২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ১০:৫৪:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


মতবিনিময় সভায় সোনালী ব্যাংকের এমডি
বৈধপথে অর্থ প্রেরণ করলে দেশ ও পরিবার উপকৃত হবে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-১১-২০২২
বৈধপথে অর্থ প্রেরণ করলে দেশ ও পরিবার উপকৃত হবে বক্তব্য রাখছেন সোনালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আফজাল করিম


বৈধপথে অর্থ প্রেরণ করলে দেশ এবং আপনাদের পরিবার উপকৃত হবে। তা ছাড়া সোনালী এক্সচেঞ্জ নতুন অ্যাপস সংযোজন করছে, যাতে করে ঘরে বসেই আপনি সোনালী এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ করতে পারবেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা হচ্ছেন আমাদের সম্পদ। তাদের রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকার রাখছে। যে কারণে সরকারও প্রবাসী বাংলাদেশিদের গুরুত্ব দিচ্ছে। যে কারণে এখন থেকে সোনালী এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ করলে কোনো ফি দিতে হবে না। সাথে রয়েছে আড়াই পার্সেন্ট প্রণোদনা। তা ছাড়া আগে ব্যাংক নিজের জন্য যে কমিশন রাখতো তাও নিচ্ছে না। সুতরাং পুরো অর্থই পাচ্ছেন গ্রাহকরা। গত ২৫ নভেম্বর বিকেলে সোনালী এক্সচেঞ্জ আয়োজিত ‘বৈদেশিক রেমিট্যান্স এবং বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আফজাল করিম এসব কথা বলেন। জ্যামাইকার একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সোনালী এক্সচেঞ্জের সিইও দেবশ্রী মিত্র। সোনালী এক্সচেঞ্জের করপোরেট অফিস ম্যানহাটনের ম্যানেজার শাহাদাত হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সোনালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আফজাল করিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন সোনালী এক্সচেঞ্জের সাবেক সিইও আতাউর রহমান।

বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সোনালী এক্সচেঞ্জের সিইও দেবশ্রী মিত্র। তিনি অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সোনালী এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান ১৯৯৪ সাল থেকেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবা দিয়ে আসছে এবং ইতিমধ্যে সোনালী এক্সচেঞ্জ প্রবাসী বাংলাদেশিদের আস্থার এবং বিশ্বস্ততার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা ১০টি শাখার মাধ্যমে আপনাদের সেবা দিয়ে আসছি। তিনি সোনালী এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বাংলাদেশে অর্থ প্রেরণের আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোনালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আফজাল করিম বলেন, গত দুই বছর করোনা মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশি বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। গত অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন, যা আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখছে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্স আমাদের বাজেটের ৩৩ শতাংশ। যে কারণে বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার প্রবাসীদের স্বার্থে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, আমরা প্রথমত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি বাংলাদেশে সকল ব্যাংক প্রতি ডলারের বিপরীতে ১০৭ টাকা দিতে হবে। সেই সাথে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আড়াই পার্সেন্ট প্রণোদনা দিচ্ছে। নতুন করে সোনালী এক্সচেঞ্জ অর্থ প্রেরণ করতে কোনো ফি নিচ্ছে না। তা ছাড়া সরকারি ব্যাংক যে কমিশন রাখতো তাও রাখছে না। পুরো অর্থই প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বার্থে সোনালী এক্সচেঞ্জ এখন সপ্তাহে ৭ দিনই খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সোনালী এক্সচেঞ্জের সেবা আমরা প্রতিটি বাংলাদেশির দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই। আমরা নতুন অ্যাপস বেরি করছি, যার মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ঘরে বসেই ২ মিনিটের অর্থ প্রেরণ করতে পারবেন এবং অর্থ একই সময় অর্থ উঠাতে পারবেন। এটা সোনালী ব্যাংক গেটওয়ের মাধ্যমে সম্ভব। এই গেটওয়ের মাধ্যমে ৫ সেকেন্ডেই অর্থ চলে যাবে। তিনি আরো বলেন, আমরা সোনালী এক্সচেঞ্জের সেবা আরো বাড়াতে চাই। প্রয়োজনে আমরা আরো এজেন্ট নিয়োগ করার চিন্তা ভাবনা করছি। এ ছাড়া লস অ্যাঞ্জেলেসে নতুন শাখা খোলার চিন্তাভাবনা করছি। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধপথে অর্থ প্রেরণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা হুন্ডির মাধমে অর্থ প্রেরণ করবেন না। সম্প্রতি ব্যাংকের অর্থ এবং রিজার্ভ নিয়ে গুজবের জবাবে বলেন, আপনারা গুজবে বিশ্বাস করবেন না। এখনো আমাদের রিজার্ভ রয়েছে ৩২ বিলিয়ন ডলার, যা রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে ৪ মাস চলবে। তিনি বলেন, গত ৪ মাসে আমাদের গার্মেন্টস এবং রেমিট্যান্সে কোনো প্রভাব পড়েনি। বরং গত বছরের তুলনায় আমরা ভালো অবস্থানে রয়েছি। গত ৪ মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রায় ৭.১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ছিলো। এ ছাড়াও তিনি এনআইডির পরিবর্তে পাসপোর্ট দিয়ে সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সোনালী ব্যাংকের প্রায় ১২৩০টির মতো শাখা রয়েছে। এটিই বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক ব্যাংক।

কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারী এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশ এর বাইরে নয়। এই পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আস্থার সাথে মোকাবিলা করেছেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানান, রেমিট্যান্স প্রবাহ অব্যাহত রাখার জন্য। তিনিও প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধপথে অর্থ প্রেরণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে মাধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে, ২০৩১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবে। এখন আমাদের সকলের উচিত দেশের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিকে ফুলেল অভিনন্দন জানান সোনালী এক্সচেঞ্জ জ্যামাইকা শাখার ম্যানেজার তারানা চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সোনালী এক্সচেঞ্জ জ্যামাইকা শাখার সহকারী ম্যানেজার মনিউর রহমান, ওজনপার্ক শাখার ম্যানেজার কবীর হোসেন, জ্যাকসন হাইটসের ম্যানেহার নবাব হোসেন, সোনালী এক্সচেঞ্জের অ্যাকাউন্টস এন্ড কমপ্লায়েন্স অফিসার নুরুল হক, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী রথীন্দ্র নাথ রায়, শহীদ হাসান, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমেদ, ডা. মাসুদুল হাসান, কুইন্স কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার আহসান হাবীব, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট ওমর ফারুক খসরু, সৈয়দ আল আমীন রাসেল, রাব্বী সৈয়দ, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আমীন জুয়েল প্রমুখ অংশ নেন।

উল্লেখ্য, এমডি মোহাম্মদ আফজাল করিম এক সফরে গত ২৪ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসেন। তিনি এক সপ্তাহের মতো যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করবেন। এসময় সোনালী ব্যাংক ও সোনালী এক্সচেঞ্জের অফিসিয়াল কর্মকা- প্রত্যক্ষ এবং কয়েকটি শাখা পরিদর্শন করবেন। আগামী ২ ডিসেম্বর তার দেশে ফিরে যাওয়ার কথা বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন