২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৭:১১:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


উত্তেজনার পারদ বাড়ছে ঢাকা ওয়াশিংটনের
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৯-২০২৩
উত্তেজনার পারদ বাড়ছে ঢাকা ওয়াশিংটনের মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিশ্বব্যাপী যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ভিশন, তাতে বাক স্বাধীনতার গণতন্ত্রও বিদ্যমান। সে সূত্র ধরে রাজনৈতিক হোক আর যেভাবেই হোক কথা’র স্বাধীনতা ভোগ করবেন। কিন্তু ইদানিং বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে প্রশ্ন তুলছেন, অভিযোগ দিচ্ছেন, সেটা কোনো দলকে কেন্দ্র করে নয়, একেবাইরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেই। এব্যাপারে মার্কিনীদের কোনো অভিযোগ বা আক্ষেপও নেই। বা থাকলে সেটা প্রকাশ্যে দেখাচ্ছেনও না। তবে বাংলাদেশ দলের ক্ষমতাসীন দলের কেউ কেউ তীর্যক বাক্য বাণে জর্জরিত করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে।  

সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়ে পরবর্তিতে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে বেশ কিছু কথা বলেছেন। প্রশ্ন তুলে বলেছেন দেশটির গণতন্ত্রের কথা নিয়েও। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি প্রয়োগ শুরু করে দেয়ার এক ঘোষণার পর তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘তারা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) বলেছে, যদি নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করলে তারা সেটাকে স্যাংশান দেবে। এখানে আমারও কথা থাকবে এ বানচাল করার চেষ্টা যেন দেশের বাইরে থেকেও না হয়। দেশের বাইরে থেকে যদিও হয়, তাহালে বাংলাদেশের মানুষও তাদের স্যাংশন দিয়ে দেবে।’ তিনি বলেছেন, এসব স্যাংশনে বাংলাদেশের মানুষ ভয় পায় না। কে স্যাংশন দিলো, কাকে দিলো তাতে কিছু যায় আসে না। নির্বাচনে জনগণ যাকে ভোট দিবে সেই ক্ষমতায় আসবে। বাংলাদেশের জনগণ এখন ভোটের অধিকার সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ নিজ সন্তান প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজন থাকলেও কী করবে। ঠিক আছে, আমার ছেলে তো এখানেই (আমেরিকা) আছে। সেতো এখানে পড়াশোনাও করেছে, ব্যবসা-বাণিজ্যও করছে। বিয়ে করেছে। তার মেয়ে আছে। সবই আছে তার। সম্পত্তি, বাড়ি-ঘর সবই তার আছে। যদি বাতিল (ভিসা) করে, করবে। তাতে কিছু আসে যায় না। আমাদেরতো বাংলাদেশ আছে।’ এতে করে ঢাকা ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনার পারদ যেন বেড়েই চলছে। হতে পারে প্রতিটা দিক থেকেই দুই দেশের মধ্যে বিশাল অসমতা। তবু চোখে চোখ রেখে কথা বলার দুঃসাহস দেখাচ্ছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। যা মনিটরিং করছে গোটা বিশ্ব। 

ওবায়দুল কাদেরের বার্তা

সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার দেশ, আমার গণতন্ত্র। আমার দেশ আমি নির্বাচন করবো। সাতসমুদ্দুর তের নদীর ওপার  থেকে আটলান্টিকের ওপার থেকে তুমি কে, ভিসানীতি দেবে, নিষেধাজ্ঞা দেবে- কারো ভিসানীতি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা আমরা করি না।’ তিনি বলেন, ‘বার্তা দিয়ে দিচ্ছি- কারো নিষেধাজ্ঞাপর পরোয়া করি না। বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি কারোর নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করার জন্য নয়। এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। রক্ত দিয়ে স্বাধীন করেছি। কারো নিষেধাজ্ঞা মানার জন্য নয়।’ তিনি পাল্টা অভিযোগ ছুড়ে বলেন, আজ যারা নিষেধাজ্ঞার কথা বলেন। ভিসানীতির কথা বলেন, তাদের দেশও ত্রুটিমুক্ত নয়। নিজেদের দেশে মানবাধিকার পদদলিত হচ্ছে। গনতন্ত্র, মানবাধিকারের পতাকা ভুলুন্ঠুতি হচ্ছে। কিছুই তারা করতে পারছে না। আমরা পরোয়া করি বাংলাদেশের জনগনকে। এছাড়া আমরা আর কাউকেই আমরা মানি না।’ 

তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠান 

এর আগেও বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের তাগিদ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউ, যুক্তরাজ্যের যৌথ প্রত্যাশার বিপরীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩ জুন’২৩ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমরা নিজের পায়ে চলব, নিজের দেশকে গড়ে তুলব। কারো মুখাপেক্ষী হয়ে না। কে আমাদের ভিসা দেবে না, কে আমাদের স্যাংশন দেবে- তা নিয়ে মাথাব্যাথা করে কোনো লাভ নেই। ২০ ঘণ্টা প্লেনে জার্নি করে আটলান্টিক মহাসাগর পাড় হয়ে ওই আমেরিকা না গেলে কিছু আসে যায় না। পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর আছে, অনেক মহাদেশ আছে। সেই মহাদেশের সঙ্গে মহাসাগর হয়ে আমরা যাতায়াত করব আর বন্ধুত্ব করব। আমাদের অর্থনীতি আরও মজবুত, উন্নত ও চাঙ্গা হবে।

তিনি আরো বলেন, কী করলে বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণ হবে, সেটা আমরা খুব ভালো করে জানি। সেটা মাথায় রেখেই আমরা কাজ করছি বলেই আজকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে উন্নত দেশ হবে। ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যানও আমরা করেছি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ ও ক্ষমতাসীন সরকারের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। কিন্তু এমন বন্ধুত্বে টানাপোড়েন শুরু ২০২১ সনের ডিসেম্বরে র‌্যাবের উপর যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশনকে কেন্দ্র করে। সরকার বহু দেনদরবার করেও কূলকিনারা করতে পারেনি। অনঢ় মার্কিন প্রশাসন। এর আগে বাইডেনের গণতান্ত্রিক সম্মেলনেও বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করেছে বাইডেন প্রশাসন। ওই থেকেই দূরত্ব বেড়ে যেতে শুরু করে। ওই ধারা বেড়েই চলেছে। 

বিবিসি’র সঙ্গে সেই সাক্ষাতকার 

গত মে মাসের মাঝামাঝিতে বিবিসি’র সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করে বলেছিলেন, আমেরিকা আমাকে আর ক্ষমতায় রাখতে চায় না। বিবিসি’র সাংবাদিক ইয়ালদা হাকিমের সঙ্গে সে সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৪ বছর ধরে দেশে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে। এ কারণেই আমরা উন্নতি করতে পারছি।’ বিবিসি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জানতে চায়, যুক্তরাষ্ট্র কেন বাংলাদেশের একটি বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে আপনি মনে করেন? এই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না, হয়তো তারা আমার কাজ অব্যাহত থাকুক, তা চায় না। আমি বাংলাদেশের জন্য যেসব উন্নতি করেছি, সেটা তারা হয়তো গ্রহণ করতে পারছে না। এটা আমার অনুভূতি। একটা পর্যায়ে সন্ত্রাস সব দেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছিল। আমাদের দেশে আমরা সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করেছি। এরপর মাত্র একটা ঘটনা ঘটেছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর পরিশ্রম করছে।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমেরিকায় কী ঘটছে, আপনি দেখতে পাচ্ছেন। সেখানে প্রায় প্রতিদিন একাধিক হত্যাকা- ঘটছে। স্কুল, শপিং মল, রেস্তোরাঁয় হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এমনকি স্কুল শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অথবা সশস্ত্র ব্যক্তির হাতে নিহত হচ্ছেন। আমার মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত নিজেদের ব্যাপারে আরও মনোযোগী হওয়া। তাদের দেশের কী অবস্থা? তাদের উচিত শিশুদের জীবন রক্ষা করা। তারা নিজেদের লোকজনের ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা যেসব অভিযোগ করেছে, আমরা তাদের কাছে প্রমাণ চেয়েছিলাম। তারা দেয়নি।’ শেখ হাসিনা বলেন বলেন, ‘আমি মনে করি, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা একটা খেলার মতো। এটা আমার কাছে এখনো পরিষ্কার নয়, কেন তারা আমাদের দেশের প্রতি নিষেধাজ্ঞা দিল?’  

