৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ০৩:২৮:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


সিএমবিবিএ’র স্মরণকালের সর্ববৃহৎ পথমেলা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৯-২০২৩
সিএমবিবিএ’র স্মরণকালের সর্ববৃহৎ পথমেলা মেয়র এরিক অ্যাডামসকে ফুলেল অভিনন্দন


মহামারি করোনার কারণে বন্ধ ছিল কয়েক বছর। করোনার আগে ব্রুকলীনে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সংগঠন চার্চ- ম্যাকডোনাল্ড বাংলাদেশি বিজনেস এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ব্রুকলিনে ১৩টি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। করোনার কারণে বন্ধ ছিল। এবারে আবারো মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। ব্রুকলিননে সিএমবিবিএ’র মেলা মানেই মানুষের বাড়তি পাওনা, স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। মেলা মানেই বাঙালির ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্য লক্ষ্য করা যায় সিএমবিবিএ’র মেলায়। মেলা অনেকেই করেন কিন্তু ব্যবসায়ীদের মেলার আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। অন্যান্য মেলায় যা দেখা যায় না ব্যবসায়ীদের মেলায় তা দেখা যায়। বিশেষ করে মানুষের উপস্থিতির ক্ষেত্রে এবং আয়োজকদের উপস্থাপনায়। অন্যান্য মেলায় মানুষের উপস্থিতিতে কম থাকলেও বিএমবিবিএ’র মেলায় মানুষের যেন ঢল নামে। বলতে গেলে এটা ছিল এই মৌসুমের শেষ মেলা। সিএমবিবিএ’র এই মেলা ছিল স্মরণকালের সর্ববৃহৎ পথমেলা। এই মেলায় হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছিল। তারা মেলায় এসে অতিথিদের বক্তব্য শুনেছেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীদের সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা দেখেছেন। হেঁটে হেঁটে বিভিন্ন স্টলে গিয়ে পছন্দের পোশাক ক্রয় করেছেন, ছুটিয়ে আড্ডা মেরেছেন, গল্প করেছেন। বাড়তি ছিল র‌্যাফেল ড্রতে প্রথম পুরস্কার গাড়িসহ অন্যান্য আকর্ষণীয় পুরস্কার।

সিএমবিবিএ’র ১৪তম মেলার আসর বসেছিল গত ১৬ সেপ্টেম্বর ব্রুকলিননের বাংলাদেশি অধ্যুষিত চার্চ ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউর উপরে। দিনব্যাপী এই মেলার প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস, বাংলাদেশিদের গর্ব বাংলাদেশি আমেরিকান কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ, ব্রুকলিন বরো ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী এরিক গাঞ্জালেস, অ্যাসেম্বলীম্যান রবার্ট ক্যারাল। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা সিডিপ্যাপ ও আলাগ্রা হোমকেয়ারের প্রেসিডেন্ট ড. আবু জাফর মাহমুদ, মার্ক’স হোম কেয়ারের জিমি, আব্দুস সালাম, কুইন্স ডেমোক্র্যাটি পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এ্যাট লার্জ এটর্নী মঈন চৌধুরী। দুপুরে বেলা বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন সিএমবিবিএ’র প্রেসিডেন্ট আব্দুর রব চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারি, মেলার আহ্বায়ক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মামুন-উর রশীদ, সদস্য সচিব মনিরুল আলম বাপ্পীসহ আমন্ত্রিত অতিথি, কমিউনিটি এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।

মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, নিউইয়র্ক সিটিতে দিন দিন বাংলাদেশি কমিউনিটি বাড়ছে এবং তারা ব্যবসার মাধ্যমে নিউইয়র্ক সিটি তথা আমেরিকার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশি সিটি জব সহ মূলধারায় অংশগ্রহণের আহবান জানিয়ে বলেন, ৯/১১ এর সময় মুসলমানদের অন্যভাবে ট্রিট করা হয়েছে, আনফেয়ার করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক সিটিকে নিরাপদ করার জন্য আমাদের আরো পুলিশ অফিসার প্রয়োজন, আপনারা সেই পদে যোগ দিতে পারেন। তিনি আরো বলেন, নিউইয়র্কের মধ্যে ব্রুকলিননে অপরাধ কম হচ্ছে। ব্রুকলিনন নিরাপদ মানেই পুরো নিউইয়র্ক নিরাপদ।

শাহানা হানিফ আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এখানে আমার বেড়ে ওঠা। অপনারা আমার আত্মীয়। আমি আপনাদের দোয়া এবং সহযোগিতায় প্রথম মুসলিম কাউন্সিম্যান নির্বাচিত হয়েছি এবং ইমিগ্র্যান্টদের স্বার্থেই কাজ করছি। আপনাদের যেকোন প্রয়োজনে আমার অফিস সময় খোলা রয়েছে।

সিএমএমবিবিএ’র মেলা যখন দুপুরে উদ্বোধন করা হয় তখন মেলায় মানুষের উপস্থিতি ছিল কম। বিশাল ব্রুকলিননের চার্চ ম্যাকডোনাল্ড অনেকটা ফাঁকা মনে হচ্ছিলো কিন্তু সূর্য মামা পশ্চিমে হেলার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ মানুষের ঢল নামে। কোথায় যেন তিল ধরার ঠাঁই ছিল না। দেখে মনে এটা বাংলাদেশের কোন অঞ্চল বা এলাকা। ভুলেও কেউ বলবে না- এটা আমেরিকার একটি স্টেট। মেলায় সকল প্রজন্মের বাংলাদেশিরা এসেছেন। তারা এই কঠিন প্রবাস জীবনের একটি দিন আনন্দ- উচ্ছ্বাসে কাটিয়েছেন। মানুষের বাঁধভাঙ্গা উপস্থিতি সিএমবিবিএ’র মেলাকে স্বার্থক করেছে। মেলার উচ্ছ্বাস যেন কোনভাবেই শেষ হচ্ছিলো না। প্রতিটি নামাজের জন্য বিরতি দেয়া হয়। অনেকেই মনে করেছিলেন মাগরিবের নামাজের বিরতির পর মনে হয় মেলা জমবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। চারিদিক অন্ধকার হয়ে যাবার পরও মানুষজন বসেছিলেন। প্রায় রাত টা পর্যন্ত চলে মেলার কার্যক্রম।

মেলায় সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী রিজিয়া পারভীন, বিন্দু কনা, প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুব, শামীম সিদ্দিকীসহ অন্যান্য জনপ্রিয় শিল্পী। মেলার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল র‌্যাফেল ড্রতে গাড়ি পুরস্কার। সেই জিতে নিয়েছেন ব্রুকলিননের এক মহিলা। এ ছাড়াও আরো কয়েক পুরস্কার দেয়া হয়।

মেলায় মেয়র এরিক অ্যাডামস, শাহানা হানিফ, সিপিএ সরোয়ার বি সালাম, সাংবাদিক অভি আজিম, নতুন প্রজন্মের মেধাবী তিনজন ছাত্রছাত্রীকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথি এবং আয়োজকবৃন্দ।

মেলার আহ্বায়ক মামুন-উর রশীদ মেলা স্বার্থক করার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। ধন্যবাদ জানান স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং ব্রবসায়ীদের বিশেষ করে যারা সহযোগিতা করেছেন। সর্বোপরি তিনি ধন্যবাদ জানান মেলায় উপস্থিত মানুষদের।

সভাপতি আব্দুর রব চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাাটোয়ারিও সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আশরাফুল হাসান বুলবুল ও শারমিন রেজা ইভা। মেলা উপলক্ষে সওদাগর নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়।

শেয়ার করুন