ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেছেন, বিদ্যমান সংকট নিরসনে ইসলামী আন্দোলনের মুহতারাম আমীর হযরত পীরসাহেব চরমোনাই যে ঐতিহাসিক শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক প্রস্তাব দিয়েছেন তা বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুবই প্রাসঙ্গিক ও ফলপ্রসূ সমাধান। এই প্রস্তাব মেনে নিলে দেশে আর কোন সঙ্কট থাকার কথা নয়। নির্বাচনের পূর্বেই সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়া এবং চ.জ. পদ্ধতি বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন প্রবর্তন হলে রক্তপাত, মারামারি, হানানহানি বন্ধ হবে। দেশ সংঘাতমুক্ত হবে।
কালোটাকা ও পেশীশক্তি প্রদর্শন বন্ধ হবে। অতন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের পথেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার অপকৌশল বেছে নিয়েছে। নাম ও সাইনবোর্ড সর্বস্ব অখ্যাত কিছু ভুঁইফোড় ও সংগঠনকে নির্বাচন কমিশন দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনের নাটক মঞ্চস্থ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। যা দেশের জন্য একটি অশনিসংকেত। এতে করে দেশে সঙ্কট আরো বাড়বে। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিবে। তিনি বলেন, সরকার পুনরায় ক্ষমতায় যেতে বিদেশে ধর্না দিচ্ছে। ভারতের পর এখন যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এসব দিয়ে কোন কাজ হবে না। জনগণ আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় যেতে দিবে না।
তিনি বলেন, ভোটাধিকার উদ্ধারের আন্দোলনরত বিরোধী দলসমূহের কর্মসূচির মধ্যে পুনরায় সরকারি দল কাউন্টার কর্মসূচি দিয়ে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। বিরোধী দলের কর্মসূচিতে পুলিম ও আওয়ামী লীগ একসাথে হামলা করছে। তিনি সরকারকে ক্ষমতায় মোহে অন্ধ না হয়ে গণদাবী মেনে নেয়ার আহ্বান জানান।
বুধবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে কিশোরগঞ্জের শহীধ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন, অথর্ব প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ ও ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন, দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি রোধ করে জনদুর্ভোগ লাঘবের দাবীতে অনুষ্ঠিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জনসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, আইনজীবী নেতা এডভোকেট বিল্লাল আহমদ মজুমদার। সংগঠনের জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা প্রভাষক আলমগীর হোসেন তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী মোহাম্মদ রোকন উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত জনসভায় জেলা নেতৃবন্দ এবং সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার দেশের বিচার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সব সাংবিধানিক, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে, নাগরিক অধিকার এবং মানবাধিকার হরণ করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করছে। বেশিরভাগ আইন সরকারের সুরক্ষার জন্য করা হচ্ছে, নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য নয়। সরকারের মন্ত্রীরা প্রতিদিন যেসব বিদ্বেষমূলক, প্রতিহিংসা পরায়ণ, বিরোধী মত দমনের বক্তব্য দেন, সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা হওয়া উচিত। সরকার এখন আর রাজপথে মোকাবিলা করতে পারে না। তারা বিরোধী মতকে দমন করার জন্য বিচার বিভাগকে হাতিয়ার বানিয়েছে। বিচার বিভাগসহ সবকিছুকে এই সরকার দলীয়করণ করেছে। তাই এই সরকারকে পরিবর্তন করতে হবে। তিনি বলেন, জাতীয় সরকারের দাবি মেনে নিয়ে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় জনতার রুদ্ররোষে সরকারের করুণ পরিণিতি হতে বাধ্য।
