২০ মে ২০১২, সোমবার, ০৩:১৪:৩০ পূর্বাহ্ন


দেশকে আবুল খায়ের ভূঁইয়া
ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগই যড়যন্ত্র করে যাচ্ছে
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৫-২০২৪
ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগই যড়যন্ত্র করে যাচ্ছে আবুল খায়ের ভূঁইয়া


বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেছেন, এখন এই আওয়ামী লীগই জোর-জবরদস্তি করে ক্ষমতায় আছে। কিন্তু এভাবে তারা কতদিন টিকতে পারবে? দেশ বিক্রি করে ক্ষমতায় আছেন। কাজে ক্ষমতায় থাকার জন্য তারাইতো যড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমেরিকা থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে আবুল খায়ের ভূঁইয়া এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ 

দেশ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি বলেছেন, দেশে রাজনৈতিক দেউলিয়া যারা, তারা আর কিছু বুদ্ধিজীবী অনবরত গিবত গাচ্ছে। অতি বাম আর অতি ডান মিলে সরকার উৎখাতের কাজ করছে। তাদের মূল লক্ষ্য-সরকার উৎখাত। এই যে তিনি বললেন, অতি বাম ডান মিলে আপনারা একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করতে চাচ্ছেন। এবিষয়টিকে কিখাবে দেখেন?

আবুল খায়ের ভূঁইয়া: এটাকে আবার দেখা কি আছে? আমরাতো গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছি। আমরা দেশের জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলন করছি। দুর্নীতিবাজ অর্থলোপাটকারীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। দেশে নব্বই থেকে পচানব্বই ভাগ মানুষ আমাদের আন্দোলনের সাথে আছে। এ সকারের আমলে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। এখানে ভোট কেন্দ্রে মানুষই যায়নি, সেখানে দেখানো হচ্ছে বিপুল ভোটারের উপস্থিতি। তাই এসবের বিরুদ্ধে আন্দোলনেতো ষড়যন্ত্রের কিছু নেই। কিন্তু তিনিই (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) তো বরং যড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আছেন। দেশ বিক্রি করে ক্ষমতায় আছেন। কাজে ক্ষমতায় থাকার জন্য তারাইতো যড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমরাতো মাঠে আছি। জনগণের দাবি নিয়ে মাঠে আছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাতো তারাই ধবংস করেছে। তাদের দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবতো সেদিন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভোট পেয়েছিলেন। কিন্ত ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়ে তাকে পাকিস্তানিরা রাজি হয়নি। তারা কি করলো অস্ত্র প্রয়োগ করে ভোটাধিকারকে অস্বীকার করে হত্যাযজ্ঞ চালানো। পাকিস্তানিারা বাঙালীকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল। সে-ই মুক্তিযুদ্ধ এবং এর চেতনাতো এখন আওয়ামী লীগই অস্বীকার করলো এবং ভুলুন্ঠিত করেছে। এখন এই আওয়ামী লীগই জোরজবদস্তি করে ক্ষমতায় আছে। এভাবে তারা কতদিন টিকতে পারবে? 

দেশ : কিন্তু এটাতো একটা নির্বাচিত সরকার। এরা পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতার ম্যান্ডেট পেয়েছে। 

আবুল খায়ের ভূঁইয়া: প্রশ্নই আসে না। এটা কে বলেছে? কোনো পাগলও-তো বলবে না। এরা নিজের ভোট নিজেই দিয়েছে। এরা কখনো পাঁচ কখনো ১০ কোথায় ২০ ভাহ ভোট কাস্ট করে দেখিয়েছে। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে গণমাধ্যম এগুলো প্রচার করেছে। জনগণতো ঠিকই ভোট কেন্দ্রে যায়নি। 

দেশ: এখন একটা প্রশ্ন কি সরাসরি করা যায় যে এতো কিছুর পরও আপনারা এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করে সফল হননি। এটা কি বলা যায়?

