২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৬:৪৪:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


শেখ হাসিনার বিকল্প কে?
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-১২-২০২২
শেখ হাসিনার বিকল্প কে? শেখ হাসিনা


মেনে নিচ্ছি বাংলাদেশে এখন অনেক সমস্যা সংকট আছে, ব্যাপক উন্নয়নের পাশাপাশি সীমাহীন দুর্নীতি রন্ধ্রে রন্ধ্রে বাসা বেঁধেছে। সমস্যা সংকট উত্তরণে সরকার সীমিত সামর্থ্যরে মধ্যে চেষ্টা করছে। কিন্তু সবাইকে প্রশ্ন করি সংকট উত্তরণে শেখ হাসিনার বিকল্প কোথায়? 

বিরোধীদলে প্রশ্ন নেই, খোদ আওয়ামী লীগেই কেউ নেই। বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে রাজনীতি থেকে রাজনীতিকরা নির্বাসিত, যেখানে সারাজীবন সরকারি সুবিধাভোগী আমলাগোষ্ঠী আর দুর্নীতির মাধ্যমে শতকোটি টাকার অবৈধ অর্থের মালিক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে সেখানে সবাইকে সামাল দিয়ে শেখ হাসিনা যেভাবে দেশে উন্নয়নের ধারা অক্ষুণ্ণ রেখেছেন, তাকে সাধুবাদ দিতেই হয়। তবে পরবর্তী সময়ে সরকার গঠন করলে তাকে অবশ্যই তিন টার্মে ধারাবাহিক সরকার পরিচালনার সাফল্য ব্যর্থতার সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে। নিরঙ্কুশ আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। 

আমি ১৯৭৭ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশে জ্বালানি সেক্টরে কাজ করার সময় জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কাজ করেছি। দুটি নিরপেক্ষ কেয়ার টেকার সরকার দেখেছি। যদি তুলনা করে বলতে হয়, আমার কাছে ১৯৯৬-২০০১ আওয়ামী লীগ শাসিত সরকারের সময়টি সেরা মনে হয়েছে নানা কারণে। আর সবচেয়ে ব্যর্থ দুর্নীতি পরায়ণ সময় ছিল ২০০১-২০০৬। দুর্নীতিগ্রস্ত বিএনপি-জামাত অপশাসকদের সময়ে আমার চাকরি অন্যান্যভাবে কেড়ে নেয়ায় আমি ২০০৫ থেকে এযাবৎ প্রবাসে স্থায়ী হয়ে নানা দেশে জ্বালানি পরামর্শক বা পেশাদার হয়ে কাজ করছি। বাংলাদেশে নিয়মিত এসে নানা উন্নয়ন প্রকল্পের খোঁজখবর রাখছি। ২০০৯ থেকে ২০২২ বাংলাদেশ পাল্টে গেছে উন্নয়নের পথপরিক্রমায়। যদি শুধু দুর্নীতির লাগাম ধরা যেতো, তাহলে উন্নয়নের সুফল পুরোপুরি সাধারণ জনগণ আরো অধিক পেতো।  

ধরুন, পদ্মা বহুমুখী সেতুর কথা। এই সেতু নিজেদের অর্থে সফলভাবে সম্পাদনে শেখ হাসিনার সাহস ও দৃঢ়তাকে কীভাবে অস্বীকার করবেন? দক্ষিণ বাংলার ১৯ জেলার ৯ কোটি মানুষ কেন শেখ হাসিনার বিকল্প খুঁজবে? 

যে দেশে এক সময় ৬-৮-১০ ঘণ্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং ছিল নিত্যদিনের ঘটনা, সে দেশের সব মানুষ এখন বিদ্যুৎ সরবরাহের আওতায়। মেনে নিচ্ছি জ্বালানি সংকট, সঞ্চালন ব্যাবস্থার সীমাবদ্ধতা আর দুর্নীতির কারণে জ্বালানি ক্ষেত্রে অস্থিরতা। কিন্তু জ্বালানি বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপি জামাত সরকারের কি সাফল্য ছিল ওদের সময়ে। বর্তমান সংকট উত্তরণ করার জন্য বিএনপি জামাত অবশ্যই আওয়ামী লীগের বিকল্প হতে পারে না। তবে শেখ হাসিনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে পেশাদারদের উপেক্ষা করে আমলাদের দিয়ে জ্বালানি সেক্টর চালানো হলে সহসা সংকট উত্তরণ হবে না। নিজেদের কয়লা গ্যাস সম্পদ অনুসন্ধান উন্নয়ন বহুমাত্রায় উন্নয়ন না করে কিছু সিন্ডিকেটের স্বার্থে আমদানিকৃত জ্বালানির দিকে ঝুঁকে থাকলে জ্বালানি সঙ্গত সরকারকে ক্ষমতায় টিকে থাকার মূল চ্যালেঞ্জ হবে। 

আরেকটি বিশেষ ক্ষেত্র দুর্নীতি দমন। অনেকে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন নিজেরাই দুর্নীতিগ্রস্ত। বিশেষত দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের চলে বলে কোলে কৌশলে প্রহরা দিচ্ছে দুদক। নতুন টার্মে ক্ষমতায় আসলে শেখ হাসিনাকে অবশ্যই দুর্নীতি দমনে আপসহীন হতে হবে। দেশের বাইরে পাচার হয় কোটি কোটি টাকা ফিরিয়ে আনার কার্যকরি ব্যবস্থা নিতে হবে। নিজের পরিবার বা স্বজনদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো তলিয়ে দেখতে হবে। সরকার প্রধানের আশপাশের সব মানুষ কিন্তু ধোয়া তুলসী পাতা নয়, এটাও সরকারপ্রধান নিজেও খুব ভালো জানেন।

পরিশেষে বলি, সরকারপ্রধানকে বর্তমান বিরোধী মতো দমনের বর্তমান পথ পরিবর্তন করতেই হবে। জনগণ সচেতন। ২০২৩ শেষ বা ২০২৪ জাতীয় নির্বাচন অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছ নিরপেক্ষ হতেই হবে। তখন বিতর্কিত ভূমিকার ব্যর্থ কিছু মন্ত্রীর অযাচিত বচনগুলো বুমেরাং হতেই পারে। তবে শেষ কথা বলি, ভিন্নমত থাকতেই পারে। যুক্তিও হয়তো অনেক আসবে। তবে বিপুল সফলতার পাশাপাশি অনেক ব্যর্থতা সত্ত্বেও দেশ পরিচালনায় আমি শেখ হাসিনার বিকল্প দেখছি না কোনোভাবেই।

শেয়ার করুন