২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৯:৪৫:২৩ অপরাহ্ন


দেশকে তাসনিয়া ফারিন
পুরস্কারটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০২-২০২৪
পুরস্কারটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিন


তাসনিয়া ফারিন। অভিনয় দিয়ে রীতিমতো চমক দিচ্ছেন তিনি। তারই স্বীকৃতি মিলেছে এবার ইরান থেকে। দেশটির ৪২তম ফজর চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ইস্টার্ন ভিস্তা’ বিভাগে ক্রিস্টাল সিমোর্গ পুরস্কার পেয়েছেন এই অভিনেত্রী। ‘ফাতিমা’ নামের একটি সিনেমায় অভিনয় করে এই পুরস্কার জিতলেন। এ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির 

প্রশ্ন: আপনি তো অভিনয় দিয়ে একের পর এক চমক দিচ্ছিন। এর রহস্য কি?

তাসনিয়া ফারিন: কোনো রহস্য নেই। ক্যামেরার সামনে যখনই দাঁড়াই মনে হয় দায়িত্বটা যথাযথভাবে পালন করতে হবে। যখন যে চরিত্রে অভিনয় করি সেটা ফুটিয়ে তোলাই হলো দায়িত্ব। যে কোনো পেশাতেই কিন্তু দায়িত্ববোধ খুব জরুরি। আপনি যদি আপনার ওয়াদার প্রতি সম্মান দেখাতে পারেন তবে অবশ্যই এর যথাযথ প্রাপ্তি চলে আসবে। 

প্রশ্ন: ইরান থেকে পাওয়া পুরস্কার আপনার ক্যারিয়ারে জন্য কতটুকু অনুপ্রেরণা হবে?

তাসনিয়া ফারিন: এটা অবশ্যই অনেক বড় অনুপ্রেরণা। কারণ এমন খবর যেকোনো শিল্পীর জন্য আনন্দের। পুরস্কারটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল আমার কাছে। উৎসবে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসে। প্রথমবার ফেস্টিভ্যালে যাওয়া, এত মানুষের সঙ্গে দেখা হওয়া আমার জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা।

প্রশ্ন: কিন্তু প্রোগ্রামে যাওয়ার পরও পুরস্কারটি নিজের গ্রহণ করতে পারলেন না কেন?

তাসনিয়া ফারিন: একটি বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ের জন্য উৎসব শেষ হওয়ার এক দিন আগেই চলে আসতে হয়েছে। পুরস্কার পাওয়ার পর এ জন্য আফসোস হয়েছে। 

প্রশ্ন: ক্যারিয়ারের অল্প সময়ে আপনার প্রাপ্তির খাতা অনেক ভারি। এতে কি ভয় লাগে মাঝে মাঝে?

তাসনিয়া ফারিন: আসলে খুব বেশি এক্সপেক্টেশন রাখি না লাইফ থেকে। যে কারণে হয় কী আমার কাছে যেটাই আসে সেটাই একটা সারপ্রাইজ। তো আমি খুবই গ্রেটফুল থাকি সব সময়। কোনো ছোট কিছু পেলেই আমি খুশি হয়ে যাই। যে কাজই করেছি মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। চড়াই-উতরাই পার তো হতেই হয়েছে এবং সামনেও হবে। আমার মনে হয় যে লাইফটাই একটা অ্যাডভেঞ্চার। আর অভিনয়ে যুক্ত হয়ে ভালই হয়েছে কারণ প্রতিদিনই এক একটা চরিত্রতে বাঁচতে পারি সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওনা।

প্রশ্ন: অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্নটা কি ছোট বেলা থেকেই ছিল?

তাসনিয়া ফারিন: আমি কিন্তু ছোট থেকে অভিনেত্রী হতে চাইনি আমার মা চেয়েছিলেন। মা আমার মধ্যে হয়তো অভিনয় সত্তাটা দেখেছিলেন। জানি না কতটা পেরেছি। তবে হ্যাঁ এত ভাল ভাল কাজ, নিজের এক্সপেক্টেশন আরও বাড়িয়ে দেয় সেখান থেকে নিজেই ভাবি যে এই কাজটার থেকে আমাকে আরও ভাল কাজ করতে হবে।

প্রশ্ন: ফাতিমা সিনেমাটি তো আপনার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের কাজ?

