ঢাবি এলামনাই’র কর্মকর্তাবৃন্দ
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন অব ইউএসএ ইনকের বার্ষিক নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হল গত ৬ ডিসেম্বর শনিবার নিউইয়র্ক সিটির উডসাইডের অভিজাত ব্যাংকুয়েট গুলশান ট্যারেস পার্টি হল মিলনায়তনে। “এসো মিলি প্রাণের টানে” স্লোগানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা ছাত্র জীবনের হারিয়ে যাওয়া দিনগুলোর মধুর স্মৃতিচারণে মেতে উঠেছিলেন। আড্ডা, গান, কবিতা, গান আর নাচে ভরে উঠেছিল পুরো অনুষ্ঠান। স্মৃতিচারণে মনে হচ্ছিলো যেন সেই যৌবনের ক্যাম্পাস, জীবন্ত ক্যাম্পাস, দূরন্তপনার ক্যাম্পাস, রাজনীতির ক্যাম্পাস, সংগ্রামের ক্যাম্পাস ও প্রেমময় ক্যাম্পাস।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রহুল আমিন সরকারের সঞ্চালনায় ও সভাপতি এম এস আলম ও উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইউসুফ আলীর স্বাগত বক্তব্য এবং উদযাপন কমিটির আহবায়ক এ. কে আজাদ তালুকদারের উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। তারপরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিল্পীরা দলীয়ভাবে আমেরিকা, বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন। পরবর্তীতে শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে। অত্যন্ত আবেগময় এই পর্বে অংশগ্রহণকারীরা ক্ষণিকের জন্য ফিরে যান তাঁদের ক্যাম্পাস জীবনের সোনালী অতিতে। স্মৃতিচারণ করেন নাসির আলী খান পল, এডভোকেট মজিবর রহমান, গোলাম মওলা মানিক, ডাঃ চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান, মোর্শেদ আলম, আব্দুল আওয়াল সিদ্দিকী, আজিজুল হক মুন্না, সাংবাদিক মোঃ আবুল কাশেম, ডঃ আলমাছুর রহমান, সাইদুল বাকিন, শাহেরা খাতুন, মাসুদুল ইসলাম ও সানজিদা খবির প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ইউএস সুপ্রিম কোর্টের এটর্নি এট ‘ল মঈন চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সিনিয়র সহসভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, কোষাধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া রুমি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি সাবিনা শারমিন, সাধারণ সম্পাদক মীর কাদের রাশেল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি শামীম আরা বেগম, সাধারণ সম্পাদক তামান্না শবনম পাপড়ি, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মিজানূর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, লেখক শিতাশু গুহ, জহিরুল হক, মোহাম্মাদ হোসেন মুকুল, রোকেয়া আকতার, আনিসুল কবীর জাসির, হাবিবুর রহমান, রীনা সাহা, ফরিদা ইয়াছমিন ও অসীম সাহা, অঞ্জন ভট্টাচার্য প্রমুখ।
আয়োজনের আকর্ষণীয় পর্ব ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যৌথভাবে পরিচালনা করেন সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা শামসুন নাহার নূপুর চৌধুরী। অনুষ্ঠানে দেশের গান পরিবেশন করেন সংগঠনের সদস্যবর্গের ছেলে-মেয়েরা ও নতুন প্রজন্মের শিশু শিল্পীরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন ফাতেমা খান, চিত্রা রোজারিও, রওশন আরা কাজল, সানজিদা খবির, সিফাত আলম, সুশীল সিনহা, কাজী হক, মোহাম্মাদ শানু, পারিজাত দাশ, লিয়ানা মানহা, এরিনা মানহা, রোদেলা হক, মৃদুলা হক ও শৌভিত চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন গোলাম মোস্তফা, আজিজুল হক মুন্না, দেওয়ান প্রীতি ও গোলাম ফারুক খান। অতিথি শিল্পী হিসেবে উপস্থিত থেকে সংগীত পরিবেশন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের প্রাক্তন ছাত্রী, ক্লোজআপ ওয়ান তারকা ও প্রবাসের অত্যন্ত জনপ্রিয় শিল্পী কৃষ্ণা তিথি।
অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনায় ছিলেন কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ হোসেন খান, মোল্লা মনিরুজ্জামান, তাজুল ইসলাম, স্বপন বড়ুয়া, সাইদা আক্তার লিলি, সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া, মহিউদ্দিন দেওয়ান, আব্দুল মতিন, হানিফ মজুমদার, আজহার আলী খান, গোলাম মোস্তফা, নুপুর চৌধুরী, গাজী শামসুদ্দিন, ইকবাল মুর্শেদ, সুশীল সিনহা, বেলাল মাহমুদ, লিয়াকত আলী, ইশতিয়াক ফিরোজ ও আলমগীর শরীফ প্রমুখ।
সকল এলামনাই ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে এই আয়োজনটি পরিণত হয় পুরোনো স্মৃতিচারণে, হাসি-আনন্দে, প্রাণখোলা আড্ডায় ও অকৃত্রিম বন্ধুত্বে। পরিবারসহ সবার উপস্থিতি এই আয়োজনকে অনেক অর্থবহ করে তোলে। অংশগ্রহণকারী এলামনাইরা এই রকম একটি অসাধারণ মনোমুগ্ধকর ও স্বরনীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন অব ইউএসএ এর কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান এবং সেই সাথে তারা ভবিষ্যতেও সকল কর্মকান্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সবশেষে সংগঠনের সভাপতি এম এস আলম এলামনাই ডিনার-২০২৫ সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য সংগঠনের সকল কর্মকর্তাদেরকে এবং অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। সেই সাথে সকল এলামনাইকে সংগঠনের সদস্য হওয়ার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন অব ইউএসএ ইনক কে আরো শক্তিশালী ও গতিশীল করতে সহযোগিতা করার আহবান জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।