০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১১:২২:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


রহস্যে ঘেরা কূটনীতিকদের নিরবতা
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-১১-২০২৩
রহস্যে ঘেরা কূটনীতিকদের নিরবতা বক্তব্য রাখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন


রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গত ৩০ অক্টোবর সোমবার বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের ব্রিফ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বিএনপি’র সমাবেশ ঘিরে রাজধানী ঢাকায় যে সহিংসতা হয়েছে, তা বিদেশি কূটনীতিকদের জানিয়েছে সরকার। সরকারের দেয়া ব্রিফের পরপরই বিদেশি কূটনীতিকরা কোনো ধরনের প্রশ্ন করেননি। তারা এব্যাপারে বিস্তারিত জানতে আগ্রহীও হননি। আর এসব নিয়ে ঢাকায় গুঞ্জনের শেষ নেই। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন ধরনের খবর। বিষয়টি সরকারেরর বিভিন্ন মহলেও প্রভাব ফেলেছে, তাদেরকে করছে বিব্রত। কারো কারো মতে আওয়ামী লীগ এবারে বিদেশী কূটনীতিকদের অতীতের মতো তকমা দিয়ে বুঝ দিতে পারেনি। অথবা এমন নিরবতার পেছনে অনেক বড়ো রহস্য হয়তো কাজ করছে। 

সোমবার বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছে ব্রিফের আয়োজন করা হয়। বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ ঘিরে সহিংসতা এবং পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে একইদিন বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়। ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, কানাডা, ইতালি, জাপান, চীন, ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, স্পেন, সিঙ্গাপুর, রাশিয়া, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিক এবং জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অপর দিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।

কে কি বললেন...

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরে দেখা গেছে যে, ব্রিফের সূচনা বক্তব্যে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘২৮ অক্টোবর যা ঘটেছে, তাতে আমরা মর্মাহত। যদিও অতীতে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার অভিজ্ঞতা থাকায় আমরা অতটা বিস্মিত হইনি। দুঃখের সঙ্গে বলছি, আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম তারা বদলাবে, কিন্তু তারা বদলায়নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ‘শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রার নাম নিয়ে বিএনপি যেসব সংঘাত-সহিংসতা করেছে, তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা দরকার। গত কয়েক দিনে তারা যা করেছে, তার মূল উদ্দেশ্য নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু না হয়। নির্বাচন বানচাল করার জন্য তারা এ ধরনের অপকর্ম করেছে। আমরা সে জন্য বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ডেকেছি। তাঁদের বলেছি, ২৮ তারিখে এখানে কী হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মিথ্যা উপদেষ্টা হিসেবে একজনকে নিয়ে কী কী করা হয়েছে, সেটাও তুলে ধরেছি। সরকার পতনের একদফা দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর শনিবার সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। ২০ শর্তে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ। সেদিন রাজধানীজুড়ে পুলিশ-বিএনপির ব্যাপক সংঘাত ও সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা ঘটে। প্রাণ হারান পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ ও যুবদলের মুগদা থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ডেও নেতা শামীম মোল্লা। প্রায় ৩০ জন সাংবাদিক আহত হন। সংঘর্যের মধ্যে পণ্ড হওয়া সমাবেশ থেকেই গত ২৯ অক্টোবর রোববার সারা দেশে হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। এদিনও দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহন পোড়ানো হয়, প্রাণ যায় তিনজনের। এসময় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সে প্রতিশ্রুতি কূটনীতিকদের কাছে পুনর্ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। তবে তিনি জানান, এ সময় কূটনীতিকেরা কোনো প্রশ্ন করেননি। অন্যদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমরা ২৮ তারিখে যেসব ঘটনা ঘটেছে, ওই দিন তাৎক্ষণিক যেসব ফুটেজ পাওয়া গেছে, সেগুলো বিদেশি মিশনগুলোতে পাঠিয়েছি। আজকে আবার তাঁদের সহিংসতার ভিডিও ফুটেজ, ছবিসহ নানা ডকুমেন্ট দেখানো হয়েছে।’

বিদেশীদের অভিব্যক্তিতে যা বুঝেছে সরকার..