তাসনিয়া ফারিন: ২০১৭ সালে সিনেমাটির কাজ শুরু করেছিলাম। নাম ছিল ‘দাহকাল’। তখন কাজটি শেষ করা যায়নি। ২০২২ সালে আবার কাজ শুরু হয়। নামের সঙ্গে অনেক কিছুই বদলে যায়। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের জায়গা ছিল পাঁচ বছরের গ্যাপটা যেন স্ক্রিনে বোঝা না যায়। উৎসবে যাঁরা সিনেমাটি দেখেছেন তাঁদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। গ্যাপটা কারও চোখেই পড়েনি। অভিনয় কিংবা লুকের কন্টিনিটি-কোনোটাই তেমন কোনো পার্থক্য বোঝা যায়নি। 

প্রশ্ন: ফাতিমা কি ওয়েবে মুক্তি পাবে, নাকি প্রেক্ষাগৃহে?

তাসনিয়া ফারিন: ইরানের উৎসবে সিনেমাটি প্রশংসিত হয়েছে। সামনে আরও কিছু উৎসবে প্রদর্শিত হওয়ার কথা। ইরানের উৎসবে নির্বাচিত হওয়ার পর অনেকেই সিনেমা হলে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করছে। তবে, এ বিষয়ে সঠিক বলতে পারবেন নির্মাতা ও প্রযোজক। তবে আমার মনে হয়, এটি সিনেমা হলে রিলিজ হওয়া উচিত। 

প্রশ্ন: ফাতিমার গল্প কী নিয়ে? 

তাসনিয়া ফারিন: ছোট করে যদি বলি, ফাতিমা ও সুবর্ণা নামের দু’টি মেয়ের জার্নি নিয়েই তৈরি হয়েছে সিনেমাটি। আমি ফাতিমা চরিত্রে অভিনয় করেছি। 

প্রশ্ন: কাজের এই স্বীকৃতি সার্বিকভাবে কীভাবে দেখছেন? 

তাসনিয়া ফারিন: পুরস্কার মানে কাজের স্বীকৃতি। বছরের শুরুতে দুটি পুরস্কার অর্জন অনেক বড় পাওয়া। এগুলো আমাকে ভালো সিনেমা করার অনুপ্রেরণা জোগায়। আমি খুব ভাগ্যবান। ক্যারিয়ারে শুরুতেই এত ভালো ভালো কাজের সুযোগ হয়েছে। ফাতিমা যে কখনো আলোর মুখ দেখবে, সেটাই ভাবিনি। সেখান থেকে এখন সিনেমাটি নিয়ে ভালো একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। উৎসবে যাঁরাই দেখেছেন, ভালো বলেছেন। পুরস্কারও পেলাম। অন্যদিকে, ‘আরও এক পৃথিবী’ আমার প্রথম সিনেমা। দেশের বাইরে প্রথম কাজ। এই সিনেমা দিয়ে পুরস্কার পাওয়া বিশেষ কিছু।

প্রশ্ন: ইমরাউল রাফাতের আনারকলি নাটকের ‘লোকাল বয়’ শিরোনামের গানে আপনাকে নাচতে দেখা গেল। এর আগে আপনাকে এভাবে দেখা যায়নি।

তাসনিয়া ফারিন: চরিত্রের প্রয়োজনেই গানের সঙ্গে নাচ রাখা হয়েছে। আনারকলি নাটকে আমি যে চরিত্রে অভিনয় করেছি, সেই মেয়েটি গ্রামে যাত্রাপালায় নাচে। দর্শকের মনোরঞ্জন করাই তার কাজ। চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতেই গানটির সঙ্গে নাচতে হয়েছে।

শেয়ার করুন