৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ০১:৫১:৫৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


নেতা আছে, কর্মকাণ্ড নেই
জেবিবিএ আছে, কি নেই এটাই বড় প্রশ্ন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৪-২০২৪
জেবিবিএ আছে, কি নেই এটাই বড় প্রশ্ন


জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সংগঠন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন (জেবিবিএ)। বাংলাদেশি পণ্যকে প্রবাসে ব্র্যান্ডিং এবং ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা হয়। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি দুই বছর পর পর এই সংগঠনের নির্বাচন হওয়ার কথা। নির্বাচন এলেই ব্যবসায়ী নেতাদের সক্রিয় হতে দেখা যায়। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য ভুয়া ভোটারও বানানো হয়। এই ভুয়া ভোটার কেন্দ্র করে এই সংগঠন বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত। দুই ভাগে বিভক্ত বললে ভুল বলা হবে। আরো একটি সিকি সংগঠন রয়েছে। জেবিবিএর নামে এখন তিনটি সংগঠন। একটি সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন হারুণ ভুইয়া এবং ফাহাদ সোলায়মান। আরেকটি সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন গিয়াস আহমেদ এবং তারেক হাসান খান। সিকি সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন মাহবুবুর রহমান টুকু। মূলত গত নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এই তিনটি সংগঠনের জন্ম। হারুণ ভুইয়া এবং ফাহাদ সোলায়মানের নেতৃত্বাধীন কমিটি আগে থেকেই বিভক্ত ছিলো। সমঝোতার চেষ্টা করা হলেও শেষ পর্যন্ত সমঝোতা হয়নি। অপর অংশের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে গিয়াস আহমেদ সভাপতি এবং তারেক হাসান খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে অনিয়মের অভিযোগ এনে মাহবুবুর রহমান আলাদা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।

নির্বাচন এলেই তারা সক্রিয় থাকেন। নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দেন। পুরো জ্যাকসন হাইটসে থাকে উৎসবের আমেজ। সেই সঙ্গে শুরু হয় প্রতিহিংসার রাজনীতি। তারা ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা, মসজিদ প্রতিষ্ঠান, এলাকা পরিষ্কার রাখাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর কয়েক মাস তারা সক্রিয় থাকেন। ঝাড়– নিয়ে দাঁড়িয়ে তাদের ফটোসেশনও করতে দেখা যায়। কয়েক মাস পরেই যেই লাউ সে কদু। অর্থাৎ তাদের যেন দায়িত্ব শেষ। নেতাদের দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যায়। তবে দৌড়ঝাঁপ সংগঠনের বা ব্যবসায়ীদের স্বার্থে নয়, নিজেদের স্বার্থে। প্রতিদিন তারা অতিথি হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। হয়তোবা তাদের অর্থেই অনুষ্ঠান হচ্ছে কিন্তু নিজেদের সংগঠনের স্বার্থে তারা উদাসীন। কিন্তু কেন? এই প্রশ্ন সবার। প্রতি মাসের বলতে গেলে তারা পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন কিন্তু জ্যাকসন হাইটসে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি হচ্ছে। তার কোনো প্রতিকার তারা করছেন না। গত ১৫ দিনে জ্যাকসন হাইটসের দুটি প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি হয়েছে। তারা কী তার খবর রাখেন? জেবিবিএর সদস্য সেলিম হারুণের ট্রাভেলস এজেন্সি কর্ণফুলিতে ডাকাতির চেষ্টা করা হয়। পুলিশ আসে, তদন্ত করে কিন্তু তদন্তের ফলাফল শূন্য। ৭৪ স্ট্রিটে একটি সেলফোনের দোকানে ডাকাতরা পিস্তল ঠেকিয়ে দোকানের কর্মচারীদের মারধর করে বিপুল অর্থের মালামাল নিয়ে নিরাপদে পালিয়ে যায়। জেবিবিএর কোনো কর্মকর্তাকে দেখা যায়নি সেই দোকান মালিকের পাশে দাঁড়াতে বা সেলিম হারুণের পাশে দাঁড়াতে। তাহলে লোক দেখানোরবা নেতা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য এই সংগঠন করার অর্থ কী?-এমন প্রশ্ন অনেকের।

প্রতিটি রমজান বা ঈদের জ্যাকসন হাইটসে আলোকসজ্জা করা হতো। কিন্তু গত কয়েক বছর যাবৎ তা দেখা যাচ্ছে না। এস্টোরিয়া ওয়েলফেয়ার সোসাইটির মতো একটি ছোট্ট সংগঠনের উদ্যোগে পবিত্র রমজানে আলোকসজ্জা বা রমজান মোবারক লিখে লিয়ন সাইন লাগানো হয়েছে। ছোট্ট সংগঠনটি যদি আলোকসজ্জা করতে পারে জ্যাকসন হাইটসের এতো ব্যবসায়ী কী তা করতে পারেন না? জেবিবিএ-ও কী এই সুন্দর কাজটি করতে পারে না? জ্যাকসন হাইটসে যারা ব্যবসা করেন বা জেবিবিএর নেতৃত্বে রয়েছেন, তাদের তো অর্থ সংকট নেই, তাহলে তারা কেন পারেন না? এটা কী নেতৃত্বের ব্যর্থতা না অন্য কিছু? অনেক ব্যবসায়ীই প্রশ্ন করেছেন, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারলে নেতৃত্ব নিতে আসেন কেন? রমজানে বা ঈদে একটি লিয়ন সাইন দেখলে বা আলোকসজ্জা দেখলে প্রতিটি মুসলমানের ভালো লাগে, গর্বিত হয়-এই বোধটুকু কী হারিয়ে ফেলেছেন জেবিবিএর নেতারা?

শেয়ার করুন