২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৪:৫৬:০৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


খাবার আনতে গিয়ে ২ মিনিটে গাড়ি উধাও
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-১২-২০২২
খাবার আনতে গিয়ে ২ মিনিটে গাড়ি উধাও


ঘটনাস্থল বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটস। ঘটনা ৫ ডিসেম্বর রাত ১০টা ২৫ মিনিট। বাংলাদেশি কমিউনিটির অত্যন্ত পরিচিত মুখ এবং চাঁদপুরের সন্তান শাহ আব্দুস সোবহান  (সোহাগ)। তিনি জানান, আমার বাসায় সবাই অসুস্থ। তাই রান্নাবান্না হয়নি। সেই সাথে আরেকটি ছোট্ট অনুষ্ঠানে আমার খাবার দেয়ার কথা ছিলো। আমি খাবারের অর্ডার দিয়েছিলাম জ্যাকসন হাইটসের মামা’স রেস্টুরেন্টে। তারা খাবার তৈরি করে, আমার দায়িত্ব ছিলো টাকা দিয়ে খাবার পিকআপ করা। আমি কথা অনুযায়ী, রাত প্রায় ১০টা ২৫ মিনিটের সময় জ্যাকসন হাইটসে আসি এবং মামা’স রেস্টুরেন্টের ঠিক উল্টোদিকে ৭৩ স্ট্রিটে বিপ্লব শাহ দোকানের সামনে গাড়ি রাখি। ওই সময় বিপ্লব শাহসহ আরো কয়েকজন ছিলেন। রাস্তায় প্রচুর বাঙালি। এই সময় সাধারণত রাস্তার উভয় পাশে বাঙালিরা দাঁড়িয়ে গল্প করেন। আমার গাড়িটি ছিলো ২০১৯ সালের হোল্ডা পাইলট। গাড়ির মূল্য প্রায় ৪০ হাজার ডলার। আমি গাড়িটি পার্কিং করেই মামা’স রেস্টুরেন্টে যাই খাবার আনতে। আমি খাবারের টাকা দিয়ে গাড়ির কাছে এসে দেখি আমার গাড়ির জায়গায় আরেক বন্ধু তার গাড়ি পার্কিং করছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, এখানে তো আমার গাড়ি ছিলো। আমার বন্ধু বললো, এখানে তো আমি কোনো গাড়ি দেখিনি। তার কথা শুনে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। আমি বুঝতে পারছি না, আমার গাড়ি কোথায়? তিনি বললেন, খাবারের টাকা দিতে আমার ২ থেকে ৫ মিনিট সময় লেগেছে। এর মধ্যেই আমার গাড়ি হাওয়া! আমি রীতিমতো বেআকে হয়ে গেলাম। এতো বাঙালির উপস্থিতিতে এবং এতো দ্রুত সময়ে এটা কী করে সম্ভব?

আমি সাথে সাথে পুলিশকে কল করি। পুলিশ আসার পর আমি ঘটনা বর্র্ণনা করি। ভাগ্য ভালো যে আমার গাড়ির ড্যাশ বোর্ডে ক্যামেরা ছিলো। পুলিশ সাথে সাথে রেড অ্যালার্ট জারি করে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ রেড অ্যালার্ট জারির পর তারা গাড়িটি কুইন্স বুলেবার্ড এবং ৭১ অ্যাভিনিউয়ে রেখে চলে যায়। তিনি বলেন, পুলিশ গাড়ি উদ্ধার করার পর আমাকে খবর দেয়। আমি তিনদিন পর গিয়ে মেরিক বুলেবার্ড থেকে গাড়ি আনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা আমার গাড়ির নম্বর প্লেট খুলে নিয়ে যায়। সেই সাথে আমার মানিব্যাগ নিয়ে যায়। নগদ অর্থসহ প্রায় ১০-১২ হাজার ডলারের জিনিসপত্র নিয়ে যায়। কারা এই কাজ করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ ক্যামেরায় দেখেছে, ওরা মোট ৪ জন স্প্যানিশ ছিলো। আমি গাড়িটি পার্ক করে চলে যাবার পর ২ জন অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলো। সুযোগ বুঝেই চারজন গাড়িটি নিয়ে পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, আমার ভুল হয়েছিলো, আমি গাড়িটি চালু অবস্থায় রেখেই চলে যাই। আমার মতো এভাবেই কয়েক মিনিটের জন্য অনেকেই দোকানে যান। চা আনতে যান বা বাজার করতে যান। কিন্তু দুই মিনিটের মধ্যেই গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাবে এটা আমার ধারণার বাইরে ছিলো। এভাবে অনেকেই হয়তো জ্যাকসন হাইটসে বা বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে পার্কিং করে চলে যান। আমিও অনেকবার গিয়েছি, কখনো এমন হয়নি। আমি মনে করি এভাবে গাড়ি চালু রেখে কারো চলে যাওয়া উচিত নয়। আমি যে ভুল করেছি এটা আমি বুঝতে পেরেছি। আমার মতো আর কেউ যেন বেআকে না সাজেন, সেই জন্য সবাইকে সতর্ক করছি। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে আমেরিকার অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। যে কারণে এসব ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। তারা গাড়ি চুরি করে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে পার্টসগুলো খুলে খুলে বিক্রি করে দেয়। এদের সংঘবদ্ধ গ্রুপ রয়েছে। তাই সবার সতর্ক হওয়া উচিত। এ ছাড়াও কমিউনিটিতে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অনেকেই গাড়ির চাকা খুলে বা গাড়ির পার্টস খুলে নিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে জ্যাকসন হাইটস এবং জ্যামাইকা এলাকায় এসব ঘটনা অহরহ ঘটছে। সুতরাং সবার সতর্ক হওয়া উচিত। সোহাগ আরো জানান, একজন ব্যক্তি নর্দার্ন বুলেবার্ডের একটি ব্যাংকের এটিএম থেকে অর্থ তুলে পকেটে ঢাকানোর আগেই দৃর্বুত্তরা তাকে আক্রমণ করে এবং তার কাছ থেকে পুরো অর্থ নিয়ে যায়। সময় যেহেতু খারাপ সেহেতু সবার উচিত ব্যাংক থেকে বা এটিএম থেকে রাতের বেলায় অর্থ উঠানোর সময় আশপাশের অবস্থা দেখা উচিত। তাকে কেউ ফলো করছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা উচিত। সতর্কভাবে চলাফেরা করা উচিত।

শেয়ার করুন