২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৮:৩২:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


সাহসী মিছিলের নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৬-২০২২
সাহসী মিছিলের নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য আত্মবিশ্বাস ও দূরদর্শী পরিকল্পনায় এবং বাঙালি জাতির অদম্য প্রচেষ্টায় তা আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এখন বাংলাদেশকে স্যালুট দিচ্ছে সবাই। স্বপ্নের পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু আমাদের গর্বের সম্পদ, অহংকারের নিদর্শন। এ সেতু আমাদের মর্যাদার প্রতীক, আত্মসম্মানের প্রতীক, কারও কাছে মাথা নত না করে মাথা উঁচু করার প্রতীক, সমতার প্রতীক ও উন্নয়নের প্রতীক। আর এ প্রতীক রচনার বীর ও সাহসী নায়ক সফল রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে জানাই সহস্র সালাম। গত ২৩ জুন সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের ইটজি রেস্টুরেন্টে সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবারের সভাপতি ড. প্রদীপ রঞ্জন কর এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা হাকিকুল ইসলাম খোকন, বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার হোসেন, নূরে আলম জিকো, রমেশ নাথ, জালালাউদ্দিন জলিল, এম এ করিম জাহাঙ্গীর এবং এ কে চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ড. প্রদীপ রঞ্জন কর বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দেশের বৃহত্তম ও প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ২৩ জুন। আওয়ামী লীগের ইতিহাস বাঙ্গালী জাতির গৌরবোজ্জ্বল অর্জন ও সংগ্রামের ইতিহাস। এ দেশের সকল গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল সাহসী মিছিলের নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ৭৩ বছর ধরে আওয়ামী লীগ আছে মানুষের সাথে, মানুষের পাশে গৌরবের সাথে। তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতু, স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন আর  স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। স্বপ্নের বাস্তবায়ন। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এই সেতু মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা সরাসরি যুক্ত। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এই সেতুর উপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ৪২টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে মূল অবকাঠামো তৈরি করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০ মিটার। দেশের দণি ও দণি পশ্চিমাঞ্চলের একুশটি জেলার জনগণের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ও দাবি ছিল পদ্মা সেতুর। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেএী শেখ হাসিনাও বঙ্গবন্ধুর মতোই একজন ভিশনারি লিডার। তিনি পদ্মা নদীর ওপর সেতুর শুধু স্বপ্নই দেখেননি তার বাস্তব দেখতে চেয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে মতায় এসে তিনি পদ্মা সেতুর ওপর সেতু নির্মাণের কাজ হাতে নেন। ১৯৯৮-১৯৯৯ সালে বিশেষজ্ঞ দল দ্বারা সেতুর সম্ভাব্যতা বা ফিজিবিলিটি স্টাডি করান এবং ২০০১ সালের ৪ জুলাই সেতুর ভিওিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত মতায় এসে পদ্মা সেতুর নির্মাণের বাস্তব ও কার্যকর কোনো পদপে গ্রহণ করেনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার মতায় এলে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প পুনরুজীবিত হয়। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপ ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে টেন্ডার আহ্বান করে। পরিকল্পনা ছিল ২০১১ সালের প্রথম দিকে সেতুর কাজ শুরু হবে এবং ২০১৩ সালের মধ্যে মূল সেতুর কাজ শেষ হবে। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের অভিযোগে সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি স্থগিত করলে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন পদ্মা সেতু অবশ্যই হবে। তা নিজস্ব অর্থায়নেই হবে। অন্যের কাছ থেকে হাত পেতে টাকা এনে পদ্মা সেতু করব  না। আমাদের জনগণের টাকায়ই পদ্মা সেতু নির্মিত হবে। 

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল ঘোষণা দিলে তার প্রতিবাদে আমরাই বহিঃবিশ্বে সর্বপ্রথম গত ৮ জুলাই ২০১২ তারিখে নিউইয়র্ক জাতিসংঘ হেড কোয়াটারের সামনে বিরাট বিােভ সমাবেশ করেছিলাম। সেখানে গৃহীত প্রস্তাবগুলি ১) ‘দেশী অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ’ জননেত্রী শেখ হাসিনার এ ঘোষণাকে সমর্থন, ২) দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার রোধে বিদেশে দূতাবাস গুলোতে সেল গঠন, ৩) প্রবাসী বাঙ্গালীরা পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকারের গৃহীত সকল পদপে সহায়তা প্রদানে অঙ্গীকার। এছাড়াও বিশ্বব্যাংক এর প্রেসিডেন্ট বরাবর লেটার ক্যাম্পেইন প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছিল। বিশ্বব্যাংক এর প্রেসিডেন্ট আমাদের লেটার ক্যাম্পেইন উওর দেন।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয় লাভ করে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইস্তেহারে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি ছিল। সরকার গঠন করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ হাতে নেন। তিনি ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে পদ্মা সেতুতে রেলপথ সংযোজনের জন্য নির্দেশনা দেন। তার নির্দেশ মতো সেতুর ডিজাইন বা নকশা পরিবর্তন করা হয়। ওপরে মোটরযান সড়ক এবং নিচে রেলপথ অর্থাৎ দোতলা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। ওপরে চার লেনের মোটরযান সড়ক এবং নিচে একলেনের রেলপথের ব্যবস্থা রেখে নকশা তৈরি হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, শেখ হাসিনার ইচ্ছায়ই বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেলপথ সংযোজিত হয়েছিল। সেতুর নকশা পরিবর্তন এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন ও সময় পেণের জন্য নির্মাণ ব্যয়ের প্রাক্কলনও বৃদ্ধি পায়। ২০১১ সালে প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। ২০১৬ সালে এ ব্যয় গিয়ে দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে মূল সেতু, নদীশাসন, জমি অধিগ্রহণ, দুই পাড়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ, পুনর্বাসন, কর্মীদের বেতনসব মিলিয়ে তৃতীয়বারের মতো পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। প্রকল্পে ৪০০০ কর্মী কাজ করছে। ২০০৭ সালে মার্কিন ডলার ও টাকার বিনিময় হার ছিল ৬৮.৬৫ টাকা। অর্থাৎ এক মার্কিন ডলারের মূল্য ছিল ৬৮.৬৫ টাকা। ২০১৮ সালে এ হার হয় ৮৪.৮০ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি পেলে প্রকল্প ব্যয়ও বৃদ্ধি পায়। এটা একটা স্বাভাবিক প্রবণতা। কাজেই ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে এ কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত না করাই শ্রেয়। তিনি বলেন,  প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা অত্যন্ত সাহসিকতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে যে ঘোষণা দিয়েছিলেন পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নেই নির্মিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য আত্মবিশ্বাস ও দূরদর্শী পরিকল্পনায় এবং বাঙালি জাতির অদম্য প্রচেষ্টায় তা আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এখন বাংলাদেশকে স্যালুট দিচ্ছে সবাই। স্বপ্নের পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু আমাদের গর্বের সম্পদ, অহংকারের নিদর্শন। এ সেতু আমাদের মর্যাদার প্রতীক, আত্মসম্মানের প্রতীক, কারও কাছে মাথা নত না করে মাথা উঁচু করার প্রতীক, সমতার প্রতীক ও উন্নয়নের প্রতীক। আর এ প্রতীক রচনার বীর ও সাহসী নায়ক সফল রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে জানাই সহস্র সালাম।

শেয়ার করুন