২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৪:০৫:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


আ.লীগের সঙ্গেই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-১১-২০২৩
আ.লীগের সঙ্গেই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি


সুবিধাবাদী দলে পুরাদস্তুর নাম এখন জাতীয় পার্টির। দেশের বড় এক ক্রাইসিস-লগ্নে যেখানে বিএনপি ও তাদের সমমনা দল এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলসমূহ বিপরীত অবস্থানে। সেখানে জাতীয় পার্টির অজ্ঞাত পলিসি গ্রহণ করে নিজেদের অবস্থান ঘোলাটে, অস্পষ্ট করে রেখেছে দলটি। কোন পক্ষে তারা সেটা এখনো পরিষ্কার হতে পারছে না কেউই। বিএনপি-আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ধরে রাখা ও ক্ষমতায় যাওয়া নিয়ে যেখানে রাজপথে সোচ্চার, সেখানে জাতীয় পার্টি বরাবরের মতো বিবৃতি ও গৃহের অভ্যন্তরে বসে রাজনীতিটা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই এটাকে দলটির রাজনৈতিক সুবিধাবাদ কৌশল হিসেবেই বর্ণনা দিচ্ছেন। কারণ জাতীয় পার্টি সব সময় সরকারি দলের পাশাপাশি থাকতেই সাচ্ছন্দবোধ করে আসছে। এবারও যেহেতু দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা, তাই তারা নিশ্চুপ এবং অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবেন বা সিদ্ধান্ত নেবেন বলেই জানান দিচ্ছে। 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যখন সরকারের থেকে তাদের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তেমনি মুহূর্তে সংসদে স্বেচ্ছায় বিরোধীদলের আসনে উপবিষ্ট দল জাতীয় পার্টি পুরাপুরি আস্থা রাখতে পারছে না আওয়ামী লীগের ওপর। 

গত ৪ নভেম্বর দলটির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের এমপি ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গেই আছি। কী হবে, তা এখনো কেউ জানে না। যদি নির্বাচন হয়, তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। যতক্ষণ ঘোষণা না দিয়ে চলে যাব, ততক্ষণ আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে আছি। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। নির্বাচন যদি সঠিকভাবে হয়, তবেই আমরা অংশ নেবো। যদি আমরা মনে করি, সঠিকভাবে নির্বাচন হচ্ছে না, তখন আমরা ঘোষণা দিয়েই নির্বাচন বর্জন করবো। ঘোষণাটা আমাদের তরফ থেকেই আসতে হবে। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। নির্বাচন নিয়ে কোনো একক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। প্রকাশ্যে ঘোষণা দেওয়া হবে। গণমাধ্যমের সামনে ঘোষণা দিয়ে বলা হবে, এই কারণে আমরা নির্বাচন করছি বা করছি না।

এদিন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে নিজের লেখা ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র সোনার পাথরবাটি’ দ্বিতীয় খ- এবং 'MISERIES OF MISCONCEIVED DEMOCRACY' Volume-2, বই দুটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে জি এম কাদের এসব কথা বলেন। 

জি এম কাদের আরো বলেন, দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তো আমাদের লোক, আমরাই বানিয়েছি। তারা কোনো ভুল করলে অবশ্যই আমরা বলবো। কথা বললেই শাস্তি পেতে হবে? সেজন্য আইন করা হবে? আমি ভুল বলতে পারি, কিন্তু আমার বলার অধিকার তো আছে। আমরা যেন কথা বলতে না পারি, সেজন্য আইন করা হচ্ছে। সরকার হচ্ছে কেয়ারটেকারের মতো, ভুল করলে পরিবর্তন করতে চাইব না? বাংলাদেশের মানুষের এই অধিকার এখন আর নেই। 

এ সময় উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যানসৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, সিনিয়র সাংবাদিক সফিকুল করিম সাবু, শাহজালাল ফিরোজ, বইয়ের প্রকাশক আবুল বাশার। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, এস এম আব্দুল মান্নান, শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সুনীল শুভ রায়, এস এম ফয়সল চিশতী, হাজি সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এ টি ইউ তাজ রহমান, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সোলায়মান আলম শেঠ, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আখতার এমপি, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল আলম রুবেল প্রমুখ। 

রওশন এরশাদ 

এর আগে গত ২ নভেম্বর জাতীয় সংসদে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ বলেছেন, রিজার্ভ সংকট দেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করেছে। রিজার্ভ সংকট ক্রমাগত বাড়ছেই। ডলার সংকটে ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনীয় পণ্য ও উপকরণ আমদানি করতে পারছেন না। এ সংকট থেকে উত্তরণে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ এবং ২৫তম অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, আমরা একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে চলছি। এ সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনই ক্ষমতা পরিবর্তনের একমাত্র পথ। তবে এ নির্বাচন অবশ্যই অবাধ ও সুষ্ঠু হতে হবে। সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচন অবশ্যই সংঘাত-সহিংসতামুক্ত হতে হবে।

শেয়ার করুন