২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ৬:৫১:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


নদী কথনে বক্তারা
বুড়িগঙ্গা তুরাগরে কেউ নদী বলে ডাকে না
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৭-২০২২
বুড়িগঙ্গা তুরাগরে কেউ নদী বলে ডাকে না ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম এর দূষণবিরোধী অ্যাডভোকেসি প্রকল্পের আয়োজনে “নদী দূষণের স্বাস্থ্যগত প্রভাব” শীর্ষক সপ্তম নদীকথন অনুষ্ঠিত/ছবি সংগৃহীত


বুড়িগঙ্গা- তুরাগরে এখন আর কেউ নদী বলে ডাকে না। এগুলারে কয় খাল। দখল দুষণের এসব নদীর চরিত্র বদলে গেছে। এসব নদীতে এখন দেখা যায় না সেই ঢেউ,স্রোত। থাকে না সময় মত পানি। আর পানি থাকলেও তা যায় না ধরা বা ছোয়া। নদীর পাড়েও বসা যায় না। 

এমন বক্তব্য উঠে আসে বুড়িগঙ্গার পাড়ে এক নদী কথনে। নদীদূষণ রোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ‘নদী দূষণের স্বাস্থ্যগত প্রভাব’ শিরোনামে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়ামের দূষণবিরোধী নদী কথন অনুষ্ঠিত হয়। আজ ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম এর দূষণবিরোধী অ্যাডভোকেসি প্রকল্পের আয়োজনে “নদী দূষণের স্বাস্থ্যগত প্রভাব” শীর্ষক সপ্তম নদীকথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

দুপুর বারোটা থেকে একটা পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী বসিলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংলগ্ন উন্মুক্ত স্থানে এই নদীকথনে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল এর সঞ্চালনায় “নদী দূষণের স্বাস্থ্যগত প্রভাব” শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং রোগ নিয়ন্ত্রনের ডাঃ আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধ্যাপক হাসনাত এম আলমগীর,,পলিসি এন্ড ফুড সিস্টেম এট গ্লোবাল এলাইন্স ফর ইমপ্রুভড নিওট্রিশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মন্দিরা গুহ নিয়োগী, নারী মৈত্রী, মাইনউদ্দীন আহম্মেদ, চিফ অব পার্টি, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের সার্র্ভিস প্রমোটর শাহীনুর আক্তার, নদীপাড়ের কম্যুনিটির প্রতিনিধি মোহম্মদ মানিক হোসেন । এছাড়াও নদীদূষণ রোধে কাজ করেন এরকম স্থানীয় কমিউনিটি র্ভিত্তিক সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন। 

শরীফ জামিল বলেন, একটা দেশের সম্পদ হলো নদী এবং নদীর সাথে  মানুষের জীবনযাত্রা অনেক দিক থেকে সম্পর্কিত। তবে এই নদী বিভিন্নভাবে দূষিত হ”েছ যা আমাদের স্বা¯ে’্যর ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। তাই নদীকে  সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারলে নদীকে যেমন রক্ষা করা যাবে ঠিক তেমনি স্বা¯’্যগত সমস্যারও সসমাধান করা সম্ভব হবে।  আমাদের নদী রক্ষা না করতে পারলে আমাদের নদীমাতৃক দেশকে রক্ষা করা যাবেনা। আর আমাদের দেশের প্রাণকেন্দ্র ঢাকাকে বাঁচাতে হলে বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে হবে।

শাহীনুর আক্তার তার বক্তব্যে বলেন, আমরা নদীপাড়ের এলাকার জনগণের স্বা¯’্য সচেতনতা তৈরীতে কাজ করে থাকি। আমাদের উঠান বৈঠক কার্যক্রমে পরিবেশ রক্ষা বিশেষ করে নদী দুষণ রোধের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে এলাকার জনগনের সচেতনতার জন্য আমরা কাজ করব কারণ সরকারের পাশাপাশি জনগনের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরী। নদীতে পলিথিন ফেলা যাবেনা, প্লাষ্টিক বোতল ফেলা যাবেনা, চিপস্ এর প্যাকেট ফেলা যাবেনা এই বিষয়গুলো জনগনকে জানানো অত্যন্ত প্রয়োজন।’

অধ্যাপক হাসনাত এম আলমগীর বলেন, নদী দূষণ ও জনস্বাস্থে এর প্রভাব বিষয়ে বিভিন্ন সেক্টরের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে গবেষণা পরিচালনা করতে হবে এবং গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল নদী দুষণ বিরোধী নীতি প্রনয়ন ও সংস্কারের জন্য এ্যাডভোকেসির হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে হবে। ত্ছাাড়া দূষণ বিরোধী চলমান যে কার্যক্রম আছে সেগুলো জোড়ালোভাবে পরিবীক্ষণ করা হলে নদী দূষণ রোধ করা সম্ভব হবে।

নদী দূষণের স্বাস্থ্যগত প্রভাব প্রসঙ্গে ডাঃ আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন যে, নদী দূষণ অর্থাৎ নদীর পানি দূষণ হয় রাসায়নিক পদার্থ থেকে এবং কৃষিকাজে ব্যবহৃত কীটনাশক পানিতে মিশে, এই দূষিত পানি পান করার ফলে মানুষের মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে প্রজননতন্ত্র পর্যন্ত ক্ষতি হয়। সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয় কিডনী এবং যকৃৎ। শিশুদের হাঁপনী, হৃদপিন্ড, শরিরীক প্রতিবন্ধকতা এবং অন্যান্য পানিবাহিত রোগ হয়। তাই কোন্ কোন্ সময় কি পরিমানে ও কোন খাত থেকে এই রাসায়নিক ও কীটনাশক পানিতে নির্গত হয় তা গবেষণার মাধ্যমে তুলে আনা এবং সে অনুযায়ী নদী দূষণ রোধে পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। 

নদী দূষণের স্বাস্থ্যগত প্রভাব প্রসঙ্গে মন্দিরা গুহ নিয়োগী বলেন, নদীর পানি দূষিত হওয়ার কারনে তা খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাবারে চলে আসে তখন তা শিশুদের শারিরীক প্রতিবন্ধকতা এবং অপুষ্টির সমস্যা তৈরী করে। তাই নদী দূষণ রোধে জনসচেতনতা অত্যন্ত জরুরী।

নদীপাড়ের কম্যুনিটির প্রতিনিধি মোহম্মদ মানিক হোসেন বলেন, বুড়িগঙ্গা আর তুরাগরে কেউ আর নদী বলে মনে করে না। রএসব নদীকে দকল দুষণ করে খালে পরিনত করেছে। নদী পানি ধরা ছোয়া যায় না। 


শেয়ার করুন