২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৬:৩৩:২৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


সংবাদ সম্মেলনে মইনুল ইসলাম
১১ জুনের ঘটনার নিন্দা ও ভবন ক্রয়সংক্রান্ত তথ্য জানাতে বিশেষ সাধারণ সভা ডেকেছেন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৬-২০২৩
১১ জুনের ঘটনার নিন্দা ও ভবন ক্রয়সংক্রান্ত তথ্য জানাতে বিশেষ সাধারণ সভা ডেকেছেন সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন মইনুল ইসলাম


তথাকথিত এবং অগঠনতান্ত্রিক গত ১১ জুনের সাধারণ সভায় জালালাবাদবাসীকে ন্যক্কারজনকভাবে তল্লাশি এবং সিকিউরিটি কর্তৃক অসভ্য আচরণের নিন্দা জানিয়েছেন এবং ভবন ক্রয়সংক্রান্ত সব তথ্য জালালাবাদবাসীকে জানাতে সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম বিশেষ জরুরি সাধারণ সভা ডেকেছেন। এই সভা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৮ জুন রোববার উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে। গত ১২ জুন সন্ধ্যায় জালালাবাদ ভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ এবং সহ-সভাপতি শাহীন কামালী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মইনুল ইসলাম বলেন, আপনারা অবগত আছেন যে, ১১ জুন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশান অব আমেরিকার সাধারণ সভায় সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক কয়েক জন কর্মকর্তাকে ভাড়াটিয়া সিকিউরিটি গার্ড কর্তৃক চরমভাবে হেনস্তা ও নাজেহাল করা হয়েছে। শুধু তাই নয়। সাধারণ সভায় যোগ দিতে আসা সদস্যদের অনেককে বেছে বেছে তথাকথিত সিকিউরিটি চেকের অজুহাতে সিকিউরিটি গার্ড  দ্বারা নাজেহালও করা হয়েছে। যার ভিডিও আমাদের কাছে রয়েছে। এই লজ্জাজনক ঘটনা জালালাবাদের গত ৩৮ বছরের ইতিহাসে হয়নি।

তিনি আরো বলেন, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকার ইতিহাসে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা নজিরবিহীন। সংগঠনের একজন নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকার একটি নিজস্ব ভবন সব জালালাবাদবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন যা বাস্তবায়নে গত নির্বাচনে আমাদের নির্বাচনী ওয়াদাও ছিল। সেই লক্ষ্যে আমরা গত কমিটির সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান শেফাজের কমিটির লিখিত অনুমোদনের মাধ্যমে এস্টোরিয়ায় জালালাবাদ ভবনটি ক্রয় করি। ভবন ক্রয় এবং পরবর্তী কমিটির নিকট হস্তান্তর প্রক্রিয়ার বিষয়ে যাবতীয় তথ্য আমরা আপনাদের মাধ্যমে ইতিমধ্যে কমিউনিটির সবাইকে অবহিত করেছি। তিনি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, গত ১১ জুনে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় ভবন ক্রয়সংক্রান্ত সব তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে জালালাবাদবাসীর নিকট তুলে ধরবো। কিন্তু আমাদের সেই সুযোগটি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। যদিও সংগঠনের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়নি, তা সত্ত্বেও কেবল ভবন ক্রয়সংক্রান্ত বিষয়ে জালালাবাদবাসীকে অবহিত করা এবং কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে তার সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য আমরা সাধারণ সভায় উপস্থিত থাকার চেষ্টা করেছিলাম।

তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আপনাদের জানাতে বাধ্য হচ্ছি বর্তমান কমিটি তাদের পূর্বপরিকল্পিত, উদ্দেশ্যমূলক আচরণের মাধ্যমে তা বানচাল করে দেয়। আমরা বিশ্বাস করি, জালালাবাদবাসীর অধিকার রয়েছে  ভবন ক্রয়সংক্রান্ত সব তথ্য জানার। সেজন্য আমরা আগামী ১৮ জুন রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে জরুরিভিত্তিতে বিশেষ সাধারণ সভা আহ্বান করেছি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা গিয়েছিলাম ভবন নিয়ে জালালাবাদবাসীর কাছে সকল তথ্য উপস্থাপন করতে কিন্তু তা আমাদের করতে দেওয়া হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা অতীতে জালালাবাদের গঠনতন্ত্র অমান্য করে কবর ক্রয় করেছেন, ভবন ক্রয় করেছেন, বাড়ি ক্রয়ের কথা বলে ১০ হাজার ডলার নিয়েছিলেন, তাই স্টেজে বসা ছিল। আমিতো বিগত কমিটির অনুমোদন এবং লিখিত অ্যাগ্রিমেন্ট নিয়ে ভবন ক্রয় করেছি। অতীতে অনেকেই জালালাবাদের অর্থের নয়ছয় করেছিলেন, আমি তো জালালাবাদের অর্থ কাজে লাগিয়েছি। এই অর্থ ইনট্যাক রয়েছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১১ জুনের সাধারণ সভা ছিল অবৈধ। সেই অবৈধ সভার সিদ্ধান্ত কী হয়েছে তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বাড়ি ক্রয়সংক্রান্ত সব তথ্য তুলে ধরেন।

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই ভবনের হিসাব (ডাউন পেমেন্ট, ক্লোজিং পেমেন্ট, ট্যাক্স, মগের্জের অর্থসহ নানাবিধ হিসাবে) বর্তমান সভাপতি বদরুল হোসেন খান বুঝে নিয়েছেন। সেই হিসাবে তিনি স্বাক্ষর করেছেন। তিনি যখন হিসাব স্বাক্ষর দেন, তখন তিনি ভবনের হিসাব নিয়ে কেন প্রশ্ন উপস্থাপন করেননি। সেই কাগজও সাংবাদিকদের দেওয়া হয়। মইনুল ইসলামকে যে সবার সম্মতিতে বাড়ি ক্রয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় সেই কাগজও তারা উপস্থাপন করেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে মইনুল ইসলাম বলেন, এই ভবনের মর্টগেজের চেয়ে ভবনের আয় বেশি। সুতরায় মর্টগেজ চালাতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এটা ভবন জালালাবাসীর বোঝা নয়, আয়ের উৎস। সেই সঙ্গে ফার্স্ট ফ্লোরে রাখা হয়েছে জালালাবাদবাসীর জন্য। এর পর আমি বলেছিলাম, যে ৪০০ লাইফ মেম্বার করে আমি ভবনকে ঋণমুক্ত করে দেবো। আমি নতুন করে ২৫ হাজার ডলার দেবো, আমরা আরো কয়েক জন বন্ধু আছেন, তারা ২৫ হাজার ডলার করে দেবেন। তারপরও সমস্যা কেন? তিনি বলেন, সমস্যা হচ্ছে প্রতিহিংসা। আমি ভবন ক্রয় করেছি এটা অনেই সহ্য করতে পারছেন না। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা জালালাবাদবাসী। আগামী ১৮ জুনের বিশেষ সাধারণ সভায় তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। বর্তমান সভাপতি বদরুল হোসেন খানতো আমাদের কাউকে কাউকে ঢুকতে দেননি, কাউকে কাউকে বের করে দিয়েছেন। উনি যদি আমাদের বিশেষ সাধারণ সভায় আসেনম তাকে সম্মানের সঙ্গে বসাবো। তা ছাড়া আমাদের এখানে কোনো সিকিউরিটি থাকবে না এবং কাল্পনিক তালিকাও থাকবে না। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি আমাদের সঙ্গে দুই জন সহসভাপতি আছেন, সভাপতি না আসলে তারা সভাপতিত্ব করবেন।

মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ বলেন, জালালাবাদের ৩৮ বছরের ইতিহাসে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেনি। আনি নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এবং জালালাবাদের লাইফ মেম্বার কিন্তু আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থন ছাড়া বহিষ্কার করা হলো। এমন কি সাধারণ সভায় আমাকে ঢুকতে দেওয়া হলো না।

শেয়ার করুন