২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৭:১৩:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


দেশকে সাইমন সাদিক
ভারতের সিনেমা বাংলাদেশে ঢুকছে কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারছি না
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০১-২০২৪
ভারতের সিনেমা বাংলাদেশে ঢুকছে কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারছি না সাইমন সাদিক


সাইমন সাদিক। সাম্প্রতিক শিল্পী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এর মধ্যেই আগামী ২৬ জানুয়ারি শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে তার নতুন সিনেমা। এই দুই বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির 

প্রশ্ন: হঠাৎ শিল্পী সমিতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এর কারণ কি? 

সাইমন সাদিক: এটি একটি প্রতিবাদ। কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে আমাদের দেশে ভারতের সিনেমা ঢুকছে। আমরা এর কোনো প্রতিবাদ করছি না, করতে পারছি না। শিল্প সমিতির দায়িত্বশীল একটি পদে থেকেও আমি যখন এ ব্যাপারে কিছুই করতে পারছি না তখন পদে থেকে কোনো লাভ নেই বলে মনে হয়েছে আমার। এ কারণেই পদত্যাগ করা। 

প্রশ্ন: ‘শেষ বাজি’ আপনার নতুন সিনেমা। এটি নিয়ে প্রত্যাশা কেমন? 

সাইমন সাদিক: একেবারেই ফর্মুলার বাইরে একটি সিনেমা শেষ বাজি। এটি এখন পর্যন্ত আমার একমাত্র সিনেমা, যেখানে কোনো রোমান্টিক গান নেই, মারামারি নেই। গল্পনির্ভর সিনেমা। জুয়ার মতো নেগেটিভ বিষয় পরিবার ও সমাজের জন্য কতটা হুমকিস্বরূপ, সেটাই পরিচালক দেখানোর চেষ্টা করেছেন। আমি আশা করছি দর্শকরা সিনেমাটি ভালোভাবে গ্রহণ করবেন। 

প্রশ্ন: এতে আপনার চরিত্রটি কী ধরনের? 

সাইমন সাদিক: ট্রেলারে দেখেছেন, সে জুয়া খেলায় বিড করে। নিজে খেলে না, অন্যকে দিয়ে খেলায়। টাকা লগ্নি করে। এর পেছনে কারণ কী, সেটা জানতে হলে শেষ বাজি দেখতে হবে।

প্রশ্ন: সিনেমার প্রচার নিয়ে আপনি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কেন? 

সাইমন সাদিক: যিনি এই সিনেমায় লগ্নি করেছেন, তিনি এখন পর্যন্ত এর প্রচারে কিছুই করেননি। এ নিয়ে খুব হতাশার মধ্যে আছি। ঢাকা শহরেই এখন পর্যন্ত পোস্টারের দেখা পাইনি। সিনেমায় যাঁরা লগ্নি করেন, তাঁরা ব্যবসা করার জন্যই আসেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, সিনেমার ব্যবসাটা শিল্পের। সিনেমায় যে কেউ লগ্নি করতে পারেন। তবে লগ্নিকারকদের আমি প্রযোজক বলতে চাই না। সিনেমা ব্যবসায় আসার আগে নিজেকে অবশ্যই শিল্পমনা হিসেবে তৈরি করতে হবে। প্রযোজক অনেক বড় একটি পদ। সিনেমার ক্যাপ্টেন অব দ্য শিপ হচ্ছেন পরিচালক। সেই ক্যাপ্টেনকে নিয়ন্ত্রণ করেন প্রযোজক। পুরো সিনেমা নিয়ে পরিকল্পনা তাঁকেই করতে হয়। এত ঘটা করে একটি সিনেমা নির্মাণ করা হলো, অথচ দর্শক পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য প্রচারের যে ঘাটতি দেখছি, এটা হতাশাজনক। অদ্ভুত রকম বাজে অনুভূতি। এক মাস ধরে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। যোগাযোগও হয়েছে। নানা পরিকল্পনা করেছি। আমি নিজেও দশ রকমের আইডিয়া দিয়েছি। অথচ শুক্রবার সিনেমা রিলিজ, এখন পর্যন্ত রাস্তায় পোস্টার নেই। প্রচারের জন্য একজন শিল্পী কতখানি হাহাকারে ভোগেন, তার জ্বলন্ত প্রমাণ আমি।

প্রশ্ন: কয়েক দিন আগে সিনেমার সংবাদ সম্মেলন হয়ে গেল। সেখানে আপনি যাননি কেন?

