২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৫:২৯:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


ভোট নিয়ে টিআইবি’র বক্তব্য ‘জনমতের প্রতিফলন- নজরুল ইসলাম খান
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০১-২০২৪
ভোট নিয়ে টিআইবি’র বক্তব্য ‘জনমতের প্রতিফলন- নজরুল ইসলাম খান


দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ(টিআইবি) বক্তব্য ‘জনমতের প্রতিফলন’ বলে মন্তব্য করেছেন নজরুল ইসলাম খান। ‘টিআইবি বিএনপির দালালী করছে’ সরকারের মন্ত্রীদের এহেন প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার সকালে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ কে বলে নাই যে, এই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে… সবাই তো বলেছে যে, নির্বাচন সুষ্ঠু হয় নাই। কাজেই টিআইবি যা বলেছে, এটা জনমতের প্রতিফলন।  আমরা(বিএনপি) যা বলেছি সেটাও জনমতের প্রতিফলন। ফলে যদি আমাদের কথা মিলে যায়… সেটা একজন আরেকজনকে পছন্দ করার জন্য না, এটা সত্য বলার জন্য।”

এই সম্পর্কে প্রশ্ন রেখে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আবদুল মঈন খানও বলেন, ‘‘ শুধু টিআইবি কেন, কে বলে নাই সেটা বলেন? কে বিএনপির কথাকে রিপিট করে প্রমাণ করে নাই যে, বিএনপি বিগত ১৫ বছর ধরে এই সরকারের স্বৈরাচারি প্রকৃতি এবং একদলীয় শাসন সম্বন্ধে যে কথা বলেছে… এটা কোন দেশে-বিদেশে, কোন প্রতিষ্ঠান, কোন সরকার বলে নাই যে, বিএনপি সত্য কথা বলে নাই।”

অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠানের দেয়া অভিমতে সাধুবাদ জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ ন্যায্য কথায়, বাংলাদেশের গণমানুষের পক্ষে যে বলবে তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই্। আমরা যা বলি সেটা গুরুত্বপূর্ণ, জনগন যা বলে সেটা ‍গুরুত্বপূর্ণ।”

‘‘ জনগন এই সরকারের স্বৈরশাসন পছন্দ করে না, জনগন এই সরকার যে অন্যায়ভাবে আমাদের নেতাদেরকে গ্রেফতার করে রেখেছে… দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে রাখা হয়েছে… আমরা এর নিন্দা জানাই। যারা এসব অন্যায়-অনাচার-জুলুম-নির্যাতন-নিপীড়ন এবং ভোট চুরির সমালোচনা করে তাদের সবাইকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।”

‘যতদ্রুত সম্ভব গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠা হবে’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ শহীদ জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলে সেই গণতন্ত্র আবার মেরে ফেলা হয়েছে… সেটাকে পুনরুজ্জীবিত করার যে লড়াই এই লড়াই চলছে এবং এই লড়াইয়ের যে বিভিন্ন কর্মসূচি আপনাদেরকে জানিয়ে দেয়া হয়। এরপরেও যে কর্মসূচি সেটাও আপনাদেরকে জানিয়ে দেয়া হবে।”

আজকের দিনে আমরা এটুকু বলতে চাই যে, আমরা বাকশালের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে শহীদ জিয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, এরশাদের সামরিক স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজকেও আমরা গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আছি দেশনায়েক তারেক রহমানের নেতৃত্বে। ইনশাল্লাহ আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবোই এবং শহীদ জিয়া যিনি গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার জন্মবার্ষিকীতে আমরা অঙ্গীকার হলো যে, আমরা যত দ্রুত সম্ভব লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে এদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী জনগনের সহায়তায়, আপনাদের সহায়তায় আমরা দেশে গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠা করব।”

আবদুল মঈন খান বলেন, ‘‘ বিএনপি লগি-বৈঠার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না আওয়ামী লীগের মতো। আমরা শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী এবং আমরা আমাদের যে কর্মসূচি চলমান রয়েছে এবং এই চলমান কর্মসূচি আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে অব্যাহত রাখব এবং এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্র পূনরুদ্ধার করব।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ এই দেশ স্বাধীন হয়েছিলো গণতন্ত্রের জন্য। সেই গণতন্ত্র আজকে বাংলাদেশে মৃত। এটা শুধু আমাদের কথা নয়, এটা শুধু বাংলাদেশের মানুষের কথা নয়। এটা সারা বিশ্বের যারা গণতন্ত্রকামী মানুষের রয়েছেন,যেসব গণতন্ত্রকামী দেশগুলো রয়েছে এবং সারা বিশ্বের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে তারা সবাই একবাক্যে একটি কথা বলেছে যে, বাংলাদেশে আজকে একদলীয় শাসনের পরিণত হয়েছে।”

‘‘ এখানে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই, এখানে মানুষের মৌলিক অধিকার নেই, এখানে মানুষের ভোটের অধিকার নেই, এখানে মানুষের গণতন্ত্রের অধিকার নেই। এই পরিস্থিতিতে আমরা নতুন করে আমাদের বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যিনি বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়ে সম্মুখের সমরে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সেই জিয়াউর রহমানের আদর্শকে আমরা ধারণ করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এগিয়ে যাবো। এটাই আজকে আমাদের শপথ।”

জিয়াউর রহমানের ৮৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ১১টায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান নেতা-কর্মীদের নিয়ে শেরে বাংলা নগরে জিয়ার কবরে গিয়ে পুস্পমাল্য অর্পন করে এবং তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করে। পরে স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

এই সময়ে দলের বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাখাওয়াত হাসান জীবন, কায়সার কামাল, তাইফুল ইসলাম টিপুসহ যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, ছাত্র দল, তাঁতী দল, মতস্যজীবী দল, মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহন করেন জিয়াউর রহমান। একাত্তর সা্লে মুক্তিযুদ্ধের ‘জেড’ ফোর্সের অধিনায়ক পরবর্তিতে সেনাবাহিনীর প্রধান এবং রাষ্ট্রপতি হন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক ব্যর্থ সেনা বিদ্রোহে নিহত হন রাষ্ট্রপতি জিয়া।

রাষ্ট্র ক্ষমতা থাকাকালে ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বরে তিনি জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।



শেয়ার করুন