০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:২৯:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


জ্যাকসন হাইটসসহ বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার মানুষ
চাঁদরাতে উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভেঙেছে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৫-২০২২
চাঁদরাতে উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভেঙেছে চাঁদরাতে মানুষে ঢল


বাংলাদেশে একসময় চাঁদরাতটি বেশ জনপ্রিয় ছিলো। ঈদের আগের দিন সবাই চাঁদরাত করতো। বাংলাদেশের সেই চাঁদরাতের ঢেউ নিউইয়র্কে এসে পৌঁছেছে। জ্যাকসন হাইটসসহ নিউইয়র্কে যেভাবে চাঁদরাত উদযাপন করা হয় বাংলাদেশে এভাবে চাঁদরাত বর্তমান সময়ে হয় কি-না সন্দেহ রয়েছে। বিশেষ করে জ্যাকসন হাইটসের চাঁদরাত সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। গত ১ মে সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীর উদ্যোগে জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটে রাস্তা বন্ধ করে আনন্দ উচ্ছ্বাসের চাঁদরাত উদযাপন করা হয়। এ ছাড়াও নিউইয়র্কে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস, ওজনপার্ক, ব্রুকলিনসহ অন্যান্য বাংলাদেশি অধ্যুষিত এবং নিয়ন্ত্রিত এলাকায় চাঁদরাত পালন করা হয়। চাঁদরাতের এই সব অনুষ্ঠানে ছিলো হাজার হাজার মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ। বিশেষ করে জ্যাকসন হাইটসের চাঁদরাত ছিলো সবকিছুর ঊর্ধ্বে। এবার প্রথমবারের মতো চাঁদরাতের জন্য পুলিশের অনুমতি নেয়া হয়। অন্যান্য বছর অনুমতি না নিলেও মানুষের উপস্থিতি থাকতো। আনন্দ থাকতো, উচ্ছ্বাস থাকতো, গান-বাজনা থাকতো। সেই সাথে থাকতো আতশবাজি। অনুমতি পাওয়ার পর এবার যেন কোনো বাধাই ছিলো না। পুলিশ উপস্থিতি ছিলো সহযোগিতার জন্য। বাধা না পাওয়ায় এবার ছিলো বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। সন্ধ্যার পর থেকেই নিউইয়র্কের বিভিন্ন এলাকা থেকে জ্যাকসন হাইটসে মানুষজন আসতে থাকে। যদিও দুপুরের পর থেকেই চলছিলো হাতে মেহেদি লাগানো এবং কেনাকাটার বিষয়টি।

পুলিশ প্রিসেক্টের পক্ষ থেকে সন্ধ্যা ৭টা থেকে নাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেয়া হয়। এই অনুমতি নিয়েছিলেন জ্যাকসন হাইটস বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ সোলায়মান। কিন্তু অনুষ্ঠানটিকে সর্বজনীন করতে দায়িত্ব দেয়া হয় জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীকে। এই সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিলো তার প্রমাণ পাওয়া যায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীর সভাপতি শাকিল মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলম নমি ও অনুষ্ঠানের সদস্য সচিব মিয়া মোহাম্মদ দুলালের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে লক্ষ করা যায় সৌহার্দ্য সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেবিবিএ’র উভয় অংশের কর্মকর্তারা। উপস্থিত ছিলেন জেবিবিএ’র সভাপতি হারুণ ভ‚ইয়া, অপর অংশের সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ সোলায়মান, অপর অংশের সাধারণ সম্পাদক তারেক হাসান খান, অনুষ্ঠানে গ্র্যান্ড স্পন্সর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূরুল আজিম, অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক দেওয়ান মনির, প্রধান সমন্বয়কারী সারওয়ার খান বাবু, আফতাব জনি, বারী হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট আসেফ বারী টুটুল, কুইন্স ডেমোক্রেটি পার্টি ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মিনা ফারহা, স্থানীয় পুলিশ প্রিসেক্টের কমান্ডিং অফিসার জামিল আল তাহেরি, কবির চৌধুরী জোসি, মোহাম্মদ মানিক বাবু, হোসেন সোহেল রানা, এম রহমান, সাখাওয়াত বিশ্বাস, আলমগীর খান আলম, শামস জনি, মোহাম্মদ সায়েম উল্লাহ, লিটু চৌধুরী, শফি উদ্দিন মিয়া, মামুন মিয়াজি, হাসান জিলানী, মোহাম্মদ মফিজুর রহমান, সোহেল গাজী, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, ম্যাক, শাহ চিশতি, শেখ নোমান পলাশ, দেবাশীষ দাস বাবলু, গোপাল স্যানাল, আমিনুর রশিদ বাবু, ডিউক খান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শাকিল মিয়া, মোহাম্মদ আলম নমি, হারুণ ভুইয়া, গিয়াস আহমেদ, আসেফ বারী টুটুল, ফাহাদ সোলায়মান, তারেক হাসান খান, জামিল আল তাহেরী, অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী প্রমুখ।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরু হয় ও মোর রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ। গানটি পরিবেশন করে প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুব। তার সাথে কণ্ঠ সমস্বরে গেয়ে ওঠেন অতিথি এবং দর্শকরা। এর পর একটানা অনুষ্ঠান চলতে থাকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী কামরুজ্জামান বকুল, আফতাব জনি, শশি, আমানত হোসেন আমান, তৃনিয়া হাসান, ডা. মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। টানা তিন ঘণ্টার এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সাথে হাজার হাজার দর্শক কণ্ঠ মিলান এবং ঈদের খুশিতে ঈদ আনন্দ মেলাকে রঙিন করে তোলেন। রাতে সাড়েটা ১০টায় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হলেও মানুষের উচ্ছ্বাসে তা মধ্যরাত পর্যন্ত গড়ায়। ৭৩ স্ট্রিটে যে যার মতো করে বসে গাইতে থাকেন, আতশবাজিতে পুরো এলাকা আলোকিত করে তোলেন। যদিও আয়োজকদের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছিলো আতশবাজি না করার জন্য। আয়োজকদের সময়সীমার মধ্যে আতশবাজি হয়নি, কিন্তু উচ্ছ্বাস বলে কথা? আনন্দ প্রকাশে বাধা দেবে কে? বাধা ছিলো পুলিশের তারাও বাধা দেননি, এমন উচ্ছ্বাসে বাধা দেয়ার মতো পুলিশ নিউইয়র্কে নেই। আনন্দের ভাগিদার তারাও ছিলো। তরুণ প্রজন্মের উন্মাদনায় পুরো জ্যাকসন হাইটস এলাকা যেন থমকে দাঁড়িয়ে ছিলো। করোনার পর এমন অনুষ্ঠান আর হয়নি। জয়তু জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী।

শেয়ার করুন