২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৪:৪০:৩৩ পূর্বাহ্ন


আর ‘একতরফা’ নির্বাচন করতে দেয়া হবে না-মির্জা ফখরুল
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৭-২০২৩
আর ‘একতরফা’ নির্বাচন করতে দেয়া হবে না-মির্জা ফখরুল


আর ‘একতরফা’ নির্বাচন করতে দেয়া হবে না বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার সকালে নয়া পল্টনে দলের স্থায়ী কমিটির অসুস্থ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও রফিকুল ইসলাম মিয়ার আশু আরোগ্যে এক দোয়া মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব সরকারের প্রতি এই হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
 
তিনি বলেন, ‘‘ আমরা আন্দোলন ইচ্ছা করে করছি না, বাধ্য হয়ে করছি। আমরা তো চাই না। আমরা তো নির্বাচন করেই এই পরিবর্তন চাই। কিন্তু নির্বাচন তো আপনি করতে দিচ্ছেন না। নির্বাচন আপনি নিজে নিজে করে নিয়ে চলে যাচ্ছেন আপনারা মতো করে। সেই ব্যবস্থা তো চলতে পারে না। সেই কারণে আমরা বার বার করে বলছি, আবারও বলছি, শান্তিপূর্ণভাবে বলছি এদেশটাকে বাঁচানোর জন্য এখনো সময় আছে আপনাদের শুভ বুদ্দির উদয় হোক।আপনারা জনগনের যে দাবি সেই দাবি যে একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা নির্বাচনের জন্য পদত্যাগ করে একটা নির্বাচন দিন।সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংকট দূর হবে বলে আমরা মনে করি, দেশের মানুষও বিশ্বাস করে।”
 
সরকার পরিবর্তনে চলমান আন্দেোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ের কর্মসূচি বুধবার ঘোষণা করা হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আপনারা শুনেছেন যে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব(তারেক রহমান) সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এবং আমাদের যে যুগপত আন্দোলন হচ্ছে সেই যুগপত আন্দোলনে সম্পৃক্ত সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো, জোটগুলো আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আগামী ১২ তারিখে(বুধবার) আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে আমাদের নতুন গণতন্ত্রের জন্যে যে যাত্রা, একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্যে নতুন যে আ্ন্দোলনের যাত্রা তার ঘোষণা আমরা দেবো। আমরা আল্লাহতালার কাছে দোয়া চাইব, তিনি যেন শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচিগুলো পালন করতে পারি সেই শক্তি দেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই যেন আমরা এদেশের মানুষকে মুক্ত করতে পারে সেই দোয়া আমরা চাই এবং আল্লাহতালা যেন আমাদের নেতাদের রোগমুক্ত করেন, আমাদের দেশনেত্রী বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের নয়নের মনি বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনেন এবং আমাদের নেতা তারুণ্যে প্রতীক যিনি আজকে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবকে যেন আমাদের মাঝে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন সেই দোয়া আমরা চাইব।”
 
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় এই মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন অসুস্থ হয়ে বর্তমান সিঙ্গাপুরে ন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি হসপিটালে চিকিতসাধীন আছেন।দীর্ঘদিন অসুস্থ হয়ে বাসায় আছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া।
 
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ এই অবৈধ নিপীড়নকারী নির্যাতনকারী শেখ হাসিনার সরকার…তারা অত্যন্ত সচেতনভাবে গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে অসুস্থ করেছে, যারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেন, কাজ করেন রাজনৈতিক দলগুলো তাদেরকে হত্যা করেছে, অসুস্থ করেছে। সবচেয়ে বড় যে ক্ষতি তারা করেছে গোটা জাতিকে অসুস্থ করে ফেলেছে। এই রাষ্ট্রকে তারা একটা অসুস্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আমরা আজকে অনেকেই অসুস্থ। ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার (স্থায়ী কমিটির সদস্য) অসুস্থ। নজরুল ইসলাম খান(স্থায়ী কমিটির সদস্য) অসুস্থ। এই যে রিজভী সাহেব(রুহুল কবির রিজভী) অত্যন্ত অসুস্থ। তারপরে কিন্তু কেউ থেমে নেই। আমরা কাজ করছি, সংগ্রাম করছি, মানুষের কাছে যাচ্ছি। লক্ষ্য একটাই আমাদেরকে এই অসুস্থ রাষ্ট্রকে সুস্থ করা এবং জাতিকে এই অসুস্থতার হাত থেকে মুক্ত করা।আসুন আমরা আল্লাহতালার কাছে দোয়া চাই তিনি যেন আমাদেরকে কামিয়াব করেন, সফল করেন।”
 


‘নেতৃবৃন্দের ওপর নির্যাতন’
 
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ কেনো আজকে আমাদের নেতৃবৃন্দ এরকম অসুস্থ হচ্ছেন। এই যে নিপীড়ন-নির্যাতন আমাকে ম্যাডামে নিজে বলেছেন, তিনি… তাকে যখন পুরনো সেন্ট্রাল কারাগারে রাখা হয়েছিলো আমরা পরে যখন কারাগারে গেলাম, আমরা শুনলাম কারাগারের লোকজনের কাছে একটা শ্যাঁত স্যাতে পুরনো ঘর আপনার দেয়াল দিয়ে পানি পড়ছে, ইদুর দৌঁড়াচ্ছে … সেখানে এই মহান নেত্রীকেও রাখা হয়েছে (আবেগপ্রবণ কন্ঠে)। তার চিকিতসার কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। বহু বার দেন-দরবার করে এখানে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন আছেন।ডাক্তারররা প্রেস কনফারেন্স করে বলেছেন, যে দ্রুত তার চিকিতসা দরকার। তার চিকিতসা করে নাই। যখন করোনা শুরু হয়ে গেলো তখন তাকে বাসায় পাঠাচ্ছে।আবার উনি(প্রধানমন্ত্রী) বলে কি আমি করুনা করেছি। তার দয়ায় নাকি ….।”
 
তিনি বলেন, ‘‘ আমরা তো দয়া চাইনি। জাস্টিস চেয়েছি, ন্যায় বিচার চেয়েছি….। এখানে আমরা কোনো রাজত্বে বাস করি না। রাজা-রানীর রাজত্বে বাস করি না।আমরা মনে করি ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম সেই যুদ্ধ করেছিলাম একটা স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। এই বৃথা এই বেদনা আমাদের। এই যন্ত্রণা এগু্লোকে আমাদের শক্তিতে রুপান্তরিত করতে হবে।”
 
মিলাদ মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী উপস্থিত ছিলেন।
 
দোয়া মাহফিলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নাল আবেদীন ভিপি জয়নাল, আবদুল খায়ের ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ফজলুল হক মিলন, কামরুজ্জামান রতন, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরাফত আলী সপু, মোস্তাক মিয়া, হারুনুর রশীদ, আবদুল খালেকসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
 
পরে নেতৃবৃন্দের আশু আরোগ্য কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
 

শেয়ার করুন