২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৬:৩৯:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


বিএনপি আওয়ামী লীগে বিপরীতমুখী চিত্র
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-১১-২০২৩
বিএনপি আওয়ামী লীগে বিপরীতমুখী চিত্র


বাংলাদেশে বাজছে এখন নির্বাচনী দামামা। আপামর মানুষ এ নির্বাচনে জেগে ওঠেনি। কারণ চিরাচরিত নির্বাচনের মাঠে একদিকে আওয়ামী লীগ অন্যদিকে বিএনপি। এ চিত্র দেখে আসছে মানুষ। উপভোগও করেছে। সরগরম ভোটের মাঠ। তুমুল উত্তেজনা। কে জিতবে সে বিশ্লেষণ। এখন সেটা নেই। মাঠে নেই বিএনপি দেড় যুগ ধরে। একচেটিয়া মাঠ দখল করে আসছে আওয়ামী লীগ। তরুণ প্রজন্মের অনেকে সেই পুরোনো চিত্র দেখেনি। তারা অনুধাবনে ব্যর্থ সে পরিস্থিতির কথা। তবে এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি মানেই সফলতা। বিএনপির অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার যুদ্ধে জয়ী হলেই নিশ্চিত সে জয়ী। সেটা যে পর্যায়ের হোক-এটা রীতি। জাতীয় নির্বাচনে এ রীতিতে নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই তুমুল উত্তেজনা তাদের মধ্যে। চলছে প্রতিযোগিতা নিজ দলের মধ্যেই। এক এক নির্বাচনী এলাকাতে বহু প্রার্থী। কে এমপি হবেন। এখানে যেমন মাঠ পর্যায়ে কাজ করা পরীক্ষিত নেতা রয়েছেন। আবার রয়েছেন হাইব্রিডও। আছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। যারা চাকরি জীবন ত্যাগ করে এবার খায়েশ প্রকাশ করছেন সংসদ সদস্য হবেন। এদের কারণে বিপাকে মাঠ পর্যায়ের নেতা। সেই স্কুল লাইফ থেকে রাজনীতি করে আসা নেতাদের এক সময় বয়স হয় এমপি হওয়ার। সবাই নয়। কিছু মানুষের। কিন্তু হাইব্রিডদের কারণে তারা পিছিয়ে যান। কারণ হাইব্রিডদের প্রচুর অর্থ। মাঠ পর্যায়ের নেতাদের তো সে অর্থ থাকার কথা না। 

এমন শোরগোলের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় নির্বচনে ঢোল বাজছে আওয়ামী লীগ। মনোনয়নপত্র ক্রয়ের পর এবার লবিং। দলের শীর্ষনেতার অনুকূল্য পেতে মরিয়া তারা। কারণ মনোয়নপত্র লাভে যে সুবিধা তা হলো-ইন্টারভিউ বোর্ডে দলের শীর্ষনেত্রীর কাছে ইন্টারভিউটা দিতে পারছেন। সেটা না হলে নেত্রী তো খবরও হয়তো নেবেন না। ফলে নমিনেশন না পেলেও নিজের অবস্থানটা জানান দেওয়ারও একটা মুখ্য সময় এটা। ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যে এখন উৎসবমুখর অবস্থা। ফাঁকে একজন আরেকজনকে টপকাতে কুৎসা রটাতেও ছাড়ছেন না। দলের ক্ষতি, কিন্তু সেদিকে খেয়াল নেই, ব্যস্ত প্রতিপকক্ষকে পেছনে ঠেলা। 

দলীয় সভানেত্রী বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে দলের নেতাকর্মীদের বলে দিয়েছেন, কানা খাড়া যাকেই নমিনেশন দেওয়া হবে, তাকে জিতিয়ে আনতে কাজ করতে হবে। একইভাবে ১৪ দলীয় মহাজোটের অন্য দলগুলোও ব্যস্ত, সিট ভাগ নিয়ে। কটা চাইবেন তারা, ক’টা পাবেন সে দুশ্চিন্তাও আছে। দলের প্রার্থী তো অনেক। এবার কোনটা কোনটা পাওয়া যাবে সে দেনদরবার চলছে। 

বিএনপি ও তাদের সমমনা 

বিএনপিদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না সেটা বহু পুরোনো কথা। তাছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সেই যে তৃণমূল থেকে শীর্ষস্থান পর্যন্ত মামলায় জর্জরিত। ফলে তাদের গন্তব্য আদালতপাড়ায় দৌড়াদৌড়ি। কারো কারো সপ্তাহের প্রতিটি কর্মদিবসে হাজিরা দিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এর বাইরে অনেকে রয়েছেন পালিয়ে। দেখা গেল কেউ জামিন পেয়েছেন, তাকে আবার পুলিশ অন্য মামলায় আটকের প্রচেষ্টায় ব্যস্ত। ফলে বিএনপির নির্বাচন নিয়ে ভাবার সময় নেই। তাছাড়া বাড়ি ছাড়া, সংসার ছাড়া, ঘরছাড়া, ব্যবসা ছাড়া, চাকরিচ্যুত এমন বহু ঘটনায় আক্রান্ত হয়ে ফেরারি লাইফ অনেকের। 

কারাগার, থানা হাজত, আদালত এগুলো তাদের নিত্যসঙ্গী। একরকম মহা ঝামেলায় ব্যস্ত তারা। এদের সামনে এসব ঝামেলামুক্ত হওয়ার যেমন সময় নেই, তেমনি তারা কোনো স্বপ্নও আর দেখতে চান না। কারণ দেড় যুগের ওপরে তারা ক্ষমতাহীন। যার যেখানে সহায় সম্বল ছিল তা-ও অনেকের শেষ হয়েছে, আবার শেষ হওয়ার উপক্রম কারো কারো। 

বিএনপির নেতাকর্মীরা একটা আশার আলো দেখতে ছিলেন বা এখনো দেখছেন, তাহলো মার্কিন ও তাদের মিত্রদের উদ্যোগ। বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তার মাধ্যমে কিছু স্বপ্ন পূরণ। আপাতত সে লক্ষণ ক্ষীণ। ফলে কেন্দ্রীয় নেতারা এখনো যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কারাগারের বাইরে, তাদের দেওয়া নির্দেশনা নিয়ে মাঠে সরব। কারণ হরতাল, অবরোধ কর্মসূচি পালন ছাড়া আর উপায় নেই। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে আপাতত এ কর্মসূচি সফল করতে মগ্ন। যদি কোনো একটা উপায় হয়। ফলে অনেকটা মৃত্যুপুরীর সঙ্গে ফাইট করে এড়িয়ে থাকাদের কাছে নির্বাচন কোনো ইস্যুই নয়। আওয়ামী লীগ ও সমমনারা যখন আরেকটি এক তরফা (বিএনপি ছাড়া) নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে, তখন সেটা চেয়ে দেখা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই তাদের। ফলে দেশের জনপ্রিয় দুই দলের নেতাকর্মীদের এমন চিত্রটা নিয়ে আলোচনা সাধারণ মানুষেরও।

শেয়ার করুন