প্রবাস জীবনের সব ব্যস্ততাকে ছুড়ে ফেলে আনন্দ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে হয়ে গেল প্রবাসে অন্যতম পেশাজীবী সংগঠন ইয়েলো সোসাইটি নিউইয়র্ক ইনকের বনভোজন। গত ১৪ জুলাই রোববার লং আইল্যান্ডের সাউথ হ্যাভেন কাউন্টি পার্কে মনোরম পরিবেশে বার্ষিক বনভোজনের আয়োজন করে সংগঠনটি। পৃথিবীর যে প্রান্তেই বাস করুক না কেন, ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের টান উপভোগ করেন বাংলাদেশিরা। সোসাইটির সদস্য, তাদের পরিবারবর্গ এবং কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে নিউইয়র্ক সিটি থেকে ১১৫ কিলোমিটার দূরে ভ্রমণে যায় ইয়েলো পরিবার সদস্যরা। গন্তব্যে পৌঁছে সবাই নয়ন ভরে দেখে নেন প্রাকৃতিক বুকে গড়ে ওঠা বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। তারা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। কয়েক পর্বে সাজানো অনুষ্ঠানে শুরু ছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
সবার উপস্থিতিতে বেলুন উড়িয়ে বনভোজনে উদ্বোধন করেন সোসাইটির সভাপতি মাসুদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ রানা ও পিকনিক উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মাহবুবুল বারি ফেরদৌস। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. শাহ আলম, সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ. আউয়াল ভূইয়া, বুলু মিয়া, গোলাম মহিউদ্দিন, আব্দুস সালাম, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, মো. জহিরুল ইসলাম, আলি আক্কাস, আলতাফ হোসেন, সালমান জাহিদ জুয়েল, শেখ ইলিয়াস হাবিব সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ খান শিবলি, আবওয়াবুল চৌধুরী আরবাব, কার্যকরি কমিটির সদস্য সুদেব চন্দ্র হালদার, শফিউল্লাহ ভূইয়া, মো. হাশেম আলি, মো. আল মমিনুর রশিদ, মো. শামিম চৌধুরী, হাবিবুর রহমান তুহিন, মো. সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক সহ-সভাপতি মো. নূরে আলম খান, আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন মূলধারার রাজনীতিক ও অ্যাকটিভিস্ট এ কে এম নূরুল হক, চ্যানেল আই যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি রাশেদ আহমেদসহ অনেকে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় পার্কের ঝকঝকে সজীব পাতার নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল ইয়েলো পরিবারের সদস্যরা। প্রায় ৮০০ লোকের প্রাণবন্ত উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। দিনব্যাপী বনভোজনে ছিল নানা ধরনের আয়োজন। তবে খাবারের কথা না বললে বনভোজন থেকে যায় অসম্পূর্ণ। সকালে নাশতা, দুপুরে খাবার, বিকেলে ঝালমুড়ি, আইসক্রিম, চা আর পান-সুপারি। আয়োজকদের চেষ্টা ছিল সবার কাছে উপভোগ্য এবং স্বতঃস্ফূর্ত করে তোলা। বলা যায়, সে প্রচেষ্টা সম্পন্নটাই সফল। দুপুরের খাবারের পরই ছিল গানের তালে তালে মহিলাদের বালিশ খেলা, কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সম্মাননা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর র্যাফেল ড্র।
সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. আমিনুল রহমান খোকনের পরিচালনায় এ পর্ব শুরু হয়। এতে সংগীত পরিবেশন করেন কৃষ্ণা তিথি, অমিত কুমার ও তানভীর শাহিন। সবশেষে ছিল র্যাফেল ড্র। এতে গ্র্যান্ড পুরস্কার স্বর্ণালংকার সেটের সৌজ্যন্যে ছিল ইয়েলো সোসাইটির প্রাক্তন সভাপতিবৃন্দ। এছাড়াও ১৫টি আকর্ষণীয় পুরস্কার ছিল। মহিলাদের বালিশ খেলা, মার্বেল, দৌড় প্রতিযোগিতা, রশি টানাটানিসহ বিভিন্ন ইভেন্টে শতাধিক পুরস্কার প্রদান করা হয়। বনভোজনের ব্যতিক্রম ইভেন্ট ছিল মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সম্মাননা সনদ ও পুরস্কার। সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন-আহনাফ আলভী ভূইঁয়া, মেহরাব সারওয়ার বিশ্বাস, অনর্ব রহমান ও লাবিদ রহমান।
সবশেষে ছিল সভাপতি মাসুদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা ও আহ্বায়ক মাহবুবুল বারি ফেরদৌসের সমাপনী বক্তব্যে। তাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় বনভোজনের কার্যত্রুম। দিনশেষে খানিকটা ক্লান্ত হলেও সবাই ঘরে ফিরেছে ভালোলাগা নিয়েই। এ উপলক্ষে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যাবধি যেসব সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের উৎসর্গ করে ‘সম্প্রীতি-১১’ নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়।