‘সেন্টমার্টিন দিলে ক্ষমতায় থাকা যাবে’

গত ২১ জুন ’২৩ গনভবনে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ কাউকে লিজ দিলে ক্ষমতায় থাকতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু সেটা তাঁর দ্বারা হবে না। তিনি বলেন, ‘এই দেশের কোনো সম্পদ কারও কাছে বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল, কীভাবে? তখন তো গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। তাহলে এখন তারা দেশ বিক্রি করবে, নাকি সেন্ট মার্টিন বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে আসতে চায়? তিনি বলেন, ‘আমি এতটুকু বলতে পারি, আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা, আমার হাত থেকে এই দেশের কোনো সম্পদ কারও কাছে বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না। ওই গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও ক্ষমতায় থাকতে পারতাম। আর এখনো যদি আমি বলি, ওই সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বা আমাদের দেশ কাউকে লিজ দেব, তাহলে আমাদের ক্ষমতায় থাকতে কোনো অসুবিধা নেই। আমি জানি সেটা। কিন্তু আমার দ্বারা সেটি হবে না।’

কাকে লিজ দিলে ক্ষমতায় থাকতে অসুবিধা নেই, সে বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত কিছু বলেননি প্রধানমন্ত্রী। তবে তিনি এও বলেছেন, ‘আমাদের দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আমি কাউকে খেলতে দেব না, আমার দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই। আমার দেশের মাটি ব্যবহার করে কোনো জায়গায় কোনো সন্ত্রাসী কর্মকা- চালাবে, কাউকে অ্যাটাক (আক্রমণ) করবে বা এই ধরনের কাজ আমরা হতে দেব না। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি, শান্তিপূর্ণ সহযোগিতায় বিশ্বাস করি।’ 

উল্লেখ্য, গত ১৪ জুন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা রাশেদ খান মেনন দাবি করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি ‘রেজিম চেঞ্জ’র কৌশলের অংশ। তারা সেন্টমার্টিন চায়, কোয়াডে (কোয়াড্রিলেটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ) বাংলাদেশকে চায়। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারকে হটানোর জন্য তারা সবকিছু করছে। পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর প্রতিবাদ করেছিল। 

‘নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী দেশের কাছ থেকে কিছুই কিনব না’

গত ১৩ মে ’২৩ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর আইইবি প্রাঙ্গণে ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (আইইবি) পাঁচ দিনব্যাপী ৬০তম কনভেনশন উদ্বোধনকালে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যাদের দিয়ে আমরা জঙ্গিবাদ নির্মূল করি (র‌্যাব), তাদের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমরা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি বলেছি, যে যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, তাদের কাছ থেকে আমি (বাংলাদেশ) কিছু কিনব না।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনারা আমার কী করবেন? আমার বাবা-মা, ভাই সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। আমার আর হারানোর কিছু নেই। আমি শুধু আমার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’ 

সবশেষ...

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আজ হয়তো ক্ষমতায় রয়েছে তারা। কাল তারা ক্ষমতায় নাও থাকতে পারেন। কিন্তু আওয়ামী লীগকে সরকার পরবর্তি টার্ম বা তার পর আবার সরকারের ফিরলে দেশ পরিচালনা করতে হলে বন্ধুপ্রতীম দেশসমূহের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতেই হবে। গণতন্ত্রের পরিভাষা এমনই। জনগণের ইচ্ছার উপর সব নির্ভরশীল, দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে। কিন্তু ১৭ কোটি মানুষের দেশে বাংলাদেশের যে সম্পদ তা স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। বাংলাদেশকে উন্নয়ন সহযোগী অনেক দেশের উপর নির্ভর করতে হয়। বাংলাদেশের রেমিটেন্স আহরণের বড় মার্কেট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বহু দেশ। তৈরি পোষাকের রপ্তানি পণ্যও যায় ওইসব দেশে। সব মিলিয়ে চাইলেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউভূক্ত দেশসমূহকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। তাহলে সঙ্কটে পড়ে যেতে হবে বাংলাদেশের মানুষকে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, বন্ধুত্ব সবার সঙ্গে। সম্প্রতি যে ১২ লাখের উপর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ঠেলে দিয়েছে বাংলাদেশে সেই মায়ানমারের সঙ্গেও বাংলাদেশের নীতি ওটাই। কূটনৈতিকভাবে সমাধানে শেখ হাসিনার সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাজোটের সঙ্গে কেন এ টানাপোড়েন। কেন বাংলাদেশের কূটনীতি এখানে ব্যর্থ। কেনই বা এমন সঙ্কটে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদককে বন্ধুপ্রতীম দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার মত বাক্যবিনিময় করতে হচ্ছে। এগুলো নিয়ে সত্যিকার অর্থেই ভাবনায় পড়ে গেছে ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাকর্মী ও  দেশের জনগণও, এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না! 

শেয়ার করুন