২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ১১:৫৬:৪২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


বদিউল আলম মজুমদার বললেন
সমতল ক্ষেত্র তৈরি না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৮-২০২৩
সমতল ক্ষেত্র তৈরি না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না ড. বদিউল আলম মজুমদার


সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, নির্বাচনে সমতল ক্ষেত্র তৈরি করতে না পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সেদিকে যদি  মনোনিবেশ করা হয় তাহলেই সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব। সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের উদ্যোগে এক মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন। 

ড. বদিউল আলম মজুমদার আরো বলেন, আমাদের এখনকার মূল ইস্যু দলীয় সরকার বনাম তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, আমাদের মূল ইস্যু হলো ভোটাধিকার। এটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ইস্যু। সমঝোতা করতে হলে কাউকে না কাউকে ছাড় দিতে হবে, নইলে হবে না। ১৯৯৬ সালে আমরা একটা সমঝোতায় পৌঁছতে পেরেছিলাম। এই সমঝোতার ফলে নির্বাচনে সমতল ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছিল। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এই সমঝোতা ভেঙে যায় এবং নির্বাচনের ক্ষেত্র  অসমতল হয়ে পড়ে।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে উদ্ভূত-সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বানে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের উদ্যোগে ৫ আগস্ট শনিবার সারা দেশের সব জেলা ও বিভিন্ন উপজেলায় একযোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় সকাল শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে। সুজন নেতৃন্দের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দও মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সংহতি প্রকাশ করেছেন। সুজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনটিতে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সহসম্পাদক জাকির হোসেন, নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি, সুজন ঢাকা মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সুজন ঢাকা মহানগর কমিটির সম্পাদক জোবায়রুল হক ভূইয়া নাহিদ, ঢাকা জেলা কমিটির সম্পাদক মাহাবুল হক,   সুজন ঢাকা মহানগর কমিটির সহ-সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম, ঢাকা জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ড. আব্দুল আউয়াল, ঢাকা জেলা কমিটির সহ-সম্পাদক সেলিনা হাফিজ, ডিজঅ্যাবল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক মর্জিনা আহমেদ, উন্নয়নকর্মী মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।  

এতে অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, গণতন্ত্রের মূল কথা হচ্ছে, গভর্নমেন্ট বাই ডিসকাশন। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ হচ্ছে সরকার ও বিরোধীদল আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ফয়সালা করে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এখানে রাজপথে মারামারি, সহিংসতার মধ্যে দিয়ে ফয়সালা হয়। এটা চলতে পারে না। এর ফলে বিদেশিরাও তাদের খেলার জায়গা পেয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ-আলোচনায় বসে ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করুক, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সমঝোতায় আসুক।

জাকির হোসেন বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরেও আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করার একটি পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারিনি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তশালী না হওয়ায় আমাদের উন্নয়ন হলেও নাগরিক অধিকারে আমরা পিছিয়ে আছি। জনগণের প্রতি যদি ভালোবাসা না থাকে তাহলে  গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বিকশিত হবে না। 

মানববন্ধনে সুজনের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমরা চাই এই নির্বাচন হোক অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। কিন্তু বিরাজমান রাজনৈতিক বাস্তবতা অংশগ্রহণমূলক তথা, প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য অনুকূল নয়। কেননা, ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার জোটসঙ্গীরা চায় বর্তমান সংবিধানের আওতায় অর্থাৎ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। অন্যদিকে ক্ষমতাপ্রত্যাশী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলসমূহ চায় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন। নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে, রাজপথ ততোই উত্তপ্ত হচ্ছে। রাজপথে সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। এমতাবস্থায় সুজন মনে করে যে, রাজনৈতিক দলসমূহ যদি অবিলম্বে তাদের অবস্থান পরিবর্তন না করে বা তাদের মধ্যে যদি সমঝোতা না হয়, তবে সামনের দিনগুলোতে জাতিগতভাবে আমরা চরম সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হতে পারি, দেশ চলে যেতে পারে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে, যা কারোই কাম্য নয়। একটি অংশগ্রহণমূলক, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, শান্তিপূর্ণ তথা, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও পারস্পরিক সমঝোতা। রাজনৈতিক দলসমূহকে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই সমঝোতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ এবং সমঝোতাসূত্র নির্ধারণ করতে হবে।

শেয়ার করুন