২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০২:৩৮:৪০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


নদী প্রবাহ বন্ধ করা ফৌজদারি অপরাধ
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০২-২০২৩
নদী প্রবাহ বন্ধ করা ফৌজদারি অপরাধ


জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ভূমি সচিব ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেছেন, নদী প্রবাহ বন্ধ করা একটি ফৌজদারি অপরাধ। এসব অপরাধ বন্ধে আমাদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে সোনার মানুষ গড়ে তুলতে হবে।  ‘আমাদের কৃষি, প্রকৃতি, জলাভূমির সুরক্ষা এবং নদী দখলদারী প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার এসব কথা বলেন। ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার আরো বলেন, নদী-জলাভূমি-জলাশয় সুরক্ষায় প্রয়োজনে জিআইএস, জিপিএস ব্যবহার করে নদী-জলাশয় চিহ্নিত করে তা উদ্ধার করা সম্ভব। আমাদের স্বচ্ছতার এবং সমন্বয়ে সমস্যা আছে।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি রবিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে এএলআরডি, বেলা, এবং পানি অধিকার ফোরাম এর যৌথ আয়োজনে বিশ্ব জলাভূমি দিবস-২০২৩ উপলক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এএলআরডি’র চেয়ারপারসন খুশি কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন বেলার নির্বাহী প্রধান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, রুলফাও নির্বাহী পরিচালক আফজাল হোসেন, হাওরের নির্বাহী প্রধান সালেহীন শুভ, বিআরডিএস’র নির্বাহী পরিচালক জান্নাত মরিয়ম, পিএসএস নির্বাহী প্রধান মোতালেব সরদার। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন। অপরদিকে হাওরে সরেজমিনে ঘুরে এসে সেখানকার পরিস্থিতি তুলে ধরে অপর একটি উপস্থাপনা দেন এএলআরডি ম্যানেজার-প্রোগ্রাম সানজিদা খান রিপা, এএলআরডি’র প্রোগ্রাম অফিসার মির্জা আজিম হায়দার।  

মূল প্রবন্ধে শেখ রোকন বলেন যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে নদী, খাল, বিল-ঝিল, হাওর, বাওর জলাভূমিগুলো তাদের প্রকৃত রূপ হারাচ্ছে। বাঁধ, রাস্তাঘাট, অবকাঠামো নির্মাণের ফলে পানিপ্রবাহ ও মৎস্যসম্পদের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। এর ফলে নদী, নালা ও বিল হয়ে ঐতিহাসিকভাবে দেশের আনাচে কানাচে যে নৌপথগুলো ছিল, সেগুলোও বিলুপ্ত হয়েছে। এনভায়রনমেন্টাল পারফরম্যান্স ইনডেক্স-২০২২ অনুযায়ী জলাভূমি হারানোর ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ৪৪.৬ নম্বর নিয়ে ১০২তম অবস্থানে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, জলাভূমি ও নদী দখলের একটি দুষ্টচক্র গড়ে উঠেছে বাংলাদেশে। তাৎক্ষণিক লাভের জন্য জলাভূমি ভরাট করে অবকাঠামো নির্মাণ করছে। নদী পথ ব্যাবহার উপযোগী করলে নদীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা জন্মাবে, সে নিজ দায়িত্বেই নদীর দেখভাল করবে।

সানজিদা খান রিপা বলেন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, জীববৈচিত্র্য, কৃষি, মৎস্য, খাদ্যনিরাপত্তাসহ নানাক্ষেত্রে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো জলাভূমি। হাওরের পরিবেশ-প্রতিবেশ ধ্বংসের একটি অন্যতম কারণ হলো বিল সেচ দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত মৎস্য আহরণ করা। মুনাফালোভী মৎস্যজীবীরা চায়না জাল ব্যবহার করে মাছ ধরছে। শুষ্ক মৌসুমে হাওরের খালে, নালায় পানি নেই। এখন বোরো মৌসুমে কৃষকরা সেচ দেওয়ার জন্য পানি পাচ্ছে না। একসময় সুনামগঞ্জে হিজলের বিস্তীর্ণ বন ছিলো। কিন্তু, এই হিজল-করচ বন জ্বালানী কাজে ব্যবহারের জন্য এখন প্রায় বিলীন হওয়ার পথে।

শামসুল হুদা বলেন যে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনগণের কাছে জবাবদিহিতার দায় থাকতে হবে। নদী রক্ষা কমিশনকে আরও সচল ও গতিশীল করার জন্য এই আইন শক্তিশালী করতে হবে। আত্মতুষ্টির বৃত্ত থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের লক্ষে নদী রক্ষা ফোরাম গড়ে তোলা হবে।

এতে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন যে ঢাকার ৫৭ ভাগ জলাভূমি চলে গেছে আবাসন প্রকল্পের কারণে। দেশের বিভিন্ন স্থানে নদ-নদী, জলাভূমি দখল, দূষণ, বালু-পাথর উত্তোলন প্রতিরোধে প্রশাসনের অসহায়ত্ব চোখে পড়ে। যা আমরা সৃষ্টি করতে পারি না তা ধ্বংস করে সুষম উন্নয়ন সম্ভব নয় কোনোভাবেই।

সালেহীন চৌধুরী বলেন, যে হাওরে মানুষের বসতি গড়ে ওঠার পাশাপাশি যান্ত্রিকতা প্রবেশের ফলে সমস্যার শুরু। অপ্রয়োজনীয় বাঁধ তৈরি না করে বড় নদীগুলো খনন করে সমস্যা সমাধানের দিকে আমাদের হাঁটতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে হাওরের ফসল ঘরে উঠলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

শেয়ার করুন