২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ১১:০০:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


টি২০ বিশ্বকাপের শিরোপা নেবে কে?
পাকিস্তান না ইংল্যান্ড
সালেক সুফী,অস্ট্রেলিয়া থেকে
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-১১-২০২২
পাকিস্তান না ইংল্যান্ড


ক্রিকেট সাগরের অনেক উথাল পাথাল তরঙ্গ পেরিয়ে টি২০ বিশ্বকাপ ২০২২ পৌঁছেছে শেষ পর্বে। কাল অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের মনোরম শহর মেলবোর্নের আইকনিক এমসিজিতে পসরা সাজিয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সম্ভব্য আকর্ষনীয় এক ফাইনাল। শিরোপা নির্ধারনী এ ফাইনাল হবে ক্রিকেট জননী ইংল্যান্ড আর চিরদিনের নিশ্চিত ভাবে অনিশ্চিত পাকিস্তান দলের মধ্যে।


গুনে ,মানে অভিজ্ঞতায় ,আর টীম রসায়নে দুটি দল সমান ভারসাম্যপূর্ণ। এমনি দুই দলের ক্রিকেট মহারণ জিতে নিতে পারে যে কোনো দল। যদিও ইতিহাসের উদাহরণ তুলে অনেকেই ভাবছেন ১৯৯২ এমসিজিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ ফাইনালের পুনরাবৃত্তি হতে পারে। ইমরান খানের কর্নার্ড টাইগারদের মতো এবারেও বাবর আজমের পাকিস্তান জিতে নিতেও পারে টি ২০ বিশ্বকাপ। ইংল্যান্ড ,পাকিস্তান দুটি দল একবার করে জয়ী হয়েছে টি২০ বিশ্বকাপ। যে জিতবে তাদের হবে এটা দ্বিতীয় ট্রফি। 


নজর থাকবে/ শাহীন শাহ আফ্রিদি


প্রাক টুর্নামেন্ট বিশ্লেষণে অস্ট্রেলিয়া , ইংল্যান্ড, পাকিস্তান , ভারতকে ফেভরিট ধরা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম ম্যাচে শিরোপাধারী স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া বিশাল ব্যাবধানে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে হেরে যাওয়ায় আর শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া আফগানিস্থানকে বড় ব্যাবধানে পরাজিত করতে বার্থ হওয়ায় ছিটকে যায়। এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেদারল্যান্ড হারিয়ে দেয়ায় সুযোগ আসে পাকিস্তানের।


নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে পৌঁছে যায় সেমিফাইনালে। সেমিতে অনেকটা সহজেই হারিয়ে আসে নিউজিল্যান্ডকে। অপরদিকে ইংল্যান্ড সেমিতে হারিয়েছে একেবারে সহজেই ভারতকে। কোনো প্রতিদ্বন্দিতাই গড়তে পারেনি ভারতীয়রা। দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছে ইংল্যান্ড। না হয় হেভিওয়েট ভারতের মত একটা দলকে ১০ উইকেটে হারানো তো চাট্টিখানী কথা নয়। 


১৬ দল নিয়ে অনুষ্ঠিত এবারের বিশ্বকাপে ৮ টি দল অস্ট্রেলিয়া , ভারত,নিউজিল্যাণ্ড ,ইংল্যান্ড , দক্ষিণ  আফ্রিকা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ সরাসরি সুপার ১২ খেলেছে।  বাকি আটটি দল দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ভিক্টোরিয়ার জিলং আর তাসমানিয়ার হোবার্টে খেলেছে কোয়ালিফাইং রাউন্ড। সেখান থেকে ৪ টি দল শ্রীলংকা ,জিম্বাবোয়ে , আয়ারল্যান্ড উঠে এসেছে সুপার ১২।


