের পরীক্ষা করা হবে।  


শেয়ার করুন