‘এ সমস্ত অরাজকতা আর কতকাল চলবে? মানুষের পাশে দাঁড়ান। তাদের স্বার্থের কথা ভাবেন। এ সমস্ত অনাচার করতে থাকলে আপনাদের ভবিষ্যতের কথাও ভাবতে হবে।’ জাতিসংঘের উন্নয়ন গবেষণা প্রধান অর্থনীতিবিদ নজরুল ইসলাম বাপা’র সহ-সভাপতি ও বেনের প্রতিষ্ঠাতা ড. নজরুল ইসলাম এসব কথা বলেছেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)র উদ্যোগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (নসরুল হামিদ মিলনায়তন), “আকস্মিক বন্যায় সিলেটে মানবিক বিপর্যয়ঃ কারণ ও করণীয়”-শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বক্তব্য রাখছিলেন ওয়েববিনারে গতকাল ২১ জুন মঙ্গলবার। ড. নজরুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন। অপরদিকে বাপা’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বেনের বৈশ্বিক সমন্বয়ক, বাপা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্রের লক হ্যাভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. খালেকুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল হাই আল হাদী। এতে উপস্থিত থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য রাখেন বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক শারমীন মুরশিদ ও মিহির বিশ^াস।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক আহমেদ কামরুজ্জমান মজুমদার, বাপা’র নদী ও জলাশয় বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব ড. হালিম দাদ খান, বাপা নির্বাহী কমিটির সদস্য ইবনুল সাঈদ রানা, যুব বাপা’র সদস্য সচিব এডভোকেট রাওমান স্মিতা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ভার্চূয়ালী যুক্ত ছিলেন বাপা’র সহ-সভাপতি অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদার, কোষাধ্যক্ষ মহিদুল হক খান, বাপা নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদুল ইসলাম, আব্দুল করিম কিম ও অধ্যাপক রবিন্দ্রনাথ চৌধুরী প্রমূখ।
এতে নজরুল ইসলাম ক্ষোভের সাথে আরো বলেন, ইঞ্জিনিয়ার সাহেবদের বলবো আর দুর্নীতি করবেন না। রাস্তাঘাট ঠিক করে বানান। এসব নিয়ে আর দুর্নীতি করবেন না। মানুষের দু:খ দুর্দশাতো চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছেন। নিজেদের বাড়িঘরতো খুব যত্ন করে বানান।
ইটালিয়ান মার্বেল লাগান,এটা লাগান, ওটা লাগান। ওখানে (বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা) জনগণের অর্থ নিয়া যেটা বানাবেন সেটা ভালোভাবে বানাবেন। রডের বদলে বাশ দেবেন? রাস্তায় ইট-সুড়কি না দিয়ে পিচ ঢালা করে দেবেন। এগুলো কি পেয়েছেন আপনারা ?
জাতিসংঘের উন্নয়ন গবেষণা প্রধান এই অর্থনীতিবিদ নজরুল ইসলাম প্লাবনভূমিকে ধ্বংস করে উন্নয়ন করলে এধরনের ধ্বংসযজ্ঞ বার বার দেখতে হবে বলেও সতর্ক করেন। তিনি প্রয়োজনে অপটিমাইজেশন এক্সারসাইজ-এর মাধ্যমে সড়ক নির্মানের মন্তব্য করেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ মূলত একটি বদ্বীপ অঞ্চল। এখানে উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে গেলে এদেশের প্রকৃতির চরিত্র বিবেচনায় নিয়েই পরিকল্পনা করতে হবে। নদ-নদীকে প্লাবনভূমিতে আসতে দিবে না এ ধারাতে গত সাত দশক ধরে বাঁধ নির্মানের নিয়ম চালু রেখেছে এদেশের সরকার। কিন্তু নিয়ম হচ্ছে নদীকে কোনভাবেই বাঁধ দিয়ে আটকে রাখা যায় না। এ বেষ্টনী পদ্ধতি পরিহার করে উম্মুক্ত পদ্ধতি চালু করার দাবি জানান তিনি।
অধ্যাপক ড. মো. খালেকুজ্জামান বলেন রাস্তার পরিবর্তে উড়ালসেতু করতে হবে যেন নদীর সাধারন প্রবাহ বাধাগ্রস্ত না হয়, সঠিক পন্থায় নদী খনন করতে হবে এবং আন্ত:নদীগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনা করতে হবে। তিনি বলেন বন্যা পরিস্থিতি সুষ্টির জন্য মূলত তিনটি কারণ দায়ী- বৈশ্বিক, আন্ত:দশীয় এবং অভ্যন্তরীণ।