২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৬:০২:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


দেশ-বিদেশে প্রতিবাদ, পুলিশ কর্মকর্তা ছুটিতে
পুলিশের গুলিতে ফয়সাল নিহতের ঘটনায় তোলপাড়
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০১-২০২৩
পুলিশের গুলিতে ফয়সাল নিহতের ঘটনায় তোলপাড় ফয়সাল হত্যার বিচারের দাবিতে বাংলাদেশে বিক্ষোভ


যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ক্যামব্রিজ পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক তরুণ নিহত হয়েছেন। গত ৪ জানুয়ারি ক্যামব্রিজের চেস্টনাট স্ট্রিটে সাঈদ ফয়সাল (২০) নামের এই তরুণ নিহত হন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সাঈদ ফয়সাল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান। ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে বসবাসকারী তাঁর চাচা সেলিম জাহাঙ্গীর ৫ জানুয়ারি রাতে বলেন, ফয়সাল এখানকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজও করতেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা এলাকায়। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রেই ফয়সালের জন্ম। ‘আমার ভাতিজা শান্তশিষ্ট, ভালো ছেলে। তাকে পুলিশ কেন গুলি করলো বুঝতে পারছি না।’ ফয়সালের নামাজে জানাজা গত ৭ জানুয়ারি দুপুরে ইসলামিক সেন্টার অব বোস্টনে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তাকে সেখানেই দাফন করা হয়।

সিবিএস নিউজের খবরে বলা হয়েছে, বুধবার বেলা সোয়া ১টার দিকে ক্যামব্রিজের একজন বাসিন্দা ৯১১-এ ফোনে করে জানান একজন ব্যক্তি একটি অ্যাপার্টমেন্টের জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়েছেন। তাঁর হাতে চাপাতির মতো ধারালো অস্ত্র রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। পুলিশ গিয়ে সিডনি স্ট্রিটের একটি ভবনের পেছনে ওই ব্যক্তিকে দেখতে পায়। পরে জানা গেছে, তিনি ২০ বছর বয়সী সাঈদ ফয়সাল। পুলিশ যাওয়ার পর ফয়সাল অস্ত্র হাতে সেখান থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে দেখা গেছে তাঁর একটি এক ফুট লম্বা একটি ছোরা ছিল। আরো জানা যায়, ওই সময় ফয়সালের গায়ে কোনো পোশাক ছিলো না। সে বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। মাত্র কয়েক বছর আগে তারা আমেরিকায় এসেছিলেন।

 মিডলসেক্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিস এ ঘটনার তদন্ত করছে। অ্যাটর্নি মারিয়ান রায়ান বলেছেন, ফয়সাল যখন অস্ত্র নিয়ে ভয় দেখাচ্ছিল তখন তাঁকে আটকানোর জন্য বেশ কয়েকবার বাধা দেয়া হয়েছিল। তবে ফয়সাল ছোরা নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের দিকে তেড়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, একজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্র ব্যবহার করলেও ফয়সালকে আটকাতে পারেননি। তিনি ছোরা নিয়ে পুলিশের দিকে তেড়ে আসতে থাকে। এক পর্যায়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবর্ষণ করেন এবং তাতে ফয়সাল গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পর ফয়সালকে উদ্ধার করে ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ক্যামব্রিজ পুলিশ কমিশনার ক্রিস্টিন এলো বলেছেন, ‘আমাদের অফিসাররা বেশ কয়েকবার ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। ওই যুবকের দেখা পাওয়ার পর তাঁকে নাগালে পেতে পাঁচটি ব্লকের বেশি এলাকায় চেষ্টা চালানো হয়। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছি।’

ফয়সালকে গুলিবর্ষণকারী পুলিশ সদস্যকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে বলে সিবিএস নিউজ জানিয়েছে। তবে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষী পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন ফয়সালের চাচা সেলিম জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, এ ঘটনায় স্থানীয় বাঙালি কমিউনিটির মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে কমিউনিটির সদস্যরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। ঘটনা সম্পর্কে পুলিশের বক্তব্য নাকচ করে সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, ফয়সালের হাতে ছুরি থাকার কোনো ভিডিও তাঁদের কেউ এখন পর্যন্ত দেখাতে পারেননি। এদিকে ফয়সালের মৃত্যুতে দেশে এবং প্রবাসে মানববন্ধন হচ্ছে।

