বাংলাদেশে নিয়ুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ঘটনায় ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানকে ডেকে পাঠানো হয়েছে
ডোনাল্ড লু’র দফতরে।
সেখানে রাষ্ট্রদূত ইমরানকে পিটার হাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন
বাইডেন প্রশাসনের প্রভাবশালী কর্মকর্তা ডোনাল্ড লু। গত ১৪
ডিসেম্বর ঢাকার শাহবাগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে
নিখোঁজ বিএনপির এক নেতার বাসায়
গিয়েছিলেন পিটার হাস। সেখানেই তিনি
অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার সম্মুুখীন হন। মায়ের ডাক
নামে এক গ্রæপ
রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে এবং তার গাড়িকে
আটকানোর চেষ্টা করেন। বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন পিটার হাস।
সাথে সাথেই বিষয়টি দৃষ্টিতে আনে মার্কিন প্রশাসন।
তারা সাথে সাথেই উদ্বোগ
প্রকাশ করেন। অন্যদিকে পিটার হাস যেখান থেকে
চলে যান সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
দফরে। পিটার হাস পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.
এ কে আব্দুল মোমেনকে
বিয়টি জানান। বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি
নিরাপত্তাহীনতার কথা জানান।
এই ঘটনায় গত ১৫ ডিসেম্বর
স্টেট ডিপার্টমেন্টে ডেকে পাঠানো হয়
ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানকে। জানা গেছে, রাষ্ট্রদূত
ইমরান পূর্ব নির্ধারিত সময়ে দূতাবাসের কয়েকজন
কর্মকর্তাকে নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টে
যান। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর স্টেট
ডিপার্টমেন্টের মধ্য ও দক্ষিণ
এশিয়া বিষয়ক প্রভাবশালী কর্মকর্তা ডোনাল্ড লু’র সাথে
বৈঠক করেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন
মোমেন ১৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়
গণমাধ্যমকে বলেন, এটা ঠিক তলব
ছিল না. বাংলাদেশ দূত
কনসালটেশনে গিয়েছিলেন। এ ঘটনায় বাংলাদেশ
কোনো প্রেসার বা চাপ বোধ
করছে কি-না? কিংবা
উদ্বিগ্ন কি-না? এক
সম্পূরক প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘না,
আমরা চাপ বা উদ্বিগ্ন
নই। বোধহয় আপনারাই (মিডিয়া) বেশি উদ্বিগ্ন।’ ওয়াশিংটনে
বাংলাদেশ দূতের সঙ্গে মার্কিন মন্ত্রীর বৈঠকের বিস্তরিত না জানালেও শাহীনবাগে
কী ঘটেছিল এবং তার প্রেক্ষিতে
মার্কিন প্রশাসনের তৎপরতার বিস্তারিত তুলে ধরে রোববার
একটি ই-মেইল বার্তা
প্রচার করেছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস।
জানানো
হয়, ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের সঙ্গে
পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকটিতে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রদূত। নিরাপত্তাজনিত কারণে বৈঠকটি শেষ না করেই
শাহীনবাগ ত্যাগ করতে হয়। কারণ রাষ্ট্রদূত
যে বিল্ডিংয়ে অবস্থান করছিলেন তার প্রবেশদ্বারে কিছু
বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছিলেন। তারা
ভবনটিতে প্রবেশের চেষ্টা করেন, এতে বৈঠকে বিঘœ
ঘটে। অন্যরা রাষ্ট্রদূতের গাড়ি ঘেরাও করে
রেখেছিল। মুখপাত্র জানান, তারা ঘটনার পরপরই
সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি জানিয়েছেন। ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসকেও তারা বিষয়টি জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের
পররাষ্ট্র নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে মানবাধিকার রয়েছে জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, এ কারণে মার্কিন
দূতাবাস মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ক অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেয় এবং
নিয়মিত মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে থাকে।
‘মায়ের কান্না’ (যারা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে
দেখা করার জন্য শাহীনবাগে
জড়ো হয়েছিল) সংগঠন কখনোই (সম্প্রতিক বছরগুলোতে) দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
এদিকে
রাতে দায়িত্বশীল একটি ক‚টনৈতিক
সূত্র জানায়, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত
মোহাম্মদ ইমরানকে পিটার ডি হাসের নিরাপত্তা
নিয়ে উদ্বেগের কথা জানালে রাষ্ট্রদূত
ইমরান ঢাকার অবস্থান ও পুরো ঘটনা
ব্যাখ্যা করেন। প্রয়োজনে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তা বাড়ানোর আশ্বাসও দেন তিনি।