আজ ১১/১১/২০২৪। ইংরেজী বর্ষপঞ্জির ১১ম মাসের ১১ তারিখ। আমরা অবসর জীবনে অফুরন্ত অলস সময় নিয়ে আছি অস্ট্রেলিয়ার নয়নাভিৰাম কুইন্সল্যান্ড স্টেটের লোগান সিটিতে। প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ের পর্যটন স্বর্গ গোল্ড কোস্ট এখান থেকে হাত ছোয়া দুরুত্বে। ঘরের পাশের মেট্রো স্টেশন থেকে চাইলেই যেতে পারি মাত্র ৫০ সেন্ট ভাড়া দিয়ে। প্রকৃতিতে এখন হেমন্ত। নীল জাকারান্ডা ,হলুদ ওয়াটেল ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসলেও বাগান জুড়ে নানা রঙের গোলাপ এবং অন্নান্য রোগিং ফুলের সৌরভ। সকাল পাক পাখালির গুঞ্জরণে মুখরিত।
আজ সোমবার। নাতনি ফাতিমা আর নাতি জোহায়ের দিন গুনছে ২২ নভেম্বর এবারের মত স্কুল শেষ। লম্বা ছুটি। গত দুই বছর দাদুকে কাছে পায় নি ছুটির সময়। ছিলাম বাংলাদেশে। এবার তাই নানা আয়োজন কোথায় যাবে। আমরা সাধারণত কোনো দ্বীপে বা পাহাড় ঘেরা বনাঞ্চলে চলে যাই সময় কাটাতে। এবার কিন্তু ক্রিকেট দেখবো একসাথে উলং গ্যাবায়। প্রথমে পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া টি ২০ এবং তার পর অস্ট্রেলিয়া -ভারত বর্ডার -গাভাস্কার টেস্ট সিরিজ. বিবেচনায় আছে ডিসেম্বরের শেষদিনগুলো দূরে কোথাও কাটাবো যদি সুস্থ সক্ষম থাকি।
আজ বাংলাদেশ -আফগানিস্তান সিরিজ নির্ধারণী ওডিআই ম্যাচ। সংযুক্ত আরব এমিরেটসের শারজায় খেলা আমাদের সন্ধ্যায় শুরু হয়ে শেষ হতে মাঝ রাত পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ বলে কথা। শত সমস্যা হলেও দেখবো। আবারো স্বপ্ন দেখছি যেন বাংলাদেশ ভালো খেলে সিরিজটা জিতে নিতে পারে।
আজকাল দিনের বেলায় অনেক গরম পড়ে। বিকেলের দিকে আকাশ কালো করে বৃষ্টির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়. সন্ধ্যার পর কয়েক পশলা বৃষ্টি ঝরে. কিন্তু এবারে অন্নান্য বছরগুলোর তুলনায় বৃষ্টি অনেক কম অস্ট্রেলিয়ার শস্য ভান্ডার কুন্সল্যান্ডে এবার কিন্তু অনাবৃষ্টির প্রভাব দেখি রোববার সব্জি বাজারে। কিন্তু এখানে অতি উন্নত জলসেচ ব্যবস্থা আছে. রিসাইকেল ওয়াটার ব্যবহার করা হয় সেচ কাজে। ভালো লাগে ভেবে দক্ষিণ পূর্ব কুইন্সল্যান্ডের বিশাল রিসাইকেল ওয়াটার পাইপলাইন প্রকল্পে একসময় জড়িত ছিলাম ভেবে।
মাঝরাতের পর ঘুম ভেঙে গেলে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বাংলাদেশের খবর শুনি। দেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এখনো স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নানা সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। সব কিছুর উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তবে কিছু কিছু জায়গায় স্বস্তি ফিরে আসছে অতি ধীরে। আশাবাদী হতে চাই. ..... আশা করি অন্তর্নিহিত শক্তি বলেই ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। তবে জাতির ইতিহাস কৃষ্টি ভুলে গেলে চলবে না। মনে রাখতে হবে ১৯৭১ না হলে ২০২৪ হত না। ইতিহাস যাদের বরণ করেছে, সময় তাদের বিস্মৃত করতে পারে না। আমরা প্রতি দিন ব্যাস্ত সময় কাটিয়ে অবসরে অপেক্ষা করি, পরের দিনটায় ভালো কিছু শুনার অপেক্ষায়। বসবাসের জন্য দুনিয়ার অন্যতম সেরা দেশের সেরা শহরে থেকেও স্মরণে রাখি মায়ের দেশ এবং নিজের শহরকে।
এগারো মাসের ১১ম দিনটি বা এমন একটি দিনে বিশেষ কিছু উপহার দিবে কিনা কে জানে?