নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামসের পুনর্নির্বাচনী প্রচারে আবারও দুর্নীতির ছায়া নেমে এসেছে। তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইঙ্গিড লুইস-মার্টিন এবং সাবেক স্টেট সিনেটর জেসি হ্যামিল্টনের বিরুদ্ধে একাধিক ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। গত ২১ আগস্ট ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগের কার্যালয় চারটি পৃথক অভিযোগপত্র উন্মুক্ত করে। এ মামলাগুলোতে লুইস-মার্টিন, তার ছেলে গ্লেন মার্টিন ওও, হ্যামিল্টন এবং তিনজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বহু বছর ধরে দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করে সিটি প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে অভিবাসী শেল্টার চুক্তি ও বিল্ডিং পারমিট দ্রুত অনুমোদনের ব্যবস্থা।
লুইস-মার্টিন, যিনি আগে মেয়রের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, তিনি পদত্যাগের পরেও অ্যাডামসের পুনর্নির্বাচনী প্রচারে যুক্ত ছিলেন। এ বিষয়টি ব্যবসায়ী মহল ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে এমন এক সময়ে, যখন তার বিরুদ্ধে আগের একটি দুর্নীতির মামলার তদন্ত চলছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নতুন দুর্নীতির অভিযোগ অ্যাডামসের প্রচারকে আরো দুর্বল করে তুলবে এবং তার জনপ্রিয়তায় ধস নামাবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, অ্যাডামস বর্তমানে তৃতীয় বা চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছেন। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুয়োমোর চেয়ে তিনি পিছিয়ে রয়েছেন।
অন্যদিকে মামদানি বলেছেন, এরিক অ্যাডামস এ শহরের রাজনীতিতে পুরোনো ট্যামানী হলো-স্টাইল দুর্নীতিকে ফিরিয়ে এনেছেন। ইতিহাস নিজেকে পুনরাবৃত্তি করে না, কিন্তু তা ছন্দ তোলে, আর এ দুর্নীতির গল্প যেন সেই পুরোনো ছন্দেরই প্রতিধ্বনি। অ্যাডামস অবশ্য তার বক্তব্যে লুইস-মার্টিন ও হ্যামিল্টনের প্রশংসা করেছেন এবং তাদের নির্ভরযোগ্য ও নিবেদিত কর্মী হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, তার প্রশাসনে ভুল হয়েছে।
এই দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে রয়েছে একটি টিভি অনুষ্ঠানে অতিথি হওয়ার সুযোগ, বিল্ডিং পারমিট ত্বরান্বিত করা এবং নগর সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক সুবিধা প্রদান। প্রসিকিউটরদের দাবি অনুযায়ী, মোট ঘুষের পরিমাণ অন্তত ৭৫ হাজার ডলার। এর আগেও ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে লুইস মার্টিন এবং তার ছেলে একটি আলাদা দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত হন, যার ফলে তিনি পদত্যাগ করেন। এ সাম্প্রতিক ঘটনার পর নিউইয়র্কের রাজনীতিতে উত্তাপ বেড়েছে এবং বিশ্লেষকদের ধারণা, আসন্ন নভেম্বরের নির্বাচনে এর বড় প্রভাব পড়বে।