এবারের টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় অর্জন আইসিসি সহযোগী দলগুলোর ভয় ডর হীন খেলা। নামিবিয়া হারিয়েছে শ্রীলংকাকে , স্কটল্যান্ড , নেদারল্যান্ড হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। অবশেষে  ছিটকে গেছে দুবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সুপার ১২ অনেক ক্রিকেট নাটক দেখতে পায়।  আয়ারল্যান্ড হারিয়ে দেয় ইংল্যান্ডকে, নেদারল্যান্ড হারায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে ,জিম্বাবুয়ে হারায় পাকিস্তানকে। নিতান্ত দুর্ভাগ্যের কারণে বাংলাদেশ হারাতে পারেনি ভারতকে। 



নজর থাকবে/ অ্যালেক্স হেলস ও জস বাটলার 


সেমী ফাইনালে পাকিস্তান নিউজিল্যান্ডকে আর ইংল্যান্ড ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে উঠেই এসেছে যোগ্য দুটি দল হিসাবে ফাইনালে। দুটি দল গুনে,মানে ,রসায়নে সমশক্তির। শাহীন আফ্রিদি, হারিস রউফ , নাসিম শাহ ,ওয়াসিম জুনিয়র, সাদাব খান ,মোহাম্মদ নেওয়াজ হয়তো এগিয়ে আছে বোলিং শক্তিতে ক্রিস ওকস , জর্দান, কুরান , আদিল রাশিদ , লিভিংস্টোন , মঈন আলী  থেকে চুলচেরা ব্যাবধানে। একই ভাবে বাটলার ,হেলস , স্টোকস ,মালান , মঈন আলী তেমনি এগিয়ে বাবার আজম , রিজওয়ান, শান মাসুদ , ইফতিখার ,শাদাব খান থেকে। ইংল্যান্ডের সুবিধা ওদের ১১ জনই ব্যাটিং করতে সক্ষম। কাউন্টিতে এভাবেই খেলে তারা অভ্যস্ত। পাকিস্তান ব্যাটিঙে লেজ আছে। পাকিস্তানের সুবিধা হলো শেষ মুহূর্তে জ্বলে উঠেছে টিম। একই ভাবে যেভাবে ভারতের বিরুদ্ধে রুদ্র মূর্তি নিয়ে খেলেছে ইংল্যান্ড তাতে ওদের পিছিয়ে রাখা যাবে না। 

দুটি সময় শক্তির দলের তুমুল লড়াই হবে

কেউ কেউ ১৯৯২ ইমরান খানের দলের সঙ্গে বাবর আজমের দলের সাদৃশ্য দেখছেন। সেবারেও কিন্তু পাকিস্তান গ্রুপ পর্যায় থেকে ছিটকে যেত যদি না ইংল্যান্ডের সঙ্গে গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত না হতো। সেবারেও পাকিস্তান সেমী ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল উড়তে থাকা নিউ জিল্যান্ডের। ইনজামাম নামের এক তরুণ মারকাটারি ব্যাটিং করে জয় এনে দিয়েছিলো পাকিস্তানকে। সেবারেও ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ইংল্যান্ড। জাভেদ মিয়াদাদ ও ইমরান খানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর তরুণ ওয়াসিম আকরাম, আকিব জাভেদ এর ছিল অসাধারন বোলিং। এর মধ্যে ওয়াসিম আকরামের দুটি ইনসুইং বল ম্যাচের ভাগ্য অনেকটাই গড়ে দিয়েছিলো। এবারেও কিন্তু পাকিস্তান দলে আছে ওয়াসিম আকরামের মতো বোলিং করা শাহীন শাহ আফ্রিদি। আছে মোহাম্মদ হারিস , শাদাব খানের মতো আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান। 

বাজির ঘোড়া হয়তো কিছুটা পাকিস্তানের অনুকূলে।  কিন্তু ইংল্যান্ড জয়ী হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না কারন এবারের ফাইনালে খেলা দুটি দলই দুর্দান্ত খেলেছে। ফলে ট্রফি পাবার যোগ্যতা দুই দলেরই।  


শেয়ার করুন