২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ৬:৩২:৫৬ পূর্বাহ্ন


যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব কী উপেক্ষিত থাকবে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-১১-২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব কী উপেক্ষিত থাকবে


২০১৪ বা ২০১৮ সালের রাজনৈতি, কূটনীতি ও অর্থনীতির সঙ্গে কী মেলানো যাবে ২০২৪? সরল সমীকরণ কী বলে। এ প্রশ্ন বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের যে কেউই বলে দিতে পারবেন। এটা বলতে বড় কোনো বিশেষজ্ঞ হওয়ারও প্রয়োজন নেই। এ তিন প্রেক্ষাপট যদি কেউ মেলাতে সক্ষম হয় তাহলে কোনোভাবেই ২০২৪ এর জাতীয় নির্বাচনের সমীকরণও পেছনের দুই নির্বাচনের মত হওয়ার প্রশ্নই আসে না। 

এমন দৃষ্টিকোনের ব্যাপারে সরকারও যথেষ্ট সতর্ক। যে কোনো উপায়ে নির্বাচনটা সচ্ছ, গ্রহণযোগ্য করতে আপ্রাণ চেষ্টা তাদের। কিন্তু অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক একটা নির্বাচনের যদি আয়োজন করতে হয় ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জন্য সেটা কী দলীয় সরকারের অধীনে সম্ভব? এ প্রশ্নেই দ্বিধা-বিভক্ত এখন বাংলাদেশ। ক্ষমতাসীন দল ও তাদের মিত্ররা বলছেন, অতীতে যদি কিছু গ্যাপ থাকে, সেটা আগামী সনে শতভাগ পূরন সম্ভব। আর বিরোধী পক্ষ যেমনটা বিএনপি ও তাদের মিত্ররা স্পষ্ট জানাচ্ছেন মোটেও সম্ভব না। কারণ হিসেবে তারা তুলে ধরছেন ২০১৪ ও ২০১৮ এর রেফারেন্স। সেবারও ক্ষমতাসীনরা বলেছিল, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের। কিন্তু সেটা হয়নি। তাহলে তারা কিভাবে ২০২৪ সালে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে। 

এমন প্রেক্ষাপটেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফর্মুলা- বাংলাদেশের শীর্ষ তিন দল মিলে সংলাপ হোক এবং সেটা শর্তহীনভাবে। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে স্পষ্ট বলা হয়, সংলাপের সময় এখন আর নেই। পক্ষান্তরে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া অমন প্রস্তাবনা পাশ কাটিয়ে পরের দিন তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৭ জানুয়ারি ২০২৪ দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। 

তাহলে প্রশ্নটা উঠতে পারে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব কী উপেক্ষিত থাকলো? পাত্তা পেল না এমন প্রস্তাব। আবারও ক্ষমতাসীন দল ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মত একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান করে ফেলবে- এ প্রশ্নটা এখন দেশ বিদেশের সর্বত্র। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাইলে আমাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে পারে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন উক্তি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এমন উক্তিটাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এরপরও সেই মার্কিন যুুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবনা পাশ কাটানোর সাহস ও শক্তি দেখানোর যোগ্যতা বাংলাদেশের সরকার পরিচালনা করা আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার রয়েছে বলেই সেটা দেখাচ্ছেন- এটাই বাস্তবতা। 

কিন্তু এর বিপরীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী অন্য কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেন- এটাও অনেকের শঙ্কা। কিন্তু কী হবে এ দুশ্চিন্তা সর্বত্র। কেন যেন বাংলাদেশের নির্বাচনের ইস্যুটা আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত। যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ এদের মিত্রদের প্রত্যাশা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়ার সঙ্গে মিলে একাকার। সেখানে এমন নির্বাচনটা তো আলোচিত হবেই। 

ভয়েস অব আমেরিকা 

এ ব্যাপারে ভয়েস আমেরিকা সদ্য একটা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইস্যুটাকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছেন, জানুয়ারিতে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীদেরকে দিয়ে বাংলাদেশের জেলখানা দ্রুতই ভরে ফেলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত মাসেই রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গণহারে খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তারের মামলাগুলো প্রামাণ্য আকারে উপস্থাপন করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। ব্লেকনার আরও বলেন, বিরোধী দলের সদস্য, সমালোচক এবং মানবাধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের চলমান পর্যায়ক্রমিক দমনপীড়নের ফলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। অনলাইন ভয়েস অব আমেরিকায় প্রকাশিত এক রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে। 