আবুল খায়ের ভূঁইয়া: না সফল হইনি কে বলেছে? ৯০ ভাগ লোক আমাদের আহবানে ভোট দিতে যায়নি। দেশ নেত্রী খালেদা জিয়া, দেশ নায়ক তারেক রহমানের অনুরোধে ৯০ ভাগ লোক ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে যায়নি। এর চেয়ে সফল কোনো ঘটনা পৃথিবির ইতিহাসে আছে নাকি। অনেক সময় নেতা কর্মীলা মিছিং মিটিংয়ে যেতে পারছে না। সরাকারি বাহিনী বেপারোয়াভাবে তাদের ওপর চড়াও হচ্ছে। গ্রেফতার করে, হয়রানি করে। ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ লোক ভোট কেন্দ্রে না গিয়ে তাদের সমর্থন প্রমাণ করে দিয়েছে। জনগণ নিরব সমর্থন দিয়েছে আমাদের নেতার আহবানকে। তাহলে ভোট কেন্দ্রে না যা যাওয়া লোকদের মধ্যেতো আওয়ামী লীগের সমর্থকরাও পড়ে। সেখানে কি আওয়ামী লীগ আছে না? তাহলেতো আওয়ামী লীগই ভোট কেন্দ্রে যায়নি। ৭ জানুয়ারির ভোটে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ভোট দিতে যায়নি।

দেশ: কিন্তু এই যে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে নেতাকর্মীরা গ্রেফতার হলো, প্রাণ গেলো তাদের জন্য আপনার ম্যাসেজ কি?

আবুল খায়ের ভূঁইয়া: জনগণের সত্যিকারের আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হয় না। আন্দোলনের একটা সারে গামা আছে। কিন্তু এই আন্দোলনে ব্যর্থ হবে-সেটা আপনি বলতে পারেন না। একপর্যায়ে গিয়ে আমরা সফল হবো। কিন্তু ব্যর্থতার গ্লানি আমাদের মধ্যে নেই। বাংলাদেশের মানুষ সব আন্দোলনেই সফল হয়েছে। এই সরকারের বিরুদ্ধে আমরা জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে আমরা সফল হয়েছি। আমরা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমরা সভা সমাবেশ বিক্ষোভ মিছিল করেছি। মানুষ বিএনপি সভা সমাবেশে বিভিন্নভাবে অংশ নিয়েছে। তারা কখনো নদী সাঁতড়িয়ে কখনো পায়ে হেটে বিএনপি’র সমাবেশে যোগ দিয়েছে। আমরাতো কাউকে পয়সা দিয়ে সাঁতরাতে বলিনি। পয়সা দিয়েতো স্বতঃস্ফূর্ত জনতাকে সমাবেশে আনা যায় না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ঢাকা শহরে প্রোগাম করেছে। যেখানে বিরিয়ানি খাওয়ার লোক নেই। এগুলোতো বিভিন্ন মিডিয়ায় অপনাদের মাধ্যমেই জেনেছি।

দেশ: কিন্তু এখন তো মিডিয়া খুলইে দেখি বিএনপি’তে দন্দ্ব-কোন্দল...এছাড়া দেখা যায় জোটের মধ্যে অসন্তোষ..

আবুল খায়ের ভূঁইয়া: এগুলো সরকারের বিভিন্ন লোক কিছু লোক গোয়েন্দা সংস্থার লোক লেখায়। বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য, হতাশা সৃষ্টি করার জন্য। আমি যেমন আমার এলাকার মধ্যে আছি এখন। কই কারো মধ্যেতা সেখানে দ্বন্দ্ব দেখিনি। বরং দেখেন আমার এলাকায় গত ৪ মে শনিবারে একটি অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের সভাপতিকে গ্রেফতার করা হয়। তার দোষ গরমে অতিষ্ঠ্য মানুষকে দুধ-শরবত বিতরণ করবে। আমি একটা অনুষ্ঠান শেষে সেখানে আমার যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পথে শুনি এই ঘটনা। এটা কি অমানবিক না? এসরকার কতটা অমানিবক হলে এটা করতে পারে-বলেন..।

শেয়ার করুন