২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০২:০৩:১১ পূর্বাহ্ন


রাশিয়ার যুদ্ধে সাহায্য করতে চীন ও ভারতের না
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৯-২০২২
রাশিয়ার যুদ্ধে সাহায্য করতে চীন ও ভারতের না রাশিয়ার সেনাবাহিনী


রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন যুদ্ধের শুরুতে যেভাবে রাশিয়া ভারতের সমর্থন লাভ করেছিল, তাতে সাম্প্রতিককালে চিড় ধরেছে। ভারত আমেরিকার সাথে সম্প্রতি ট্রেড পলিসি ফোরাম পুনরুত্থানের পর এবং ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে চীনের বিরূপ মন্তব্যের একদিন পর উজবেকিস্তানে এক আঞ্চলিক শীর্ষ বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির ভি. পুতিনকে গত শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছেন, ‘এটা যুদ্ধের সময় না।’ এই কথা পুতিনের তোতা মুখ ভোতা করে দিয়েছে। আগে পুতিন বলতো তারা একা নয় বিশ্বে। ভারত ও চীনের বড়াই করতো রাশিয়া কিন্তু চীনও সোজা সাপ্টা তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে দিয়েছে পুতিনকে। 

জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হয় গত ৭ মাস ধরে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ও ক্রমাগত সহিংস যুদ্ধে ৫৬০০ নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় ৭৯০০ লোককে বিকলাঙ্গ করা হয়েছে। চীন ও ভারত রাশিয়াকে অর্থনৈতিক সহায়তা দিলেও কোন সামরিক সহায়তা দেয়নি। পুতিন বার বার শি এর দরবারে সামরিক সাহায্য চেয়েছে কিন্তু পায়নি। অন্যদিকে আমেরিকা ইউক্রেনকে আধুনিক অস্ত্র সাহায্য দিয়েছে। ইতিমধ্যে ১৫.২ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সাহায্য পাঠিয়েছে আমেরিকা ইউক্রেনকে। গত সপ্তাহে আরও ২ বিলিয়ন ডলারের সাহায্য ঘোষণা করা হয়েছে। চীন রাশিয়াকে সামরিক সাহায্য দিয়ে আমেরিকার সাথে প্রক্সি ওয়ারে বা পরোক্ষ যুদ্ধে নামতে চায় না। রাশিয়ার অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে চীন ও ভারতের সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে। 

মি. মোদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট মি. পুতিনকে শুরুতেই বলেন, ‘আমি জানি যে, বর্তমানের যুগ যুদ্ধের নয়।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে খাদ্য ও জ্বালানি উন্নয়নশীল দেশগুলো চলার পথকে কঠিন করেছে। আজ আমরা একটা সুযোগ পেয়েছি কিভাবে শান্তির পথে এগুনো যায় তার আলোচনা করার।’

জনাব পুতিনকে যেভাবে কূটনৈতিক ঘা দিয়েছে নরেন্দ্র মোদি তা তার জন্য সহ্য করা কঠিন। পুতিন পরবর্তীতে কি পদক্ষেপ নেবে তার ইয়ত্তা নেই। তবে পশ্চিমা কূটনীতিকরা বিশ্বাস করে তার পরবর্তী এ্যাকশন আরো ধাম্বিক হবে। পুতিন গত শুক্রবার প্রেস কনফারেন্সে বলেন, ইউক্রেনে সাম্প্রতিক মিশাইল আক্রমণ হুশিয়ারি মূলক। ভবিষ্যতে তা আরও জঘণ্য হতে পারে। তবে তিনি প্রেস কনফারেন্সে ‘বেসামরিকীকরণ’ ও ‘বেনাজীকরণ’ শব্দগুলো ব্যবহার করেননি। আসলে পুতিন ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধ শুরু করে সমগ্র ইউক্রেনে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য। তিনি বলেন, যখন প্রধান লক্ষ্য ‘ডোনবাস’ দখল করে রাখা। পুতিন দাবি করে যে, ইউক্রেন সন্ত্রাসী কর্মকা- চালাচ্ছে রাশিয়ার মধ্যে। আর তা মস্কো প্রতিশোধ নেবে। রাশিয়ার আক্রমণ ইউক্রেনে প্রচুর ক্ষতি করছে। কিয়েভে আক্রমণের পর সেখানে কবরস্থানে ৪৪৫ কবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। আমেরিকা সেখানে সরাসরি যুদ্ধ করছে না। চালাচ্ছে অস্ত্র দিয়ে, সামরিক সরঞ্জামাদি দিয়ে পরোক্ষ যুদ্ধ। আর সেখানে যদি চীন ও ভারত সামরিক সহযোগিতা দেয় তা হবে আমেরিকার সাথে পরোক্ষভাবে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া। বিষয়টা কি আমেরিকা, চীন, কিংবা ভারতের কাছে এতটা সহজ হয় তারা আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে?

রাশিয়ার যুদ্ধ উন্মাদনার বিরুদ্ধে চীন ও ভারতের নেতিবাচক মনোভাব ইউক্রেনে যুদ্ধ বিরতির জন্য এক সম্ভাব্য ক্ষেত্রকে উজ্জ্বল করে তুলেছে। পুতিন তারপরও বলছে তারা পুরো সামরিক বাহিনী নিয়োগ করে ফাইট করছে না। ইদানীং ইউক্রেন থেকে রাশিয়া পিছু হটছে। যদি রাশিয়া ভারত  ও চীনের অর্থনৈতিক সাহায্য না পায় তাহলে তাদের সমস্যা আরও দীর্ঘায়িত হবে। আমেরিকার স্টেট সেক্রেটারি ব্লিনকেন বলেছেন, চীন ও ভারতের ছাপ রাশিয়ার যুদ্ধ উন্মাদনা বন্ধ করতে সহায়ক হবে।

শেয়ার করুন