এতে আরও বলা হয়, বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ আছে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। গত বছর থেকে এবারের জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য দেশগুলো। 

সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয় যে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপে ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছে তারা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার পর বিএনপি এবং তার মিত্ররা অব্যাহতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করছে। সরকারের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরোধী দলের বিরুদ্ধে চালানো দমনপীড়নে প্রতিদিনই বিরোধী দলের কয়েক শত নেতা ও কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। 

একই রিপোর্টে ঢাকাভিত্তিক গণতন্ত্রপন্থী গ্রুপ ’সুশাসনের জন্য নাগরিক’ বা সুজনের প্রতিষ্ঠাতা বদিউল আলম মজুমদারকে উদৃত করে লিখেছে, তিনি বলেন, আরেকটি একপক্ষীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন, সংজ্ঞা অনুযায়ী নির্বাচনে বিকল্প প্রার্থীদের, যারা হবেন তুলনীয়, তাদের মধ্য থেকে ভোটাররা তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে বেছে নেবেন। ভোটার স্বাধীনভাবে প্রার্থীকে বাছাই করবেন। আমাদের বাংলাদেশের নির্বাচনে দুটি বড় তুলনীয় ব্রান্ড আছে। তারা হলো আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। ভগ্নাংশ বা কিংস পার্টিগুলোর অংশগ্রহণ সত্ত্বেও এই দুটি দলের মধ্যে একটির অনুপস্থিতিতে একতরফা নির্বাচনে মূল্যবান প্রার্থীকে বেছে নেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন ভোটাররা। এমন চর্চায়, কে বিজয়ী হবেন তা প্রায় পূর্বনির্ধারিত। একে একটি খাঁটি নির্বাচন বলা যায় না।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ 

২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের ওয়েব সাইটে এক রিপোর্টে লিখেছে- ‘যখন সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গলা টিপে ধরে এবং খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তার, জোরপূর্বক গুম, হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমিকভাবে বিরোধী দল, সমালোচক এবং অধিকারকর্মীদের অক্ষম করে দেয়, তখন একটি অবাধ নির্বাচন অসম্ভব। এ কথা বলেছেন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার। তিনি বলেন, সহিংসতা ও সমালোচকদের জেলে পাঠানোর পরিবর্তে সরকারের উচিত অবিলম্বে রাজনৈতিক গ্রেপ্তার বন্ধের আহ্বান জানানো। একই সঙ্গে এটা পরিষ্কার করতে হবে যে, জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন এবং নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে হত্যাকা-ের ঘটনা সহ্য করা হবে না।’

এতে আরো বলা হয়, ‘অবিলম্বে রাজনৈতিক এবং বেআইনি গ্রেপ্তার বন্ধ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীদলীয় নেতা ও সমর্থকদের টার্গেট করছে কর্তৃপক্ষ। একদিকে যখন বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দিয়ে জেলখানা ভরে ফেলছে কর্তৃপক্ষ, তখন সরকার কূটনৈতিক অংশীদারদের সঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। এতে কূটনৈতিক অংশীদারদের এটা পরিষ্কার করার আহ্বান জানানো হয়েছে যে, এই দমনপীড়নে দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিপন্ন হতে পারে। রিপোর্টে সব সহিংস ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। বলেছে, যেসব ঘটনায় একে অন্যকে দায়ী করছে, তদন্ত করতে হবে তারও। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ লিখেছে, গত ২৮শে অক্টোবর প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র মহাসমাবেশের পর থেকে বিরোধী দলের কমপক্ষে ১০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সহিংসতায় দুই পুলিশ সদস্য সহ নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৬ জন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৫০০ মানুষ। ১৩ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার, ভিডিও ও পুলিশি রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে যে, অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ, খেয়ালখুশি মতো গণগ্রেপ্তার, জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের জন্য দায়ী নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। সম্প্রতি নির্বাচন সংক্রান্ত সহিংসতায় তা বেড়ে গেছে। ২৮শে অক্টোবরের সহিংসতার পর বিএনপি ৩১শে অক্টোবর থেকে ২রা নভেম্বর পর্যন্ত ধর্মঘটের ডাক দেয়। এ সময়ে এবং পরে পুলিশ, বিরোধী দলের সদস্য এবং ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সব পক্ষই সহিংসতা করেছে। বিক্ষোভের জবাবে অনেক ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহার করেছে পুলিশ। কর্তৃপক্ষ বিরোধী দল বিএনপি’র বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ এনে তাদের প্রধান কার্যালয় তালাবদ্ধ করে দিয়েছে। একে ‘ক্রাইম সিন’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। সরকারের সিনিয়র কর্মকর্তারা বিরোধীদলীয় প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে হামলাকে উৎসাহিত করে প্রকাশ্য বিবৃতির মাধ্যমে চলমান সহিংসতাকে উস্কে দিয়েছেন। ৩রা নভেম্বর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যদি তারা কাউকে অগ্নিসংযোগ করতে দেখেন, তাহলে সেই আগুনে তাদেরকে নিক্ষেপ করতে হবে। যে হাত দিয়ে কোনো কিছু পোড়াবে সেই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। বলেন, তাতে যদি তাদের শিক্ষা হয়। 