যে কারণে ফয়সালকে গুলি করে পুলিশ

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ক্যামব্রিজে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক শিক্ষার্থী। তিনি পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করলে তাকে গুলি করতে বাধ্য হয় পুলিশ। ২০ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশির নাম সাইদ ফয়সাল। বোস্টনের এনবিসির খবরে জানানো হয়, স্থানীয় সময় গত ৪ জানুয়ারি বুধবার পুলিশের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর তার মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, গুলি করার আগে তিনি ধারালো ছুরি হাতে পুলিশের দিকে এগিয়ে আসছিলেন। সাইদ ফয়সালকে থামাতে প্রথমে স্পঞ্জ রাউন্ড ছোড়া হয়। কিন্তু এতে ফয়সাল না থেমে পুলিশের দিকে আক্রমণ করতে আসতে থাকে। ফলে একজন পুলিশ অফিসার গুলি চালান। 

ফয়সালের দেশের বাড়ি চট্টগমের ফটিকছড়িতে। তিনি ইউনিভার্সিটি অব বোস্টনে (ইউম্যাস) পড়াশোনা করতেন।

তার পরিবারের প্রায় সকলেই বোস্টনে বসবাস করেন। ফয়সালকে গুলির আগে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে ধরতে বেশ কিছুক্ষণ ছোটাছুটি করেন। তাকে গুলির ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অপ্রয়োজনীয়ভাবে গুলি করা হয়েছিল কিনা তা নিশ্চিত হতে রেগুলার তদন্ত হবে। এ সময় গুলি করা কর্মকর্তাকে সাময়িক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় মানববন্ধন

যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাঈদ ফয়সাল ‘হত্যার’ বিচারের দাবিতে গত ৯ জানুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে মানববন্ধন হয়েছে। ক্যামব্রিজের একজন পুলিশ অফিসারের গুলিতে গত ৪ জানুয়ারি ‘সশস্ত্র’ ফয়সাল নিহত হন। মার্কিন ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর রিয়ার অ্যাডমিরাল আইলিন লাউবাচার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে বসার আগে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। নিরাপত্তা, রোহিঙ্গা সংকট ও অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চারদিনের সফরে ঢাকা এসেছেন লাউবাচার। মানববন্ধনে সাংবাদিক ও কলামিস্ট অজয় দাস গুপ্ত বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে মার্কিন পুলিশ এমন একজন বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে, যিনি কোনো অপরাধে দোষীসাব্যস্ত হননি। আমরা এর বিচার চাই। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অনেক মানবাধিকার লঙ্ঘন ও জাতিগত সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও তারা বাংলাদেশসহ অন্য দেশে মানবাধিকার বিষয়ে অন্যান্য দেশকে পরামর্শ দিচ্ছে। আমরা চাই না আমাদের দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হোক। তবে যদি হয়ে থাকে, তাহলে আমরাই ব্যবস্থা নেবো, অন্যের পরামর্শে নয়। মানববন্ধনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হাসিবুর রহমান মানিক জানান, তারা ফয়সাল হত্যার বিচার চান এবং এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে একটি ভালো বিচার প্রক্রিয়া রয়েছে এবং সেখানকার কর্তৃপক্ষ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।

নিহত বাংলাদেশির ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্তের নির্দেশ

ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে পুলিশের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থী সাঈদ ফয়সালের নিহতের ঘটনায় পরিবার এবং প্রিয়জনদের প্রতি সমবেদনা ও পূর্ণাঙ্গ স্বচ্ছ তদন্তের কথা জানিয়েছে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস। গত ৮ জানুয়ারি সোমবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র জেফ রাইডেনো এক বিবৃতিতে স্বচ্ছ তদন্তের কথা জানিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, সাঈদ ফয়সালের পরিবার ও প্রিয়জনদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস। বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের আহ্বানকে সমর্থন করে মার্কিন জেলা অ্যাটর্নি অফিসের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের জন্য অনুরোধ জানানো হবে।


পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকায় মানববন্ধন সরকার সমর্থন করে না

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রবাসী বাংলাদেশি সৈয়দ ফয়সাল আরিফ হত্যার প্রতিবাদে হওয়া মানববন্ধন সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু জানে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের সামনে এ ধরনের মানববন্ধন সরকার সমর্থন করে না বলেও জানান তিনি। গত ৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ।