ব্রিফিং নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক যখন সাংবাদিকদের জানালেন যে কূটনীতিকেরা কোনো প্রশ্ন করেননি, তখনই অনেক গণমাধ্যম কর্মীরা কাছে সন্দেহ ঠেকেছে। এসময় বিদেশি কূটনীতিকদের বক্তব্য কী ছিল-জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, তাঁদের অভিব্যক্তি দেখে বোঝা গেছে, তাঁরা এসব (২৮ অক্টোবরে বিএনপি’র সহিংসতা এবং পরবর্তী পরিস্থিতি) দেখে ‘স্তব্ধ হয়ে গেছেন’।

বিদেশীদের অভিব্যক্তি ও কারাগারে ফখরুলের ডিভিশন, ক্রাইম সিন তুলে নেয়া..

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গত ৩০ অক্টোবর সোমবার উপস্থিত বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের অভিব্যক্তি নিয়ে সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া বেশে কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মীর সাথে কথা হয় দেশ পত্রিকার প্রতিনিধির। এতে কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী দেশ প্রতিনিধিকে বলেন, ওই ব্রিফে আসা ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসকে মনে হয়েছে তিনি বিব্রতকর অবস্থার কারণে বেশ শক্ত হয়ে তার আসনটিতে বসে ছিলেন। মনে হয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরে গ্রেফতারের বিষয়টিকে তার কোনোভাবে পছন্দ হয়নি। কেনোনা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এই স্বজ্জন অমায়িক রাজনীতিকের সাথে তার বেশ যোগাযোগ ছিল। এছাড়াও এর পাশাপাশি বিএনপি আরো বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনীতিকের বাসায় বাসায় পুলিশ পাহারা ও তল্লাশির বিষয় পিটার হাসের কাছে পছন্দ হয়নি। একারণে তাকে একধরনের স্থির কিন্তু কঠোরভাব নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় বলে কারো কারো অভিমত।

জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ থাকতে পারে পিটার হাসের। উল্লেখ্য ২৯ অক্টোবর রোববার সকালে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে বিএনপি মহাসচিবকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে তাঁকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে তাকে আগের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাকে আদালতে তুলে পুলিশ কারাগারে পাঠানো আবেদন করেন। তবে বিদেশী কূটনীতিকদের সাথে ব্রিফের পর রাতে খবর বেরোয় যে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আবার দেখা গেছে, বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির ক্রাইম সিন ফিতা তুলে দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার রাত ২টার দিকে এই ফিতা তুলে নেওয়া হয়। যদিও বিএনপি কার্যালয় আগের মতোই তালাবদ্ধ রয়েছে। কার্যালয় ও এর আশপাশে কোনো নেতাকর্মী দেখা যায়নি। কার্যালয়ের দুই পাশেই যথারীতি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

বিএনপি’র পাল্টা কূটনীতিক চাল..

এদিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সোমবার বিকালে বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের ব্রিফ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তার আগেই বিএনপি তার বড় কূটনৈতিক চালটি দিয়ে দেয়। শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে হামলার ঘটনায় সরকার ও পুলিশকে দায়ী করে ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় চিঠি দেয় দলটি সোমবার সকালে। ভাংচুর-হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনার তথ্য-উপাত্তসহ লিখিতভাবে জানিয়েছে দলটি। চিঠিতে বলা হয়, এসব তৎপরতা সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অন্তরায়। দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় তা প্রমাণিত। চিঠির সঙ্গে কয়েকটি সিডি, বেশ কয়েকটি স্থিরচিত্রও দেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়। মহাসমাবেশ ঘিরে সহিংসতা এবং পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ের আগেই এই চিঠি পৌঁছে দেয় বিএনপি। জানা গেছে, কোনো প্রেক্ষিতে অহিংস অবস্থান থেতে বিএনপিকে কঠোর কর্মসূচিতে যেতে হয়েছে চিঠিতে তাও উল্লেখ করা হয়েছে তাতে।  