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ভিডিও এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের রিপোর্ট থেকে দেখা যায়, বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের হুমকি এবং টার্গেট করায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সমর্থকদের মধ্যে সমন্বয়ের প্রমাণ আছে। এটা হতাশাজনক। বিএনপি’র একজন সমর্থক বলেন, পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের কর্মীরা রাস্তায় থাকায় লোকজন বাইরে আসতে ভয় পাচ্ছে। ৪ঠা নভেম্বর ঢাকায় রেকর্ড করা একজন সাংবাদিকের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, দাঙ্গা পরিস্থিতিতে পুলিশের পেছনেই কাঠের লাঠি হাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা স্লোগান দিচ্ছেন, বিএনপি’র একটা করে কর্মী ধরো, ধরে ধরে জবাই করো। আরও স্লোগান দিচ্ছেন, বিএনপি’র পাণ্ডারা রাস্তায় আসার সাহস দেখিও না। আমরা তোমাদের প্রহার করবো।’

হিউম্যান রাইট ওয়াচ আরো লিখেছে- ‘একই রকম দৃশ্য দেখা গেছে- দেশের অন্য অংশগুলো থেকেও। ফেনী থেকে ৪ঠা নভেম্বর স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসিটিভি) ফুটেজে দেখা গেছে, দাঙ্গা মোকাবিলার প্রস্তুতি নেয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাঠের লাঠি হাতে অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ৫ নভেম্বর এক ঘটনার পর ঢাকার তেজগাঁওয়ে যানবাহনের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। এরপরই এ ঘটনার জন্য দায়ীদের সন্ধানে একসঙ্গে সেখানে উপস্থিত হয় পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।’

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ লিখেছে, ‘বিরোধী দলকে মুছে দেয়ার সুস্পষ্ট লক্ষ্য নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যদিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে মুছে দিতে চায়। বিএনপি’র মতে, তাদের ৫০ লাখ সদস্যের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক বিচারের মুখোমুখি। একজন কর্মী হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বলেছেন, গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে কাউকে বাদ দিচ্ছে না। সিনিয়র পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’ 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ লিখেছে, ‘বিদেশি সরকারগুলোর বলা উচিত যে, মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা আছে সরকারের। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ‘এভরিথিং বাট আর্মস’ বাণিজ্য কর্মসূচির প্রধান সুবিধাভোগী বাংলাদেশ। এ ছাড়া জিএসপি সুবিধা প্রয়োগের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ সরকার। এটা করা হলে গার্মেন্টসসহ গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানিতে শুল্ক কমিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু নিয়ম লঙ্ঘনের ফলে এসব কর্মসূচিতে সরকারের বৈধতা প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এর সঙ্গে যুক্ত সুনির্দিষ্ট মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার। সম্প্রতি এ দেশ সফরে এসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কর্মকর্তারা ও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট এসব নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরেছে।’

শেয়ার করুন