০১ মে ২০১২, বুধবার, ০৫:৫২:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে এবার বন্দুকধারীর গুলিতে তিন আইনশৃংলাবাহিনীর সদস্য নিহত ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ


বেনের আলোচনায় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
আমরা যা সৃষ্টি করতে পারি না উন্নয়নের নামে তা ধ্বংস করি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৬-২০২২
আমরা যা সৃষ্টি করতে পারি না উন্নয়নের নামে তা ধ্বংস করি অনুষ্ঠানে সুধীর একাংশ


আমরা যা সৃষ্টি করতে পারি না, উন্নয়নের নামে তা ধ্বংস করি। আমাদের প্রতিবাদের ভাষাও দমন করে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ নদী দখল করে না, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ বন দখল করে না, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ পাহাড় দখল করে না- কিছু ক্ষমতাবান মানুষ তা দখল করছে এবং পরিবেশ নষ্ট করছে। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। সুন্দর জীবনকে ধ্বংস করার ক্ষমতা আমাদের মত কারো নেই। যারা ক্ষমতাসীন তারাই এই কাজগুলো করছে। বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক আয়োজিত ’বাংলাদেশের পরিবেশ: সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ সব কথা বলেন। বেনের প্রতিষ্ঠাতা ড. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সমন্বয়ক রানা ফেরদৌস চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভাপতি গত ১২ জুন সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ প্লাজার কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বেন’র উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, বেন’র বৈশ্বিক সমন্বয়কারী ড. খালেকুজ্জামান, বাপা’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, বাপা সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, বাপা হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল।

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বেনের যুগ্ম সমন্বয়ক ড. ফারুক জামান এবং বক্তব্য রাখেন উদীচী যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস।

অনুষ্ঠানে বেলার নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমরা রাজনীতি করি না, এটা ঠিক নয়, তবে আমরা দলীয় রাজনীতি করি না। আমরা পরিবেশ নিয়ে কাজ করি, আন্দোলন করি। এটা মানুষের অস্তিত্বের সাথে জড়িত। পরিবেশ সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক এজেন্ডা। পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে হলে রাজনীতি করতে হবে। তিনি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বলেন, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ নদীদখল করে না, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ বনদখল করে না, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ পাহাড় দখল করে না- কিছু ক্ষমতাবান মানুষ তা দখল করছে এবং পরিবেশ নষ্ট করছে। আমরা যে সৃষ্টি করতে পানি না, উন্নয়নের নামে তা ধ্বংস করি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে অষ্টম জনবহুল দেশ। আমাদের দেশ নদীমাতৃক দেশ। কিন্তু এখনো আমরা আমাদের নদী, বন এবং পাহাড় রক্ষা করতে পারিনি, তবে এগুলো রক্ষায় আন্দোলন করছি, কথা কলছি। পরিবেশের দিক থেকে বিশ্বের ১৮০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬২তম। তিনি বলেন, সবচেয়ে দুঃখের বিষয়টি হচ্ছে আমরা দূষিত বাতাসের মধ্যে বসবাস করছি। এর ফলে ৫-৭ বছর আমাদের আয়ু কমে যাচ্ছে। এটাকে হালকাভাবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আমরা টাকা ছাড়া ৭ দিন বাঁচতে পারবো কিন্তু বাতাস ছাড়া ৭ দিন বাঁচতে পারবো না। পরিবেশের সাথে সম্পর্ক জীবনের এবং বেঁচে থাকার। তিনি আরো বলেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিবেচনায় বিশ্বের ১৩৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৫তম। সমীক্ষায় এসেছে ঢাকা শহর বসবাসের অযোগ্য একটি শহর। তিনি বলেন, আমাদের চ্যালেঞ্জ অনেক গভীরে। আমাদের দেশে সব কিছুই ঠিকঠাক মতো চলে কিন্তু ঠিকঠাক মতো চলে না। আমাদের মূল সমস্যা রাজনীতি। নির্বাচনের সময় দলগুলো সুন্দর সুন্দর প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন কিন্তু বাস্তবায়নে নাম নেই। বাপার সফলতা হচ্ছে বাপা দেশের ৬৪টি জেলায় আন্দোলন করছে। অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করি। সাধারণ মানুষও প্রতিবাদ করেন কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমাদের প্রতিবাদের ভাষাও দমন করে ফেলা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা দেয়া হয়েছে। এর একটি চাঁদাবাজির। নানা সময় নানা ইস্যু তুলে জাতিকে বিভ্রান্ত করা হয়। টিপ ইস্যু তুলে হট্টগোল বাঁধিয়ে দেয়া হয়। তিনি বলেন, আসলে বাংলাদেশে আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি।

শরীফ জামিল বলেন, আসলে আমাদের আন্দোলন করে যেতে হবে। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী কৌশলগতভাবে আন্দোলন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, গাঙ্গা এবং ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশ তৈরি করেছে। নদী, বন, পাহাড় দখলের কারণে বাংলাদেশে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। কোন কোন জায়গায় মানুষ প্রতিবাদ করছে, আবার কোনো কোনো জায়গায় মানুষ প্রতিবাদ করতে পারছে না। তিনি বলেন, ঢাকার চারপাশের সকল নদীর পানি দূষিত। তাছাড়া আমরা এই শখ করে দেশটা ধ্বংস করছি। ঢাকা চারপাশে এখন নদী নেই। দখলের কারণে নদীগুলো খালে পারিণত হয়েছে। আদালতের রায় পাওয়ার পরও তা মানা হচ্ছে না। যারা রক্ষক আসলে তারাই ভক্ষক।


শেয়ার করুন