মানববন্ধন শেষে নিজ দফতরে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। তিনি বলেন, আমেরিকায় বিচারব্যবস্থা ভালো। বাংলাদেশি মৃত্যুর বিষয়ে তারা তদন্ত করবে। মানববন্ধনের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবগত কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমি তো জানি না। এ ধরনের মানববন্ধনকে আমরা উৎসাহ বা সমর্থন করি না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পর মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। মানববন্ধন সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মানববন্ধন কারা করেছেন পুরো বিষয়টা আমি জানি না। যারা করেছেন তারা এটা আমাদের চিঠি দিয়ে জানাতে পারতেন। বাংলাদেশির নিহতের ঘটনায় ন্যায়বিচার পাওয়ার বিষয়ে ওয়াশিংটন ঢাকাকে আশ্বস্ত করেছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের রাষ্ট্রদূত তার কাউন্টারপার্টের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র সরকার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, ন্যায়বিচার হবে।

তিনি বলেন, যে পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে বাংলাদেশি মারা গেছে, তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বা দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে বলে; একটা তথ্য আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি। আমরা আশা করি, বাংলাদেশি নাগরিক সুবিচার পাবেন।

মানববন্ধনকে কেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা- প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমার মনে হয় না। অবস্থাটা এমন হয়েছে যে, বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এবং ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে একটা পাতা নড়লেও অন্যকিছু ভাবে। এটাতে ওভার উৎসাহের কিছু দেখছি না। এটা কোনো হাইলি সেনসেটিভ ইস্যুও না। 


বোস্টনে প্রবাসীদের বিক্ষোভ

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ক্যামব্রিজে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বোস্টন ও ক্যামব্রিজ প্রবাসী বাংলাদেশিরা। গত ৫ জানুয়ারি ক্যামব্রিজ নগর ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রবাসীরা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থী সাইদ ফয়সাল ওরফে আরিফকে গুলি করে হত্যাকারী পুলিশের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। একইসাথে তারা অভিবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট নগর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।

গত ৪ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থী সাইদ ফয়সাল ওরফে আরিফ (২০)কে লক্ষ করে ক্যামব্রিজে পুলিশ গুলি করলে সে ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর সন্ধ্যায় সাইদ ফয়সাল মারা যান। তবে পুলিশ দাবি করছে যে, সাইদ ফয়সালের হাতে একটা লম্বা ছুরি দেখতে পেয়ে তাকে সেটা নিচে নামাতে বলেন। কিন্তু সে সোজা পুলিশের দিকে ধেয়ে আসছিল ফলে পুলিশ তাকে গুলি করে।

এ ঘটনাটি মুহূর্তের মধ্যে বোস্টনসহ পার্শ্ববর্তী একালায় প্রবাসীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রবাসীরা। সাইদ ফয়সাল হত্যায় জড়িত দোষী পুলিশের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ৫ জানুয়ারি ক্যামব্রিজ নগর ভবনের সামনে শতশত প্রবাসী জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানান। উক্ত সমাবেশে বোস্টন ও ক্যামব্রিজসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার নানা শ্রেণি-পেশার প্রবাসীরা অংশ নেন। এ সময় ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে উক্ত এলাকা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নির্দোষ শিক্ষার্থী সাইদ ফয়সাল ওরফে আরিফকে পুলিশ কর্তৃক হত্যার ঘটনা আমরা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। বাবা-মা’র একমাত্র ছেলে ফয়সালের করুণ মৃত্যুতে তার পরিবার ভীষণ অসহায় হয়ে পড়েছে। তাদেরকে সান্ত¦না দেবার ভাষা আমাদের জানা নেই। তাই দোষী পুলিশদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।

ক্যামব্রিজ সিটি মেয়র সুম্বুল সিদ্দিকি ও কাউন্সিলম্যান বুরহান আজিম বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতাদের সাথে বসে আলোচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নিউ ইংল্যান্ড বাংলাদেশি আমেরিকান ফাউন্ডেশন (নিবাফ)-এর কর্মকর্তারা। ক্যামব্রিজ সিটি মেয়র ও কাউন্সিলম্যানের উদ্যোগে খুব শিগগির ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ও পুলিশ কমিশনারের সাথে তারা আলোচনা করবেন উল্লেখ করেন নিবাফ।

শেয়ার করুন