ব্রুকলিনের কেনসিংটনে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মসজিদ নুর আল-ইসলামের সামনে এক ব্যক্তি মুখোশ পরে, হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে ইসলামবিদ্বেষী মন্তব্য করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় মুসলিম বাসিন্দা ও রাজনীতিবিদদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ওই ব্যক্তি লাল রঙের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ টুপি ও নিউইয়র্ক জেটস জ্যাকেট পরিহিত অবস্থায় মসজিদের সামনে বারবার হেঁটে বেড়িয়ে নারীদের প্রবেশপথের সামনে অশ্লীল ও অবমাননাকর মন্তব্য করছিলেন।
মসজিদের বোর্ড সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, তিনি মহিলাদের দরজার সামনে গালিগালাজ করছিলেন। শিশুরাও এখানে স্কুলে আসে, আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। মসজিদ নুর আল-ইসলাম গত ২০ বছরে কখনো এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়নি বলে জানিয়েছেন মসজিদের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ইফতেখার। তিনি বলেন, আমরা ভীত। আগে কখনো এমন কিছু ঘটেনি।
নিউইয়র্ক পুলিশডিপার্টমেন্ট (এনওয়াইপিডি) বিষয়টি তদন্ত করছে। ব্রুকলিনের ৬৬ তম প্রিসিক্টের কমান্ডিং অফিসার মসজিদ পরিদর্শনে গিয়ে আশ্বস্ত করেছেন যে তারা নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য যথাসাধ্য ব্যবস্থা নেবেন। নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের সদস্য শাহানা হানিফ এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ব্রুকলিনের মুসলিম সম্প্রদায়কে আতঙ্কিত করার জন্য ঘৃণার রাজনীতি বরদাস্ত করা যাবে না। আমরা মসজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছি। নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নর ক্যাথি হোচুল এক্সে লিখেছেন, এটি একটি ঘৃণামূলক ও আপত্তিকর ঘটনা, যা নিউইয়র্কে কখনোই বরদাশত করা হবে না। কেউ তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে ভয় পাবে, তা আমরা হতে দেব না। নিউইয়র্কের কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের নির্বাহী পরিচালক আফাফ নাশের বলেন, উপাসনার স্থানে এমন বিদ্বেষমূলক আচরণ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আমরা আহ্বান জানাই, তারা যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।
কেনসিংটন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা আশাবাদী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপ এবং কমিউনিটির সংহতি এই ধরনের ঘৃণামূলক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করবে। এই অনভিপ্রেত ঘটনার পর নিউইয়র্কের ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সংহতির বার্তা আরো জোরালো হয়েছে। মসজিদ নুর আল-ইসলামের নামাজিরা আশাবাদী যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দোষীকে শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনবে, আর সমাজের সকল স্তরের মানুষ একসঙ্গে দাঁড়িয়ে ঘৃণার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।