২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০১:১৮:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অনেক নেতা দেশে যাচ্ছেন নির্বাচন করতে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-১১-২০২৩
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অনেক নেতা দেশে যাচ্ছেন নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন যথাক্রমে মাহফুজুর রহমান, আব্দুস সামাদ আজাদ ও আব্দুর রকিব মন্টু


বাংলাদেশের রাজনীতি বর্তমানে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে এগোচ্ছে। আবারও এক তরফার একটি নির্বাচনের দিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলনে রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক কোনো সমঝোতা বা সংলাপেরও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। উল্টো বিরোধীদলের শীর্ষনেতাদের গ্রেফতার করে জেলে নেওয়া হচ্ছে এবং সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, দুই দলই তাদের লক্ষ্যে অনড়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ দাতা দেশসমূহ নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই বলে আসছে তারা বাংলাদেশে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়। এক্ষেত্রে এগিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সমঝোতাকে টার্গেট করেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে। যারা সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বাধা দেবে তাদের এই ভিসানীতির মধ্যে আনা হবে। এর আগে বিরোধীদলের ওপর দমনপীড়নের কারণে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর স্যাংশন প্রদান করে। কিন্তু তাতে করে বিরোধীদল সভা-সমাবেশ করার অধিকার পায়। কিন্তু রাজনীতির কোনো গুণগত পরিবর্তন দেখা যায়নি। র‌্যাবের ওপরে স্যাংশন দেওয়া পর র‌্যাবের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় পুলিশ এবং সরকারি দলের ক্যাডাররা। ওই পরিস্থিতিতে ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়। তারপরও অবস্থার কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যায়নি। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপিসহ-সমমনা দলের ঢাকা সমাবেশকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিকল্পিতভাবে প- করে দেয়। লাখ লাখ মানুষের সমাবেশটি পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভ-ুল করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের টার্গেট ছিল বিএনপি এবং বিরোধীদলকে অগ্নিসন্ত্রাসী দলে পরিণত করা। যেটা তারা ২০১৪ সালের নির্বাচনের পূর্বে করেছিল। ২০১৪ সালে তাদের পরিকল্পনা বিশ্ববাসী বিশ্বাস করেছিল। এবারও একই পরিকল্পনায় তারা মাঠে নামে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বুমেরাং এ পরিণত হয়। কারণ এবার বিদেশিরা বাংলাদেশে নির্বাচন এবং রাজনীতি নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক ছিল। সেই সতর্কতার কারণেই তাদের হাতে আসল তথ্য চলে আসে। সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশি কূটনীতিকদের ডেকে এনে বোঝানোর চেষ্টা এবং ভিডিও দেওয়া হলেও তারা এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন না করেই নীরবে সবাই চলে যান। সর্বশেষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু শর্তহীনভাবে সব দলকে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই প্রস্তাব না করে আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনারের মাধ্যমে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে। সেই তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগসহ তাদের সমমনা দলগুলো মনোনয়নপত্র বিক্রি করা শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ যেহেতু মনোনয়নপত্র শুরু করে সেহেতু নির্বাচন করতে ইচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতা মনোনয়নপত্র ক্রয় করার জন্য বাংলাদেশে যাচ্ছেন। যেহেতু বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে না সেহেতু বিএনপি এবং বিএনপির কোনো নেতা নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশে যাচ্ছেন না। তাদের সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় রয়েছেন। জানা গেছে, নির্বাচন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতা ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে গিয়েছেন। আবার চলতি সপ্তাহে অনেকে বাংলাদেশে যাচ্ছেন। আবার অনলাইনে নিজেদের লোকের মাধ্যমেও অনেকে মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশে গিয়েছেন বা যাচ্ছেন এমন নেতাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, ডা. ফেরদৌস খন্দকার, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য খোরশেদ খন্দকার, মাহবুবুর রহমান টুকু, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভাপতি মোর্শেদা জামান, দীর্ঘদিনের প্রবাসী এবং বর্তমানে বাংলাদেশ এ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব মন্টু, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, লেখক ও সাংবাদিক সিব্বির আহমেদ, নাজিম উদ্দিন।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দুলাল মিয়া হাজি এনাম জানান, ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া, বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব মন্টু এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন। অন্যরা অবস্থা বুঝে এবং সময়কালে মনোনয়নপত্র ক্রয় করবেন।

অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, দল থেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের কোনো নেতা দলীয় মনোনয়ন পাবেন কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এসেছিল সেই সময় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই সময় তাদের মধ্যে কেউ কেউ নির্বাচনের ইচ্ছা প্রকাশ করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি জানিয়েদিয়েছিলেন প্রবাস থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। তিনি বলেছিলেন, মনোনয়ন পেতে হলে দেশে থাকতে হবে এবং দলের জন্য কাজ করতে হবে। দেশে যারা রাজনীতি করেন তারা দলের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেন তাদের বাদ দিয়ে প্রবাসের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর পরিষ্কার এই কথা শুনে অনেকের ইচ্ছা থাকলেও তা মুহূর্তের মধ্যে বিলীন হয়ে যায়। যে কারণে কেউ কেউ দলের পক্ষে কাজ করার জন্য দেশে যাবেন। তবে দুয়েকটি ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রমও হওয়ারও ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অরেক নেতা বলেন, ইচ্ছা ছিল নির্বাচনে দেশে যাবো, কিন্তু দেখা যাচ্ছে এক তরফার নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনের মাঠে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষই নেই তাই দেশে যাওয়ার কোনো অর্থ হয় না।

শেয়ার করুন