শেষ কথা

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকে আসলে কি হয়েছে বা সেখানে আসা এসব বিদেশী কূটনীতিকরা কেনোইবা কোনো ধরনের প্রশ্নই করলে না তা-নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। আছে নানান ধরনের আলাপ আলোচনা। কারো কারো মতে, কূটনীতিকরা সরকারের পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন চ্যানেলে আগে ভাগেই তথ্য উপাত্ত ২৮ অক্টোবরের সহিংসতা এবং পরবর্তী পরিস্থিতির সব ধরনের খবর পেয়ে গেছেন। আবার কারো কারো ধারণা সম্ভবত কোথায় আস্থার সঙ্কট তৈরি হয়েছে তাই হয়তো তারা বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে সরকারের দেয়া তথ্য-উপাত্ত চোখ বুজে দেখেছে, তা-ই এনিয়ে উচ্চবাচ্য করেনি। মনে করছে প্রশ্ন করে লাভ নেই। কারো কারো মতে, বিদেশী কূটনীতিকরা হয়তবা সৌজন্যবোধ দেখিয়েছে। আবার কারো কারো কারো মতে বিদেশী কূটনীতিকরা মনে করে, বাংলাদেশের মানুষের এবারের লড়াইটা গণতন্ত্র উদ্ধারসহ সুশাসনের জন্য। তাই তারা প্রশ্ন করে বা কোনো ধরনের মন্তব্য করে বাংলাদেশের জনগণের বিরাগভাজন হন কি-না। এমন ধারণা থেকে বিদেশী কূটনীতিকরা নিরবতা দেখিয়েছে এক ধরনের সম্মান জানিয়েছেন বাংলাদেশের জনগণের প্রতি- এমন ধারণা করছেন অনেকে। 

দেশের সাবেক বর্তমান বেশ কয়েকজন কূটনৈতিক ও দক্ষ আমলাদের বেশ কয়েকজন এই প্রতিনিধিকে দেন আরো অনেক বিশ্লেষণ। তাদের কারো কারো মতে, ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে সরকারের পক্ষ থেকে ব্রিফ করার আগেই ওইদিন সকালে বিএনপি’র পক্ষ থেকে যা যা করার তা করে ফেলেছে। কেননা এসব বিদেশী কূটনীতিকদের সাথে সরকারের ব্রিফটি ছিল বিকালে। আর বিএনপি সকালেই শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে হামলার ঘটনায় সরকার ও পুলিশকে দায়ী করে ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় চিঠি দিয়েছে বিএনপি। সোমবার সকালে ভাংচুর -হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনার তথ্য-উপাত্তসহ লিখিতভাবে জানিয়েছিল দলটি। আর এমন তথ্য-উপাত্ত পেয়ে ওইদিনই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আসা বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা কার্যত নিরবতাকে বেছে নেয়। তারা হয়ত-বা ২০১৪ বা ২০১৮ সালে নির্বাচন নিয়ে সারা দেশে রাজনৈতিক সংহিসতার সাথে ২০২৩ সালটিতে এক কাতারে নিতে পারেনি। ২০১৪ বা ২০১৮ সালে নির্বাচনের পরে সারা দেশে রাজনৈতিক সংহিসতার ভয়াবহ চিত্র সেসময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশী কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরে বোঝানো গিয়েছিল যে এসবের সাথে বিএনপি জড়িত। কিন্তু এবারে হয়তো তাদের সে-ই তকমা গেলানো যাচ্ছে না।

গত সোমবার বিকালে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় প্রতিনিধিদের নিরবতা নিয়ে এমনটাই বিশ্লেষণ করেছেন বিশ্লেষকরা। তাছাড়া ঢাকায় ২৮ অক্টোবর (শনিবার) রাজনৈতিক সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনায় একযোগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ সাত দেশ। তারা সহিংসতা বন্ধ করে অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিতে সব পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করতে আহ্বান জানিয়েছে গত সোমবার। তবে সেই গত সোমবারেই বিকালে বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে সরকারের এমন ব্রিফের পর সব কূটনীতিক একযোগে নিরবতা বা কোনো ধরনের প্রশ্ন করলো না কেনো? কার নেতৃত্বে তাদের এমন নিরবতা- রাজনৈতিক অঙ্গনে সেটিই অনেক বড়ো প্রশ্নবোধক তৈরি করেছে।

শেয়ার করুন