সাইমন সাদিক: আমাকে সংবাদ সম্মেলনের এক দিন আগে জানানো হয়েছে। এমনটা কেন হবে? আমি তো তাঁদের সঙ্গে এক মাস আগে থেকে যোগাযোগ করছি। সংবাদ সম্মেলন নিয়েও আমার সঙ্গে আলাপ হয়েছে। পাঁচ তারকা হোটেলে করতে হবে বিষয়টি এমন নয়। কিন্তু একটু ব্যতিক্রমভাবে করা যেতেই পারে। আমাকে বলা হয়েছিল, সুন্দর একটি জায়গায় ভিন্নভাবে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। কিন্তু, হঠাৎ করেই আমাকে আগের দিন রাতে ফোন করে জানানো হয়, আগামীকাল বিকেলে সংবাদ সম্মেলন। এভাবে বললে তো হবে না। আমি হয়তো কমার্শিয়াল নই, তবে প্রফেশনাল।

প্রশ্ন: কিন্তু সিনেমায় শুরু করার আগেই তো এই বিষয়গুলো সুরাহা করা উচিত। 

সাইমন সাদিক: অবশ্যই উচিত। কিন্তু আমার সঙ্গে বারবার কেন এমন হয়, সেটাই বুঝতে পারছি না। এই সিনেমায় সাইন করার সময় আমার প্রথম শর্ত ছিল, প্রচার নিয়ে আলাদা বাজেট থাকতে হবে। প্রযোজক সে সময় আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলেছিলেন, প্রচারের জন্য বিশাল বাজেট রাখা হবে। এ নিয়ে কোনো চিন্তা করবেন না। এই হচ্ছে তার নমুনা।

প্রশ্ন: সেন্সর হওয়ার পর সিনেমাটি নিয়ে অনেক প্রত্যাশার কথা বলেছিলেন। এখন প্রচার নিয়ে আক্ষেপ। শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশা পূরণের ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী? 

সাইমন সাদিক: আমি ভালো একটা কাজ করলাম, কিন্তু দর্শকদের জানাতেই পারলাম না। না জানলে দর্শক কীভাবে যাবেন সিনেমা দেখতে? তবে সিনেমার সবাই খুব ভালো কাজ করেছেন। আমার বিশ্বাস, সিনেমাটি যাঁরা দেখবেন, তাঁদের ভালো লাগবে।

প্রশ্ন: আগামী শুক্রবার আপনার সিনেমার সঙ্গে সিনেমার সঙ্গে আরও দুটি সিনেমা মুক্তির কথা শোনা যাচ্ছে। বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

সাইমন সাদিক: ‘কাগজের বউ’ সিনেমার জন্য শুভকামনা। যে নিয়মের কথা বলছেন, সেই নিয়ম শিল্পী সমিতির করা কোনো নিয়ম নয়। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। যাঁরা নিয়ম বানিয়েছেন, তাঁরাই ভালো বলতে পারবেন। আমি মনে করি, নিয়মের বাইরে কিছু হওয়া উচিত নয়। নিয়ম ভেঙে কেন আমরা কাজ করব। এমন হলে শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাইকে এক হয়ে কথা বলতে হবে।

প্রশ্ন: আপনার বেশ কয়েকটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় আছে। সেগুলোর খবর কী?

সাইমন সাদিক: আগামী মাসে মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘আনন্দ অশ্রু’ মুক্তি পাওয়ার কথা। এতে আমার সঙ্গে আছে মাহিয়া মাহি। এ ছাড়া ‘বাহাদুরি’, ‘গ্যাংস্টার’, ‘জলরঙ’, ‘চাদর’, ‘নরসুন্দর’, ‘নদীর বুকে চাঁদ’-এর কাজ শেষ। আশা করছি ধারাবাহিকভাবে এ বছরই সিনেমাগুলো মুক্তি পাবে।

প্রশ্ন: আপনি এখন ভিন্নধারার সিনেমায় বেশি অভিনয় করছেন। কী কারণ?

সাইমন সাদিক : অভিনয়টাই আমার পেশা। সময়ের সঙ্গে দর্শকের চাহিদা অনুযায়ী গল্পের পরিবর্তন হচ্ছে। শিল্পী হিসেবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে আমাকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। ভিন্নধারার সিনেমায় যুক্ত হওয়ার পেছনে এটাই কারণ।

শেয়ার করুন